তৃণমূলে যেতে চান কমিটির নেতা অসিত
তৃণমূলের কর্মিসভায় গিয়ে সে দলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন জঙ্গলমহলে জনগণের কমিটির এক সময়ের অন্যতম শীর্ষনেতা অসিত মাহাতো। মঙ্গলবার দুপুরে লালগড়ের ধরমপুরে ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় ও শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো। ঘটনা জেনে জনগণের কমিটি এবং মাওবাদীদের ‘পুরনো ঘনিষ্ঠতা’র উল্লেখ করে তৃণমূলকে ‘কটাক্ষ’ করেছেন বামেরা।
তবে অসিত মাহাতোকে চেনেন না বলে দাবি করেছেন দীনেন রায়। তাঁর বক্তব্য, “যে কেউ দলে যোগ দিতে চেয়ে আবেদন জানাতে পারেন। দলে কাউকে নেওয়ার ক্ষেত্রে সব দিক খতিয়ে দেখেই পদক্ষেপ করা হয়।” তৃণমূলের ধরমপুর অঞ্চল সভাপতি দিলীপ মাহাতো (এক সময় জনগণের কমিটির সদস্য ছিলেন) অবশ্য বলেন, “এ দিন কর্মিসভা চলাকালীন অসিত এসে আমাদের দলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। সভায় এলাকার সমস্যা ও সিপিএমের দুর্নীতি-অত্যাচার সম্পর্কে দু’চার কথা বলতে চান। তাঁর বক্তব্যও শোনা হয়।”
এক সময় ঝাড়খণ্ড পার্টির সক্রিয় সমর্থক ছিলেন অসিত। পরে বিজেপি-তে যোগ দেন। ২০০৯-এ নাম লেখান জনগণের কমিটিতে। ওই বছরই কমিটির মুখপাত্র ছত্রধর মাহাতো ধরা পড়ার পরে জঙ্গলমহলে জনগণের কমিটির যাবতীয় আন্দোলনের ‘রাশ’ আসে কমিটির প্রধান-মুখপাত্র এই অসিত মাহাতোর হাতে। জঙ্গল মহলের রাজনীতির নিয়মিত পর্যবেক্ষকদের ধারণা, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অত্যন্ত দক্ষ সংগঠক অসিত ও তাঁর অনুগামীদের নিজেদের দিকে ‘টেনে’ জঙ্গলমহলে সিপিএমকে চাপে রাখার ‘কৌশল’ নিতে পারে রাজ্যের প্রধান শাসকদল। সিপিএমের বিনপুর জোনাল কমিটির ভারপ্রাপ্ত নেতা সুশান্ত কুণ্ডুর টিপ্পনী, “মাওবাদীদের সঙ্গে তৃণমূলের যে সম্পর্ক ছিল, তা কারও অজানা নয়। তৃণমূল অসিত মাহাতোকে দলে নেওয়া মানে ফের সেই ঘনিষ্ঠতার জায়গাটা তৈরি হচ্ছে।” যদিও শালবনির তৃণমূল বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর বক্তব্য, “অসিত মাহাতোকে নিয়ে এত গুরুত্ব দেওয়ার কী আছে!”
২০১০-এ ঝাড়গ্রামের সর্ডিহায় জ্ঞানেশ্বরী রেল নাশকতার ঘটনাতেও জড়িয়েছিল অসিত মাহাতোর নাম। ওই সময় থেকেই তিনি লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান। পরে অবশ্য জ্ঞানেশ্বরী মামলায় উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে অভিযুক্ত-তালিকা থেকে অসিতের নাম বাদ দেওয়া হয়। গত ১৩ নভেম্বর লালগড় ও শালবনি থানার সীমানাবর্তী ‘গোপন ডেরা’ থেকে অসিতকে ধরে যৌথ বাহিনী। ইউএপিএ-সহ রাষ্ট্রদ্রোহ, খুনের চেষ্টা, অপহরণ ও হামলা-নাশকতার মোট ৩৮টি মামলায় অভিযুক্ত করা হয় তাঁকে। পাঁচ মাস জেলবন্দি থাকার পরে সব ক’টি মামলায় জামিন হওয়ায় অসিত মেদিনীপুর সংশোধনাগারের বাইরে আসেন গত এপ্রিলে। ধরমপুর অঞ্চলের ভুলাগাড়া গ্রামের বাড়িতে ফিরে তিনি এখন পুরোদস্তুর কৃষিজীবী।
মঙ্গলবার রাতে ফোনে অসিতবাবু বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জঙ্গলমহলে শান্তি ও উন্নয়নের যজ্ঞে শরিক হতে চেয়েছি। তবে, পশ্চিম মেদিনীপুর-বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায় কমিটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.