গুজরাতের আগে বিহার, ভাগবতের কথায় বিতর্ক
বিজেপির সঙ্গে নীতীশ কুমারের সম্পর্কের রুক্ষ আবহাওয়ায় প্রলেপ লাগাতে গিয়ে এ বার দল ও সঙ্ঘে অস্বস্তি বাড়ালেন খোদ সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত।
বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় কোন রাজ্য উন্নয়নে এগিয়ে, সেই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর গুজরাতের থেকে নীতীশ কুমারের বিহারকে অগ্রাধিকার দেন ভাগবত। কৌশলী সঙ্ঘপ্রধান যদিও তাঁর এই বক্তব্যকে ‘সংশ্লিষ্ট রাজ্যবাসীর মনোভাব’ বলেই অভিহিত করেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁর কথায় শুধু বিজেপির একাংশে নয়, খোদ সঙ্ঘের মধ্যেও কিছুটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এই নেতারা বলছেন, ভাগবতের এ ভাবে তুলনা টানার কোনও প্রয়োজন ছিল না। কারণ, এতে বার্তা গেল, মোদীর থেকে এগিয়ে রয়েছেন নীতীশ। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি একার ক্ষমতায় দু’শোর কাছাকাছি আসন পেলে শরিকরা এমনিতেই সঙ্গে থাকবে। তার জন্য বিজেপি শাসিত রাজ্যকে খাটো করে শরিকদের গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
সম্প্রতি লালকৃষ্ণ আডবাণী তাঁর ব্লগে অ-কংগ্রেসি এবং অ-বিজেপি প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাবনার কথা বলায় দল ও সঙ্ঘে বিতর্কের ঝড় ওঠে। অনেকেই মনে করেছিলেন, মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্ব ঠেকাতেই আডবাণীর নীতীশ-প্রশস্তি। তার ঠিক ক’দিনের মাথায় (প্রসঙ্গ আলাদা হলেও) ভাগবতের মন্তব্যও কার্যত একই ধরনের বার্তা দিল। যদিও ভাগবতের ঘনিষ্ঠ সূত্রের মতে, আরএসএস প্রধান কোনও তুলনা টানতে চাননি। তিনি বলতে চেয়েছেন, যে কোনও রাজ্যের মানুষই মনে করেন, সেই রাজ্যে উন্নয়ন বেশি হয়েছে। নীতীশ যখন ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র প্রশ্ন তুলে মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করার পথে অন্তরায় হয়ে উঠছিলেন, সেই সময় বিজেপির কোনও নেতা প্রকাশ্যে মন্তব্য না করলেও স্বয়ং ভাগবতই মোদীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। বলেছিলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে এমন এক জনের বসা উচিত, যিনি হিন্দু আদর্শে বিশ্বাস করেন।
কাকতলীয় হলেও আজই জন্মাষ্টমী উপলক্ষে নিজের ব্লগে হিন্দুত্বের ‘পোস্টার বয়’ নরেন্দ্র মোদী ইউপিএ সরকারকে এক হাত নিয়ে গোহত্যা বন্ধের দাবিতে সরব হয়েছেন। তাঁর দাবি, গোহত্যা বন্ধ করে গোমাংস রফতানিতে উৎসাহ দেওয়া বন্ধ করুক ইউপিএ সরকার। মোদীর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কংগ্রেসের মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেন, “গুজরাতে নির্বাচনের আগে বারবার কেন্দ্রকে আক্রমণ করে মোদী নিজের গুরুত্ব বাড়াতে চাইছেন। কিন্তু ভুলে যাচ্ছেন, রাজ্যে নির্বাচনটি কংগ্রেসের সঙ্গেই তাঁকে লড়তে হবে।”
এ হেন মোদীকে ভাগবত মোটেই ‘উপেক্ষা’ করতে চাননি বলে আরএঅসএস সূত্রের দাবি। এমনিতেই মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার চাপ রয়েছে দলের নিচু তলা থেকে। তাঁকে জাতীয় রাজনীতিতে নিয়ে আসার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু নীতীশ বিজেপি নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন, মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হলে তিনি এনডিএ ছাড়বেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন করে এক দফা হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন নীতীশ। যদিও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী যশোবন্ত সিংহকেই তাঁরা সমর্থন করেছেন। তা সত্ত্বেও দুই দলের সম্পর্কের ক্ষত এখনও মেটেনি। আরএসএসের সঙ্গেও নীতীশ বরাবর দূরত্ব বজায় রেখে এসেছেন। এই পরিস্থিতিতে ভাগবত সুকৌশলে নীতীশের প্রশস্তি করে সেই দূরত্ব ঘোচানোরই চেষ্টা করেছেন। কিন্তু গুজরাতের সঙ্গে তুলনা টানতে গিয়ে উল্টো বিপত্তি হয়েছে। আরএসএস নেতা মনমোহন বৈদ্য আজ বলেন, “সরসঙ্ঘচালকের মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। এ ধরনের কোনও তুলনা তিনি করেননি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.