|
|
|
|
হাসপাতালে স্যালাইন সঙ্কট, বিঘ্নিত পরিষেবা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
প্রায় একমাস ধরে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে স্যালাইনের সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এই পরিস্থিতিতে স্যালাইনের অভাবে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে গিয়ে চরম সমস্যায় পড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। স্যালাইনের সঙ্কট মেটাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরকারি তহবিলের টাকা দিয়ে প্রতিদিনই বাইরে থেকে তা কিনে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরবরাহ করতে বাধ্য হচ্ছেন। টাকার অভাবে চাহিদার অনুযায়ী কম স্যালাইন কেনা হচ্ছে। ফলে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বার বার সমস্যার কথা জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
হাসপাতালের সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি বলেন, “সম্প্রতি, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ভিন রাজ্যের একটি ঠিকাদার সংস্থাকে স্যালাইন কিনে তা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে সরবরাহ করার বরাত দিয়েছে। ওই সংস্থা স্যালাইন সরবরাহের কাজ শুরু করেনি। অথচ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতালে স্যালাইন সরবরাহের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তাই গত ২৩ দিন ধরে হাসপাতালে স্যালাইনের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে তাই আমরা জননী সুরক্ষা যোজনার তহবিলের টাকা দিয়ে বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি। তবে টাকার অভাবে চাহিদা অনুযায়ী স্যালাইন কেনা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা রোগীদের ৫০ শতাংশ কম স্যালাইন দিতে বাধ্য হচ্ছি। যে সমস্ত রোগীদের দিনে ৪ টি স্যালাইন দেওয়ার নিয়ম রয়েছে, তাঁদের ২ টির বেশি স্যালাইন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।” ফলে রোগীদের সুস্থ হতে বাড়তি সময় লাগছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নারায়ণচন্দ্র পাল বলেন, “প্রয়োজনের তুলনায় রোগীদের কম স্যালাইন দেওয়ায় তাঁদের সুস্থ হতেও অনেক বেশি সময় লাগছে।” হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরী জানান, “হাসপাতালে স্যালাইনের সরবরাহ স্বাভাবিক করতে রাজ্য সরকার খুব শীঘ্রই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে ৩০০ শয্যার রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রতি মাসে গড়ে ৩০ হাজার স্যালাইনের দরকার হয়। চিকিৎসাধীন প্রসূতি ও শিশু সহ প্রায় ৯০ শতাংশ রোগীকেই প্রথম ওষুধ হিসেবে স্যালাইন দেওয়া হয়। গত প্রায় একমাস ধরে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর স্যালাইনের সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জননী সুরক্ষা যোজনার তহবিল থেকে প্রতিদিন প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার টাকার স্যালাইন বাইরে থেকে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। মঙ্গলবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, হাসপাতালের স্টোররুমে একটিও স্যালাইন নেই। হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার স্যালাইনের দরকার। অথচ টাকার অভাবে দিনে ৬০০ র বেশি স্যালাইন কিনতে পারছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের স্টোরকিপার জলধীকুমার দাস বলেন, “হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন, সার্জিকাল, প্রসূতি ও শিশু বিভাগে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৫০ করে স্যালাইন দরকার হয়। কিন্তু টাকার অভাবে আমরা পর্যাপ্ত স্যালাইন কিনতে না পারায় প্রতিটি ওয়ার্ডে গড়ে ৪০ থেকে ১০০ র বেশি স্যালাইন সরবরাহ করতে পারছি না।” |
|
|
|
|
|