অলিম্পিকের টুকিটাকি: অলিম্পিকে মাদক
বিংশ শতকের গোড়ার দিকে বহু অলিম্পিক অ্যাথলিট নিজেদের পারফরম্যান্স বৃদ্ধির জন্য মাদকের সাহায্য নিতে শুরু করে। এ যাবত্, ১৯৬০-এর রোম অলিম্পিকে ডোপিং-জনিত একমাত্র মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সেই অলিম্পিকে সাইক্লিং রোড রেস চলাকালীন ডেনমার্কের সাইক্লিস্ট নুড এনমার্ক জেনসন সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে মারা যান। তদন্তে জানা যায়, তিনি ‘অ্যাম্ফেটামাইনস’ নামক ড্রাগ সেবন করেছিলেন। ডোপিং-এর দায়ে ধরা পড়া প্রথম অ্যাথলিট ছিলেন সুইডেনের পেন্টাথ্যালিট হানস-গানার লিলেনওয়াল। ১৯৬৮-র মেক্সিকো অলিম্পিকে মদ্যপানের জন্য তিনি ব্রোঞ্জ পদক হারিয়েছিলেন। তবে অলিম্পিকে ডোপিং কেলেঙ্কারির বহুল প্রচারিত ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৮৮ সিওল অলিম্পিকে। ১০০ মিটারে সোনা জিতেও ‘স্ট্যানোজোলল’ ড্রাগ সেবন করায় রানার-আপ কার্ল লিউইসের কাছে তা হারান বেন জনসন।
২০০০-এর গ্রীষ্মকালীন ও ২০০২-এর শীতকালীন অলিম্পিকে ডোপিং-এর বহু ঘটনা জনসমক্ষে আসে। দু’বারই ডোপিং-এর দায়ে পদক হারান বহু ভারোত্তলক ও ক্রস-কান্ট্রি স্কিয়ার। ২০০৬ সালের শীতকালীন অলিম্পিকে ডোপিং-এর দায়ে কেবলমাত্র এক জন অ্যাথলিটের পদক ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে বিভিন্ন স্পোর্টস ফেডারেশন পারফরম্যান্স বৃদ্ধিকারী ড্রাগ সেবনে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে শুরু করে। ১৯৬৭ সালে আইওসি-ও একই পথ অনুসরণ করে। ৯০-এর দশকের শেষ দিকে ডোপিং-এর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে মনস্থ করে আইওসি। ১৯৯৯-এ ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি-ডোপিং এজেন্সি গঠন করা হয়। আইওসি-র প্রতিষ্ঠিত ড্রাগ পরীক্ষা ব্যবস্থা এখন অলিম্পিক মানদণ্ড নামে পরিচিতি পেয়েছে। বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন স্পোর্টিং ফেডারেশন এই অলিম্পিক মানদণ্ডের নিরিখেই বর্তমানে ডোপিং-এর পরীক্ষা করে।
২০০৮-এর বেজিং অলিম্পিকে আইওসি-র তত্ত্বাবধানে ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি-ডোপিং এজেন্সি ৩,৬৬৭ জন অ্যাথলিটকে পরীক্ষা করে। নিষিদ্ধ মাদক সেবনের পরীক্ষার জন্য প্রত্যেক অ্যাথলিটের মূত্র ও রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। ডোপিং-এর দায়ে গেমসের আগেই বহু অ্যাথলিটের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সংশ্লিষ্ট দেশের অলিম্পিক কমিটি। বেজিং-এ প্রতিযোগিতা চলাকালীন কেবলমাত্র তিন জন অ্যাথলিট ডোপ পরীক্ষায় ব্যর্থ হন়।