যেখানে ভূতের ভয়...
সেই সময়
প্রেত বলিল, ‘কী লেখেন এত?’ বলিলাম ‘উপন্যাস।’ ‘সে কাকে বলে? আমাদের সময় তো ছিল না।’ উপন্যাস কী তাহা বুঝাইয়া দিলে প্রেত সাগ্রহে বলিল, ‘ও গোলে বকাওলির গল্প রূপকথা!’... এক অশরীরী আর এক সাহিত্যিকের এমন আশ্চর্য সংলাপ-বিনিময় শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কেই-বা লিখতে পারেন। গল্পটি বেরয় ১৩৫৭-র বৈশাখে, নাম: ‘ভূত-ভবিষ্যৎ’। ষাট বছর পর তাই নিয়ে ছবি করছেন সন্দীপ রায়। তাঁকে ফিরে যেতে হচ্ছে সেই সময়। ‘পিরিয়ড ফিল্ম করার একটা আলাদা মজা আছে। এর আগে একবারই করেছিলাম ছোট পর্দায়, বাবার গল্প, যুদ্ধের পর চল্লিশের দশকে তারিণীখুড়ো আর টলিউড নিয়ে। কিন্তু বড় পর্দায় এই প্রথম।’ বলছিলেন সন্দীপ।
বাইরে শুটিংয়ে যাওয়ার তোড়জোড় চলছিল বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়িতে। প্রপস, কসটিউম নিয়ে ব্যতিব্যস্ত তিনি (সঙ্গের ছবি)। পঞ্চাশের দশকের এক সাহিত্যিক ও তাঁর নানা অভ্যেসকে ‘রিক্রিয়েট’ করছেন। কাঁচি সিগারেট, ঘোড়ার মাথাওয়ালা দেশলাই, এমনকী সে সময়ের বিড়িও জোগাড় করা হয়েছে। ’৫৩-র ‘দেশ’ পত্রিকা আর ‘যুগান্তর’, দুই-পাঁচ-দশ-একশো টাকার নোট। বাংলা শার্ট কলার দেওয়া পাঞ্জাবির মতো দেখতে, বুকপকেট ছাড়াও দু’দিকে দু’টো পকেট। ‘ইন্টারেস্টিং বেশ কিছু সংগ্রাহক আছেন এখানে, কিছু প্রতিষ্ঠানও আছে, যেখান থেকে পাওয়া গেল এত কিছু। আমার আর্ট ডিরেক্টর মানিক ভট্টাচার্যও সাহায্য করেছে খুব। কলম আর খাতা তো বাড়িতেই ছিল, বাবা ব্যবহার করতেন। এলিফ্যান্ট খাতা, বাহাদুর খাতা। বংশীকাকা (চন্দ্রগুপ্ত) লিখতেন বীণাপাণি খাতায়, তাও পাওয়া গেল খুঁজে।’ এ-ছবিতে বাড়তি পাওনা প্রেত নন্দদুলাল নন্দী, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলের এ-চরিত্রে সশরীরে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সাহিত্যিক শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। শান্তিনিকেতনের কাছে রায়পুরে এক প্রাচীন জীর্ণ বাড়িতে শুটিং শুরু হল গতকাল, ভেঙ্কটেশ ও সুরিন্দর ফিল্মস-এর প্রযোজনায়। পুরনো সময় আর পুরনো বাড়ি মানেই তো অতীত, আর সেখানেই ভূতেরা হানা দেয় সবচেয়ে বেশি! ছবির নাম তাই যেখানে ভূতের ভয়...

সুপারস্টার
বলিউডের প্রথম সুপারস্টার চলে গিয়েছেন। কিন্তু রয়ে গিয়েছে তাঁর কাজ। যেমন অভিনয়ে, তেমনই গানের দৃশ্যে। বস্তুত, অনেকের মতে, রাজেশ খন্নার স্মৃতিধার্যতা অনেকটাই গানের উপরে দাঁড়িয়ে। প্রবাদপ্রতিম জিন্দেগি ক্যায়সি হ্যায় পহেলি, কিংবা হাজার রাহেঁ...র মতো গান বহু দিন বেঁচে থাকবে মানুষের মনে। কিন্তু সে সব গানের ধারাবাহিক তথ্যায়ন? না, সে কাজ সম্পূর্ণ হয়নি এখনও। তবে বলিউড-গবেষকেরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে সুপারস্টারের লিপ-এ ইতিহাস হয়ে থাকা তিরিশটি গান নিয়ে সুপারস্টারের প্রতি সারেগামার শ্রদ্ধার্ঘ্য দুটি সিডি-র অ্যালবাম ‘সুপারস্টার’ প্রকাশিত হল। এ দিকে ১০-১২ অগস্ট রাজেশ খন্না-র ছ’টি ছবি আরাধনা অমর প্রেম আবিষ্কার আপ কি কসম আনন্দ বাওয়ার্চি দেখানোর আয়োজন করেছে নন্দন।

