রাজ্যে পরিবেশ বিধি এবং আইন লঙ্ঘনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। অথচ এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করার ব্যাপারে পরিবেশ দফতর বা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ যেটুকু যা করে উঠতে পারে, তা যৎসামান্যই। উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ পরিবেশ দূষণের এই সব ঘটনায় নজরদারির জন্য একটি নতুন উদ্যোগ শুরু করছে। নাগরিক সমাজের উদ্যোগে কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি, বিজ্ঞানী, শিক্ষক, নদী ও জলাভূমি বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশকর্মীদের নিয়ে গঠিত হয়েছে একটি তথ্যনুসন্ধানী কমিশন। আজ, শনিবার ওই কমিশনে পরিবেশ বিধি লঙ্ঘনের কয়েকটি ঘটনার প্রথম শুনানি হওয়ার কথা।
দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের উপরে চাপ সৃষ্টি করতেই নাগরিক সমাজের এই উদ্যোগ। ইতিমধ্যে কেরল, কর্নাটক-সহ কয়েকটি রাজ্যে পরিবেশ দূষণ রোধে এই ধরনের নাগরিক উদ্যোগ রীতিমতো কার্যকর ভূমিকা নিয়েছে।
বাংলার ক্ষেত্রে এই কাজে প্রধান উদ্যোগী বিভিন্ন পরিবেশ সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘সবুজ মঞ্চ’। ওই মঞ্চের পক্ষে নব দত্ত জানান, বহু দিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় জলাভূমি বোজানো, গাছ কাটা, শিল্পদূষণ এবং অরণ্য ও জীববৈচিত্র ধ্বংসের নানা ঘটনা ঘটে চলেছে। কিন্তু পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের যে-ভূমিকা থাকার কথা, তা কখনওই দেখা যায়নি। কারণ পরিবেশ কখনওই রাজনৈতিক দল বা সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় ঠাঁই পায়নি। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে যেটুকু কাজ হয়েছে, তা প্রধানত আদালতের হস্তক্ষেপেই। নববাবুর কথায়, “পরিবেশ দফতর এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পাশাপাশি এই কমিশনও দূষণ বিধি ভঙ্গের বিভিন্ন ঘটনায় নজরদারি এবং অনুসন্ধান চালাবে।”
নাগরিক সমাজের উদ্যোগে গড়া কমিশনের চেয়ারম্যান হয়েছেন হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভগবতীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। কমিশনের সদস্য ১০ জন। বিভিন্ন অভিযোগ শোনার জন্য পাঁচ ভাগে ভাগ করা হচ্ছে ওই কমিশনকে। প্রতিটিতে দু’জন সদস্য থাকবেন। নববাবু জানান, স্বাভাবিক ভাবেই এই কমিশনের কোনও আইনি মর্যাদা নেই। এরা তথ্যানুসন্ধান করে কোনও পরিবেশ দূষণের ঘটনায় কিছু সুপারিশ করবে। শুনানির সূত্রে বহু তথ্যও সংগৃহীত হবে। ওই পরিবেশকর্মীর কথায়, “ওই তথ্য এবং সুপারিশ আমরা রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দেব সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কেউ দূষণ নিয়ে জনস্বার্থের মামলা করতে চাইলে ওই সব তথ্য কাজে লাগবে।” |