স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ‘ধর্ষণ’ কাটোয়ায়
স্কুলে যাওয়ার পথে তুলে নিয়ে গিয়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল বর্ধমানের দাঁইহাটে। ছাত্রীটি অভিযুক্তের পরিচয় জানাতে পারেনি। তবে পুলিশ তাকে খুঁজছে।
শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ দাঁইহাট শহর লাগোয়া ইসলামপুর গুপীন্দ্রনাথ বালো (জিএনবি) ইনস্টিটিউশনের কাছে মোকামপুকুর পাড়ে ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ। ওই স্কুলেই ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে মেয়েটি। বাড়ি কাটোয়া ২ ব্লকের চরসাহাপুরে। স্কুলে যাওয়ার সময়ে ঘটনাটি ঘটে। প্রথমে প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়েই সব জানায় ছাত্রীটি। তিনিই থানায় খবর দেন। পরে ছাত্রীটির বাবা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন।
বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “অভিযুক্ত ছাত্রী অপরিচিত। তাই ওই ছাত্রীর বয়ান শুনে সিআইডি-র সাহায্য নিয়ে অভিযুক্তের ছবি আঁকানো হবে।” এর আগে কেতুগ্রামে ট্রেন থেকে নামিয়ে এক মহিলাকে ধর্ষণের ঘটনাতেও ছবি আঁকিয়ে দুই অভিযুক্তকে ধরেছে পুলিশ। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষাও করানো হয়েছে। যদিও বাহ্যিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। ফরেন্সিক টেস্টের জন্য কলকাতায় দেহরসের নমুনা পাঠানো হয়েছে।
ছাত্রীটি জানায়, স্কুলের পথে যেতে আমবাগান ও বাঁশবাগান পড়ে। তার অভিযোগ, “বাঁশবাগান পেরিয়ে পিচ রাস্তায় উঠব, এক জন সামনে এসে দাঁড়াল। জিজ্ঞাসা করল, এ দিকে দু’জনকে যেতে দেখেছি কি না। ‘দেখিনি’ বলতেই মুখ চেপে টেনে-হিঁচড়ে সে আমায় পুকুরপাড়ে নিয়ে যায়।” ছাত্রী ও তার বাবার দাবি, সকালে ছাগল চরাতে গিয়ে তাঁরা লোকটিকে দেখেছিলেন। তাকে আগে কখনও দেখেননি। কাটোয়া থানার ওসি সনৎ দাস বলেন, “ছাত্রী ও তার বাবার বয়ান অনুযায়ী, অভিযুক্তের পরনে ছিল সাদা-কালো ছোপ-ছোপ হাফ শার্ট। বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫ বছর।”
স্কুল থেকে ঘটনাস্থল শ’দুই মিটার দূরে। এ দিন ওসি ছাড়াও প্রধান শিক্ষক রামজীবন হাজরা, স্থানীয় অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের নিতাই মুখোপাধ্যায় প্রমুখ ঘটনাস্থলে যান। এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, এর আগেও ওই রাস্তায় স্কুলছাত্রীদের উপরে হামলা হয়েছে। গত ১ জুলাই স্কুলে যাওয়ার পথে তিন ছাত্রীর উপরে ‘চড়াও’ হয়েছিল স্থানীয় এক যুবক। তাদের মধ্যে এই ছাত্রীটিও ছিল। পরে প্রধান শিক্ষক ও বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে মীমাংসা হয়। অভিযুক্ত যুবক প্রধান শিক্ষকের কাছে মুচলেকাও দেয়। রামজীবনবাবু এ দিন সেটি ওসি-র হাতে তুলেও দিয়েছেন।
চরসাহাপুরের বেশির ভাগ বাসিন্দাই খেতে কাজ করেন অথবা সব্জি বিক্রি করে সংসার চালান। অভাব সত্ত্বেও ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের একাংশের ক্ষোভ, ওই দিনই প্রধান শিক্ষক ছাত্রীদের থানায় যাওয়ায় পরামর্শ দিলে এ দিনের ঘটনা ঘটত না। তবে প্রধান শিক্ষকের দাবি, “আগের ঘটনার সময়ে আমি কাটোয়ায় ছিলাম না। দু’দিন পরে, গত ৩ জুলাই গ্রামবাসীদের চাপে মীমাংসা সভায় যাই। আজ এক ছাত্রী এসে কাঁদতে কাঁদতে ঘটনার কথা জানাতেই থানায় খবর দিয়েছি।” পুলিশের দাবি, আগের বারের সঙ্গে এই ঘটনার সম্পর্ক নেই। গ্রামের স্বপন চৌধুরী, রাধারানি চৌধুরীদের আক্ষেপ, “আমরা স্কুলে যেতে পারিনি। অনেক কষ্টে ছেলেমেয়েদের পড়তে পাঠাচ্ছি। এমন ঘটতে থাকলে কোন ভরসায় ওদের আর স্কুলে পাঠাব!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.