দুর্ঘটনায় ছাত্রীর মৃত্যুতে বাস ভাঙচুর
স্কুলের উঠোনে খেলতে খেলতে রাস্তার পাশে চলে গিয়েছিল প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রী। রাস্তা দিয়ে দ্রুত গতিতে পরপর ছুটে আসছিল দু’টি বাস। তাদেরই একটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারায় মৃত্যু হল রাখি মাঝি (৭) নামে ওই ছাত্রীর। সোমবার দুপুরে দুর্গাপুরের মুচিপাড়া থেকে স্টেশন যাওয়ার রাস্তায় এফসিআই গেটের কাছে এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনতা অন্য দু’টি বাস ভাঙচুর করে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দু’টি বাসের মধ্যে রেষারেষির জেরেই মৃত্যু হয়েছে রাখির। পরে ছাত্রীকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়া মিনিবাসটির চালক পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাস্তার পাশেই রয়েছে কুসুমতলা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ দিন মিড-ডে মিল খাওয়ার পরে দুপুর সওয়া ২টো নাগাদ স্কুলের উঠোনে খেলছিল পড়ুয়ারা। রাখি চলে গিয়েছিল রাস্তার পাশে।
মৃতের শোকার্ত পরিবার।
সেই সময়ে স্টেশনের দিক থেকে ছুটে আসছিল ৮-বি রুটের দু’টি মিনিবাস। তারই একটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাখিকে চাপা দেয়। আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে আসার আগেই ওই বাস দু’টি পালিয়ে যায়। এর পরেই আসছিল অন্য দু’টি মিনিবাস। জনতার রোষ গিয়ে পড়ে তাদের উপরে। ভেঙে দেওয়া হয় সেগুলির সামনের কাচ। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। ভাঙচুর হওয়া বাস দু’টিকে ক্রেনের সাহায্যে বিধাননগর ফাঁড়িতে পাঠানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের যে কোনও সময়ে দ্রুত গতিতে ওই রাস্তা দিয়ে মিনিবাস যাতায়াত করে। এমনিতেই প্রায় প্রতি ১০ মিনিট অন্তর একটি করে মিনিবাস চলে। তার উপরে প্রায়শই আগের বাস দেরি করে চলায় পিছনের বাস তাকে ধাওয়া করে। এর ফলে মিনিবাসগুলির মধ্যে রেষারেষি শুরু হয়ে যায়। রাস্তা পারাপার করতে হয় প্রাণ হাতে করে।
ভাঙচুর হওয়া বাস।
স্থানীয় বাসিন্দা আয়ুব আনসারি, সোমা বিশ্বাসদের কথায়, “এমনিতেই এই রাস্তা দিয়ে প্রচুর যানবাহন যাতায়াত করে। তার উপরে বাসের রেষারেষিতে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।” তাঁরা জানান, বাঁকুড়ার দিক থেকে বহু যানবাহন এবং কারখানার লরি এই রাস্তা ধরে মুচিপাড়া গিয়ে জাতীয় সড়কে পৌঁছয়। তা ছাড়া, জাতীয় সড়ক থেকে দুর্গাপুর স্টেশন যাওয়ার যে দু’টি রাস্তা রয়েছে, এটি তার অন্যতম। ফলে এই রাস্তার উপরে সব সময়েই চাপ থাকে। এ দিনের দুর্ঘটনার পরে ছুটি হয়ে যায় কুসুমতলা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রধান শিক্ষক গদাধর রায় বলেন, “ফুটফুটে মেয়েটা যে ভাবে চলে গেল, তা কেউই মানতে পারছে না।” প্রশাসনের কাছে রাস্তার ওই অংশে ‘স্পিড ব্রেকার’ লাগানোর আর্জি জানানো হবে বলে জানান তিনি।
এ দিন বিকেলে মৃত বালিকার পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, পুরো এলাকা নিঝুম। শুধু তার বাড়িতে কান্নার রোল। পেশায় জনমজুর তরুণবাবু জানান, তাঁর দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে রাখি ছিল বড়। রাখির মা নমিতাদেবী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “সব সময় তিন বছরের ভাইকে আগলে আগলে রাখত রাখি।” রাখির দাদু সুনীলবাবুর ক্ষোভ, “বাসের রেষারেষিতেই আমার নাতনির প্রাণ গেল।” এ দিনই বাস-সহ চালক প্রান্তিকার কাছে এ-জোন ফাঁড়িতে আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

—নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.