বৃষ্টি মাথায় শহরকে মেলাল রাখি
বৃষ্টি যেন হার মানল রাখির কাছে। বৃহস্পতিবার সকাল শুরু হতেই আকাশ অন্ধকার হয়ে যায় শিলিগুড়িতে। সকাল ১০টা নাগাদ বৃষ্টি নামে। সবে শুরু হয়েছিল রাখি উৎসব। অলিতে-গলিতে, থানায়-জেলে, বিভিন্ন অফিসে রাখি হাতে যেন ঢল নেমেছে মানুষের। সকলের মুখ ভার। সকলেই কোনও না কোনও শেডের নিচে আশ্রয় নিয়েছে। ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও বৃষ্টি থামছে না। তার মধ্যেই অবশেষে রাখী হাতে রাস্তায় নামেন সবাই। মন্ত্রী থেকে পুলিশ। তৃণমূল থেকে কংগ্রেস, সাধারণ তরুণীরাও। শেষপর্যন্ত আকাশ পরিষ্কার। ঝলমলিয়ে উঠল রোদ। দিনভর শিলিগুড়িতে আনন্দ কাটল রাখি উৎসব। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “আকাশ খারাপ ছিল। তার মধ্যেই বেরিয়ে পড়ি রাখি উৎসবে। প্রথমে সেবক রোডে একটি অনুষ্ঠানে যাই। সেখান থেকে হাসমিচক। আরও বিভিন্ন জায়গায়। সাধারণ মানুষের মধ্যে রাখি নিয়ে এক উদ্মাদনা তৈরি হয়েছে। বৃষ্টিও কাউকে আটকে রাখতে পারেনি।” এদিন সকালে শিলিগুড়ির মহানন্দা সেতু লাগোয়া মোড়ে রাখি উৎসব পালন করে ট্রাফিক কর্মীরা।
বৃহস্পতিবারের নিজস্ব চিত্র।
বেশ কিছুক্ষণ বৃষ্টি থামার জন্য অপেক্ষা করে তাঁরা। বৃষ্টি না থামায় সাড়ে ১০টা নাগাদ রাখি উৎসব শুরু করে তারা। ছাতি হাতে নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক কর্মীরা পথচলতি মানুষ থেকে বাইক চালক, গাড়ির চালক, আরোহীদের রাখি পড়ান তাঁরা। সঙ্গে বিলি করেন চকলেট। খুশি হয়ে অনেকে ট্রাফিক কর্মীদেরও রাখি পরান। সকালের দিকে সেখানে ছিলেন শিলিগুড়ি ট্রাফিক পুলিশের ডিএসপি পিনাকী মজুমদার। এক ট্রাফিক কর্মী বলেন, “এই উৎসব সাধারণ মানুষের সঙ্গে এক অন্যরকম সম্পর্ক তৈরি করে। প্রতিদিন তো মামলা, জরিমানা করতেই দিন যায়। এ দিনটা একটু অন্যরকম ভাবে কাটালাম আমরা।” শিলিগুড়ি থানায় সকাল থেকে বিভিন্ন স্কুলের খুদে পড়ুয়াদের ভিড় শুরু হয়। তাঁরা থানার পুলিশ কর্মীদের রাখি পড়ান। থনাার ওসি বিশ্বজিৎ মণ্ডল, অফিসার তীর্থ সারথী নাথ পড়ুয়াদের হাতে লাড্ডু, চকলেট তুলে দেন। মহিলা থানার পুলিশ কর্মীরাও বিশ্বজিৎবাবু সহ অনেক অফিসার, কনেস্টবলকে রাখি পরান। প্রায় দুপুর পর্যন্ত থানায় রাখি উৎসব চলে। শিলিগুড়ির হাসমিচকের দু’দিকে পৃথক ভাবে রাখি উৎসব পালন করেন কংগ্রেস ও তৃণমূলের কর্মীরা। বৃষ্টিতে ভিজেই তাঁরা সাধারণ মানুষকে রাখি পরান। হাসমিচকে বাইক নিয়ে যাচ্ছিলেন পৃথা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমার খুব ভাল লাগছে। তিন জায়গায় আমাকে রাখি পড়ানো হল। শহরজুড়ে একটা উৎসব উৎসব আমেজ পাচ্ছি।” বৃষ্টিতে ভিজে সকালে শিলিগুড়ি জেলে হাজির হয়েছিলেন তৃণমূল কর্মীরা। দুপুর ১টা নাগাদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী সেখানে পৌঁছন। এর পরই জেলের ভেতরে ঢুকে প্রত্যেকটি সেলে পুরুষ ও মহিলা বন্দিদের রাখি পরানো হয়। বিলি করা হয় লাড্ডু। সেখানে ছিলেন তৃণমূল নেতা দীপক শীল, মদন ভট্টাচার্য , ধীমান বসুরা। তাঁরা বলেন, “বন্দিদের এই উৎসবে সামিল করতে পেরে আমরা খুশি।” বন্দি রাজীব দাস, সাইনি রাইরা নিজেদের খুশির কথা জানান। তাঁরা বলেন, “সারাদিন বসে বসে থাকতে থাকতে ভাল লাগে না। এদিনটা অন্তত কিছুটা সময় রাখি উৎসবে কাটালাম। বাড়তি পাওনা একটা লাড্ডু।” শিলিগুড়ি কলেজের সামনে রাখি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন তরুণী বলেন, “সবাই মিলে রাখি উৎসবে মাতব ঠিক করেছি। বৃষ্টি নামায় একটু অসুবিধে হল।” কথা বলতে বলতেই দুপুর ১টা নাগাদ রোদ উঠে পড়ে। রাখি নিয়ে রাস্তায় নামেন তাঁরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.