পুনরুদ্ধার
উত্তরবঙ্গের মেচ বা বোড়ো জনজাতির বিশ্বাস, এই পৃথিবী সবার। সকলে মিলেমিশে বাস করার মধ্যেই আছে শান্তি। ওঁদের লোকনাট্যেও প্রতিফলিত হয় সেই ভাবনা। থুনভাওতিন এই জনজাতির লুপ্তপ্রায় অভিনয়ের ধারা। বহু দিন উত্তরবঙ্গের মেচ, রাভা, গারো বা টোটো জনজাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নিয়ে গবেষণা ও সংরক্ষণের কাজ করে চলেছে ‘রঙ্গমঞ্চ’। থুনভাওতিন অভিনয়ের ধারাটিও ওরা পুনরুদ্ধার করে পূর্ণ তথ্যায়ন করেছে। এই অসাধারণ অভিনয় শৈলীতে রয়েছে কথকতা, গান, মার্শাল আর্ট এবং মুখোশ নৃত্য। মেচ জনজাতির প্রাচীন লোকগাথাকে আশ্রয় করে ‘গুমরীমতি’ পালা রচনা ও নির্দেশনার কাজটি করেছেন দ্বারেন্দ্র ঈশ্বরারী। আজ সন্ধে ৬টায় পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের ‘পূর্বশ্রী’ প্রেক্ষাগৃহে দেখা যাবে এই পালা। অভিনয়ে থাকছেন ২৩ জন মেচ বা বোড়ো শিল্পী। পালাটির গবেষণা ও সংরক্ষণে রুম্পা গুঁই, কারিগরি নির্দেশনায় শুভব্রত দে।

স্মৃতিরক্ষা
দুটি দেশ ভাগ হয়েছে প্রায় ছয় দশকেরও বেশি। কিন্তু অনেকেই ভোলেননি জন্মভূমির স্মৃতি। অবিভক্ত বাংলার ময়মনসিংহ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী থেকে নীরদ সি চৌধুরী, পি সি সরকার থেকে নীহাররঞ্জন রায় প্রমুখ বিশিষ্ট জনের আদি নিবাস। ময়মনসিংহের স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে সম্প্রতি এক দল উৎসাহী ইতিহাসপ্রেমী কলকাতায় গড়ে তুললেন ‘ময়মনসিংহ মিলনী’। সংস্থাটির পরিকল্পনায় রয়েছে দুঃস্থ মেধাবী ছাত্রদের আর্থিক সাহায্য, বৃ্দ্ধাবাস নির্মাণ ইত্যাদি। সঙ্গে জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের সচিত্র জীবনীগ্রন্থ প্রকাশ এবং ময়মনসিংহের ইতিহাস রচনা।

