মামলার প্রথম পর্যায়ে পাঁচ জনের শাস্তি হয়েছে। কিন্তু তিলজলায় খাদিম-কর্তা অপহরণ মামলার দ্বিতীয় পর্যায়ের বিচার বছরখানেক ধরে আটকে রয়েছে। কারণ প্রথম পর্যায়ের বিচারের রায় ঘোষণার পরে মামলার নথি চলে গিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। নথির অভাবে বিচার আটকে থাকায় চার অভিযুক্তকে জেল থেকে কড়া পুলিশি পাহারায় বিভিন্ন তারিখে আলিপুরে দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের আদালতে আনা হচ্ছে, আবার ফিরিয়েও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ওই আদালতেই মামলাটির প্রথম পর্যায়ের বিচার হয়েছিল। এই মামলার বিচারের জন্য ওই আদালতকেই বিশেষ আদালত ঘোষণা করা হয়েছে।
সম্প্রতি জেল-হাজত থেকে এই মামলার দ্বিতীয় পর্যায়ের বিচার জন্য চার অভিযুক্তকে বিচারক কাজি সফিউর রহমানের এজলাসে হাজির করানো হয়। বিচারে বিলম্ব হওয়ায় বিচারকের কাছে তখনই ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযুক্তেরা। সরকারি আইনজীবী নববাবু আদালতকে জানান, দ্রুত বিচার শুরু করার জন্য মামলার নথি হাইকোর্ট থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকারের তরফে ইতিমধ্যে সরকারি আইনজীবীর মাধ্যমে এই ব্যাপারে হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। আদালত চার অভিযুক্তকেই ফের জেল-হাজতে পাঠিয়ে দেয়।
২০০১ সালের ২৪ জুলাই তিলজলায় অপহৃত হন খাদিম-কর্তা পার্থ রায়বর্মন। ২০০৯ সালের ২০ মে বিশেষ আদালতে এই মামলার প্রথম পর্যায়ের বিচারে পাঁচ অভিযুক্ত আফতাব আনসারি, আকিব আলি খান, হ্যাপি সিংহ, আবদুর রহমান কুঞ্জি ও সৌকত আলি ওরফে আসাবুদ্দিনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড হয়। তারা হাইকোর্টে আপিল করে। নিম্ন আদালত থেকে মামলার মূল নথি পাঠানো হয় হাইকোর্টে। দণ্ডিতদের আবেদন নিয়ে শুনানির জন্য সেই নথি উচ্চ আদালতে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে। ফলে নিম্ন আদালতে দ্বিতীয় পর্যায়ে চার অভিযুক্তের বিচারে সমস্যা দেখা দিয়েছে, বিলম্বও হচ্ছে।
সরকারি আইনজীবী নবকুমার ঘোষ জানান, এই মামলার দ্বিতীয় পর্যায়ের বিচারের জন্য রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ চার অভিযুক্ত শেখ মোজাম্মেল, মহম্মদ আরশাদ, মহম্মদ ইশাক ও তারিক মেহমুদকে দিল্লি থেকে নিয়ে আসে। মূল মামলার চার্জশিটে তাদেরও নাম ছিল। সেই সময় তাদের ফেরার দেখানো হয়েছিল। পরে পুলিশ জানতে পারে, তারা দিল্লিতে তিহাড় জেলে অন্য মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে আটক রয়েছে। দিল্লির বিভিন্ন আদালতের বিচারে তাদের সাজা হয়। পরে খাদিম-কর্তা অপহরণ মামলার অভিযুক্ত হিসেবে তাদের গ্রেফতার করে কলকাতায় আনে তাদের পুলিশ। তিনি আরও জানান, সাদাকাত নামে অন্য এক অভিযুক্তকেও গুজরাত থেকে গ্রেফতার করে কলকাতায় এনে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। তবে দিল্লির আদালতে অন্য একটি মামলায় সাদাকাত অভিযুক্ত হওয়ায় তাকে সেখানে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। |