|
|
|
|
শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ যুব সভাপতি সরলেন পশ্চিম মেদিনীপুরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুর |
‘পরিবর্তন’ পশ্চিম মেদিনীপুরে যুব তৃণমূল নেতৃত্বে। ইস্তফা দিলেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী। নতুন সভাপতি হলেন শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো।
হঠাৎ কেন এই পরিবর্তন?
২০১০ সালের অগস্টে জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি হন খড়্গপুরের মালঞ্চ এলাকার বাসিন্দা দেবাশিস ওরফে মুনমুন। তৃণমূল সূত্রের খবর, তাঁর বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বর কাছে নানা অভিযোগ জমা পড়ছিল, যার অন্যতমখড়্গপুরের শিল্পাঞ্চলে ‘তোলাবাজি’ চালানো, রেল-মাফিয়া শ্রীনু নাইডুর সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ এবং খড়্গপুর পুরসভায় তৃণমূলের অন্দরে ‘কোন্দল জিইয়ে রাখা’। খড়্গপুরে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী। এক দিকে, পুরপ্রধান জহরলাল পালের অনুগামীরা। আর বিরোধী-শিবিরে রয়েছেন উপ-পুরপ্রধান তুষার চৌধুরী-সহ জনা আটেক কাউন্সিলর। এই দ্বিতীয় গোষ্ঠীটিকে পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর দেবাশিস ‘মদত’ দেন বলে অভিযোগ।
তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের একাংশের মতে, এই সব অভিযোগের প্রেক্ষিতেই যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে এলাকায় পরিচিত দেবাশিসকে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ‘বার্তা’ দিতে চেয়েছেন, ‘অনৈতিক’ কিছু করলে ‘শাস্তি’ পেতে হবে। দেবাশিসবাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগই ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। |
শ্রীকান্ত মাহাতো |
দেবাশিস চৌধুরী |
|
গত বুধবারই বেলপাহাড়িতে প্রশাসনিক কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রের খবর, তখনই জেলায় যুব তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি শ্রীকান্তকে পশ্চিম মেদিনীপুরে যুব তৃণমূলের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি আলোচিত হয়। কার্যত দলনেত্রীর ইচ্ছাক্রমেই ওই দায়িত্ব পান শ্রীকান্ত। এ খবর জেনে বৃহস্পতিবার ফ্যাক্স মারফত দলের ও সংগঠনের ‘সর্বোচ্চ নেতৃত্বের’ কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন দেবাশিস। শুক্রবার এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “শ্রীকান্ত জেলার যুব সভাপতি হয়েছেন বলে জেনেছি। তবে সাংগঠনিক বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।” শুভেন্দু অধিকারীও বলেন, “শ্রীকান্ত সংগঠনের জেলা সভাপতি হয়েছেন। এর বেশি কিছু বলার নেই।”
তৃণমূলের অন্দরে শালবনির বিধায়কের পরিচিতি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রেলমন্ত্রী মুকুল রায়ের অনুগামী হিসেবে। শুভেন্দু অধিকারী ও তাঁর অনুগামীরা দলে ক্রমশ ‘গুরুত্ব হারাচ্ছেন’ এবং ‘মুকুল শিবিরের লোক’ হিসেবে পরিচিতেরা দলনেত্রীর ‘সুনজরে’ আসছেন বলে কিছু দিন ধরে জোর জল্পনা চলছে তৃণমূলের অন্দরে।
আমন্ত্রণ না পাওয়ায় বুধবার বেলপাহাড়িতে মমতার সভায় ছিলেন না শুভেন্দু। ওই দিনই ‘শুভেন্দু শিবিরে’ থাকা ঝাড়গ্রাম শহর তৃণমূলের সভাপতি সুনীল হেমব্রমকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সে দায়িত্ব বর্তায় ‘মুকুল শিবিরের’ নেতা প্রশান্ত রায়ের উপরে। দলের জেলা যুব সভাপতি পরিবর্তনেও কি একই ইঙ্গিত?
জবাব এড়িয়ে শ্রীকান্ত বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শকে সামনে রেখে সংগঠন ঢেলে সাজার পাশাপাশি, যুব সমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাব।” |
|
|
|
|
|