ব্রাত্যজন, চার চারটি
‘প্রেরণা’ নাকি ‘ব্র্যান্ড’? গ্রুপ থিয়েটারের ‘গ্রুপিজম’ এ শহরের নাট্যমহল জানে। কিন্তু হাওয়াটা বোধহয় ঘুরছে। অভিনেতারাও আর সে ভাবে দল-বদ্ধ নন। কলকাতার নাট্যজগতের এই ঘটমান বর্তমানকে চমকে দেওয়ার মতোই একটি ঘটনা ঘটতে চলেছে। একটিই নাম শিরোধার্য করে চার চারটি নতুন নাট্যদল জন্ম নিচ্ছে শহরের নাট্য-মানচিত্রে হাওড়া ব্রাত্যজন, অশোকনগর ব্রাত্যজন, বালিগঞ্জ ব্রাত্যজন এবং খড়দহ ব্রাত্যজন। অনুপ্রেরণা? দল-চারটির পক্ষে যথাক্রমে দেবাশিস বিশ্বাস, অভি চক্রবর্তী, বিজয় মুখোপাধ্যায় এবং দেবাশিস রায় এক বাক্যে জানালেন, কালিন্দী ব্রাত্যজন এবং ব্রাত্য বসু। তরুণের স্বপ্ন কী ভাবে সূচনা করতে হয় আর কী ভাবেই তা সাফল্যের পথে এগোয় কালিন্দী ব্রাত্যজন সেটা দেখিয়েছে বলে মনে করেন এঁরা। তাই এমন উদ্যোগ। এ বছরের মধ্যেই নতুন দলগুলির প্রথম নাটকগুলি মঞ্চস্থ হবে, নাম যথাক্রমে ‘জায়মান’, ‘অপারেশন ২০১৪’, ‘ছায়াবৃক্ষ’ আর জগদীশচন্দ্র বসুর জীবন ঘিরে ‘শ্রীচরণেষু পাতাঝরা’। কিন্তু ‘ব্রাত্যজন’ নামটাই এখন হাউসফুল করে, উদ্যোগের নেপথ্যে এমন ব্র্যান্ড-ভাবনা আছে নাকি? নির্দেশকরা জানালেন, না, নাটকে এখনও ব্র্যান্ডিং করা যায় কি না সে নিয়েই তাঁরা সংশয়ে। সে বিতর্ক থাক। তথ্য বলছে, ব্রাত্যজন-এর পথরেখাটিই রুদ্ধসঙ্গীতকে মুক্ত করার। সে পথের পথিক তো হতে চাইবেনই নগরের তরুণ তুর্কিরা! ব্রাত্যজন ও তার প্রতিষ্ঠাতা ব্রাত্য বসু কি তবে ‘থিয়েটার-ব্র্যান্ড’ হয়ে উঠলেন? ‘ব্র্যান্ড নয়, আন্দোলন। আমি ওদের পাশে আছি’, সাফ জবাব ব্রাত্য বসুর।

নাগরিক মঞ্চে
মিস্টার ভুলু তখন গড়ে উঠছেন নাট্যকার স্নেহাশিস ভট্টাচার্যের হাতে। ভুলু, আসল নাম স্মরজিৎ। কিন্তু অনেক কিছুই স্মরণে থাকে না তার। সবাই বলেন এটা একটা রোগ, কাউন্সেলিং দরকার। এ ভাবেই একটা নিটোল পারিবারিক নাটক গড়ে উঠছিল। কিন্তু তাকে বদলে দিল বদলাতে থাকা এই শহর। পার্ক স্ট্রিট কাণ্ড, বারাসত কাণ্ড এবং অতি সাম্প্রতিক জগাছা কাণ্ড, স্মৃতিতে থাকা বানতলাকে উস্কে দিল বদলে গেল নাটকটা, ‘মি ভুলু’। মানুষটা এক দিন দেখে ফেলল কয়েক জন ‘লুম্পেন’ তুলে নিয়ে যাচ্ছে ঝুপড়ির একটি মহিলাকে। বাধা দিতে গিয়ে মার খেল ভুলু, এবং সেই দৃশ্য আর ভুলতে পারে না সে। আর সহনাগরিকেরা, পরিজনেরা, যাঁরা এত দিন বলতেন মনে কর, মনে কর, তাঁরাই এ বার বলেন ভুলে যাও, ভুলে যাও...। নাটকে ঢুকে পড়ল চেনা চেনা কথাগুলো, ‘এ রকম তো কতই হয়’, ‘ও রকম পোশাক পরলে...’। ‘মি ভুলু’ সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, নির্দেশক স্বপন সেনগুপ্তের ভাবনায় ‘নাট্যরঙ্গ’-এর সেই নাটক ‘মি ভুলু’-র অভিনয় হল গতকাল, গিরিশ মঞ্চে। নাগরিক সময় আরও একবার উঠে এল নাগরিক মঞ্চে।

স্বপ্নাভ
৫২ বছর বয়সে স্বপ্নাভ রায়চৌধুরী তাঁর দু এক টুকরো সুমেঘ (যাপনচিত্র) বইয়ের কবিতায় পাড়ি দিয়েছেন স্মৃতির উড়ানে, ‘আমাকেই কি/ দেওয়া হয়েছিল ভুবনডাঙ্গার/ মেঘলা আকাশ?’ অতঃপর বেশ কিছুটা সাদা জায়গা ছেড়ে, ‘আমিও কথা রাখিনি।’ জীবনমুখী যুগের শুরুতে স্বপ্নাভ একদা গান লিখেছেন, স্ত্রী সায়ন্তনীর সঙ্গে জুটিও বেঁধেছেন। এখন দুরারোগ্য অসুখে তাঁর উপলব্ধি, ‘আয়লার ঝড়ে উপড়ানো গাছে গাছে/ বন্ধুরা জেগে জেগে ঘুমিয়ে আছে।’ আশিটি কবিতায় ফেলে আসা স্মৃতির সঙ্গে মিলেমিশে গিয়েছে রোম্যান্টিক চেতনা। কোনও কবিতায় পেদ্রো আলমাদোভারের অনুষঙ্গ, কোথাও বা শঙ্খ ঘোষের নীরব সঙ্গ, ‘মূর্খ বললে বোলো স্বাভাবিক নই।’ আর এই সব সঙ্গ-অনুষঙ্গের মাঝে হানা দিয়েছে নাগরিক বিষাদ, ‘আর ভাল্লাগে না একফসলি দুই তিনফসলি প্রোমোটার কলোনিফলোনি।’ হিরণ মিত্র কৃত চমৎকার প্রচ্ছদের এই বইয়ে রয়েছে দুটি গল্পও। যে গল্প বোঝাল, দাম্পত্যের শব ব্যবচ্ছেদ নয়, বরং সুখী সমাপ্তিতেই বিশ্বাসী লেখক।

অবনীন্দ্র-স্মরণ
তাঁর স্মৃতি প্রতি বছর বাইশে শ্রাবণ চাপা পড়ে যায়। সে দিন যে তাঁর রবিকা-র মৃত্যুদিন। তবু, আশার কথা শহরে এ বার বাইশে শ্রাবণ শুধু রবীন্দ্রনাথের নয়, অবনীন্দ্রনাথেরও। শিল্পীর ১৪০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভারতীয় সংগ্রহালয়ের চিত্রবীথিকা-য় ৭ অগস্ট দুপুর ২-৩০-এ বিশেষ স্মরণ-অনুষ্ঠান, থাকছে ‘শাজাহানের শেষ শয্যা’ (দিল্লিতে সপ্তম এডোয়ার্ডের অভিষেক-অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত হয়েছিল ছবিটি, থাকছে সেই পুরস্কার ও মানপত্র) সহ বেশ কিছু দুর্লভ চিত্র, পাণ্ডুলিপি ও কাটুম-কুটুম। তাঁর জীবন ও শিল্পকর্ম নিয়ে বলবেন শিল্প-ঐতিহাসিক অশোক দাস ও রত্নাবলী চট্টোপাধ্যায়। আগামিকাল জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির রথীন্দ্র মঞ্চে রবীন্দ্র-স্মরণ, ৯ অগস্ট সেখানেই অবনীন্দ্র জন্মোৎসব। দুটিই রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির উদ্যোগে। এ দিকে ভাষাবন্ধন প্রকাশ করল আবীর করের চিত্রাক্ষরে অবনীন্দ্রনাথ

অন্দরে-অন্তরে
অন্দরসজ্জা শুনলেই ঝাঁ চকচকে আধুনিক সামগ্রী চোখের সামনে ভিড় করে। কিন্তু, ধারণাটাই বদলে গেল বালিগঞ্জ প্লেসের ‘হোম বিউটিফুল’-এ ঢুকে। প্রদর্শনীটির উদ্যোক্তা ইন্টিরিয়র ডিজাইনার ঊর্বশী বসু। কিন্তু তাঁর কর্মশালায় এখন শুধুই বঙ্গজ কুটিরশিল্পের মেলা। শান্তিনিকেতনের চিত্রকরের ছবিতে ফুটেছে রাধা-কৃষ্ণের প্রেমালেখ্য। রঙ-তুলি রাজস্থানি অন্তঃপুরবাসিনীকে প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছে। কাচের ওপর অলংকরণের মধ্যে হঠাৎ জ্বলে উঠছে নরম আলো। সুদৃশ্য প্রতিকৃতি মাত্র নয়, আসলে টেবল ল্যাম্প! ছেনি বাটালি নিয়ে কাজ করে চলেছেন দিনাজপুরের শিল্পী নিতাই ও অনন্ত সরকার। কাঠ আর বাঁশে ফুটিয়ে তুলছেন আশ্চর্য সব আকার। যেমন বকচঞ্চু, নৌকো, লক্ষ্মীর পেঁচা, একতারা হাতে বাউল, তেত্রিশ কোটি দেব-দেবী আর বনচর। পাশেই রাখা সেরামিকের ফুলদানি, রাঢ়বাংলা অনুপ্রাণিত লোহার বিশাল মুখোশ, বেতের ঝুড়ি, হাতে বোনা কুশন কভার। প্রদর্শনী ১১ অগস্ট পর্যন্ত। তার পরও, গ্রাম-বাংলার মিঠে পরশ, চাইলেই আপনার অন্দরে সাজিয়ে দেবেন ঊর্বশী।

প্রিয় রবীন্দ্রনাথ
‘তাই তাদের মাথায় কাপড়, হাতে কাঁকন, আঙিনায় বেড়া। মেয়েরা হল সীমাস্বর্গের ইন্দ্রাণী।’ (বাণী, লিপিকা) তবে এই ইন্দ্রাণীদের ক্ষমতা সীমিত। এঁরা জন্ম দিতে পারলেও মৃত্যুকে আটকাতে পারেন না। তাই স্বর্গের সঙ্গে আড়ি করে এঁরা পৃথিবীকে আরও বেশি ভালবাসেন। সেই ইন্দ্রাণীদের নিয়েই নান্দীকারের নতুন প্রযোজনা ‘আমার প্রিয় রবীন্দ্রনাথ’। গান, ভাষ্য পাঠ বা সুরে ধরা পড়বে ‘কৃষ্ণকলি’, ‘চণ্ডালিকা’, ‘সুহা’ থেকে ‘বিমলা’। গত বছর সঙ্গীত-নাটক পুরস্কার পেয়েছিলেন স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। দিল্লিতে চল্লিশ মিনিটের একক নাটক প্রদর্শন করতে গিয়ে তিনি তুলে ধরেন রবীন্দ্রনাথের চোখে মেয়েদের কথা। সে নাটক ছুঁয়ে গিয়েছিল দর্শকমণ্ডলীকে। পরে রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, সোহিনী, দেবশংকর হালদার প্রমুখ যোগ দেন। বিদেশে বেশ কয়েকটি অভিনয়ের পর এই নাটক এ শহরে ৭ অগস্ট সন্ধে ছ’টায় জি ডি বিড়লা সভাঘরে। অবনীন্দ্রনাথের জন্মদিনেই ‘রবি বন্দনা’, থাকবেন অমিতেন্দ্রনাথও। আয়োজনে ‘ইন্ডিয়া গ্রিন রিয়েলিটি’।

তোমাকে চাই
কবীর সুমন তখন সুমন চট্টোপাধ্যায়, ঝোড়ো হাওয়ার মতো এসে ওলটপালট করে দিলেন বাংলা গানের জগৎ, বেরল ‘তোমাকে চাই’। কুড়ি কুড়ি বছরের পার... তাঁর সে আবির্ভাব নিয়ে বলবেন শক্তিনাথ ঝা সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় সুমন মুখোপাধ্যায় বোধিসত্ত্ব কর। ১২ অগস্ট রবিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিগুণা সেন ভবন-এ বিকেল ৫টায়। ওই লগ্নেই স্বয়ং কবীর সুমনের উপস্থিতিতে প্রকাশ পাবে বহু বিশিষ্ট জনের রচনা ও হিরণ মিত্রের প্রচ্ছদ সংবলিত তোমাকে চাই/একটি ভাবনা সংকলন (মুখবন্ধ: স্বপ্নময় চক্রবর্তী। সম্পা: সুমিত দাস ও অনির্বাণ সাধু)। উদ্যোগে আলতামিরা।


রাজার খোঁজে
ইতিহাসের কাল বদলায়, বদল ঘটে না মানুষের অবস্থানের, সে ‘আর্য’ই হোক বা ‘অনার্য’। বহুরূপীর নবতম নাটকে সেই আর্য-অনার্য বিভেদেরই সন্ধান। রবীন্দ্রনাথের ‘ডাকঘর’ এবং জি ই ফ্যারেল-এর ‘করজ্যাক অ্যান্ড দ্য চিলড্রেন’ নাটকের ভিত্তিতে রংগন চক্রবর্তীর লেখা নাটক ‘রাজার খোঁজে’ শুরু হচ্ছে পোল্যান্ডের ওয়ারশ-তে। ১৯৪২। নাত্সি আক্রমণে কোণঠাসা ‘অনার্য’ ইহুদিরা। এরই মধ্যে ডাক্তার করজ্যাক মহীরুহের মতো আগলে রাখেন একঝাঁক অনাথ ইহুদি শিশু-কিশোরকে। তবুও শেষের সে দিন এগোতে থাকে তাদের জীবনে। কিন্তু, ওদের চোখে যে সাহসের কাজল মাখা! কোথায় পেল তারা এই সাহস? ‘রাজার খোঁজে’র নির্দেশক তুলিকা দাস (সঙ্গের ছবি) বাস্তব জীবনেও যে শিশু-কিশোরদের নিয়ে সেই ১৯৮৯ থেকে কাজ করে চলেছেন, তারা সকলেই মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাদের হাত ধরে সমাজের মূল স্রোতে সামিল করানোর সাহসী কাজে মগ্ন তুলিকা। নাটক নির্দেশনা অবশ্য তাঁর এই প্রথম নয়। বহুরূপীরই প্রযোজনায় ২০০৮-এ মঞ্চস্থ করেছিলেন ‘বীর্যশুল্কা’। ‘রাজার খোঁজে’ নাটকে সঙ্গীত পরিচালনা দেবজ্যোতি মিশ্রের। আলো জয় সেন। ৯ অগস্ট অ্যাকাডেমি মঞ্চে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এই নাটকের প্রথম অভিনয়।

নও শুধু ছবি
দুর‌গেশনন্দিনী ছবির শুটিং চলছে। ছবি বিশ্বাস কতলু খাঁ আর ভারতী দেবী তার মেয়ে আয়েষা। কতলু খাঁ মরে পড়ে আছে আর তার উপর ঝুঁকে সংলাপ বলতে হবে আয়েষাকে। বড় সংলাপ ভুলে যাচ্ছেন ভারতী দেবী। ‘ছবিদা বললেন, আমার ঠোঁটের দিকে চোখ রেখে কান খাড়া রাখবে। তিনি ঠোঁট না নেড়ে আমার সংলাপ বলতে লাগলেন খুব আস্তে যাতে মাইকে না যায়, সিনেমায় এভাবে প্রম্পট করা খুবই অসুবিধে, আমিও সেই শুনে ডায়ালগ বলে গেলাম।’ ছায়া দেবী বলেছেন: ‘ছবি বিশ্বাসের মধ্যে যে টোটালিটি ছিল তা আগে ও পরে কোনো অভিনেতার মধ্যে ছিল না। এমনকি দুর্গাদাস থেকে উত্তমকুমার কারও নয়!’ আর অহীন্দ্র চৌধুরী জানিয়েছেন ‘সংলাপ উচ্চারণে তাঁর অক্ষমতা ছিল তাঁর শারীরিক ত্রুটির জন্যই... এই কারণেই ছবি সংলাপ কেটে কেটে ছোট করে বলতো এবং সেটাকে করে তুলেছিল তাঁর অভিনয় ধারার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।’ এমন বহু তথ্য নও শুধু ছবি-তে (সম্পা: কল্যাণী মণ্ডল। নীরজনা, ৩৫০.০০)। তাতে সত্যজিৎ রায় তপন সিংহ কানন দেবী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় কেউ বাকি নেই স্মৃতিচারণ বা মূল্যায়নে। ছবি বিশ্বাসের (১৯০০-’৬২) জীবন ও নাটক-চলচ্চিত্রপঞ্জির সঙ্গে রয়েছে তাঁর নিজের রচনা, দুর্লভ ছবি। ১৩ জুলাই চলে গেল তাঁর জন্মদিন, নন্দন আর নীরজনা-র যৌথ উদ্যোগে তাঁকে ঘিরে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন হয়েছিল, সঙ্গে তিন দিনের রেট্রো। ‘একদিন রাত্রে’র জন্যে বম্বে যেতে চাননি বলে রাজ কপূর ইউনিট নিয়ে এখানে এসে ছবিবাবুর অংশটুকু শুটিং করে নিয়ে গিয়েছিলেন। অথচ আজও তাঁর স্মৃতিরক্ষার কোনও ব্যবস্থা হল না!
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.