|
|
|
|
এসএসসি |
প্রশ্নপত্র-বিভ্রাট কার ভুলে, রিপোর্টে নাম চাইলেন ব্রাত্য |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বিভ্রাট নিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র পেশ করা রিপোর্ট গ্রহণ করল না রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিয়েছেন, রিপোর্ট থেকে এটা বোঝা যাচ্ছে, কোনও ব্যক্তির গাফিলতিতেই গোলমাল হয়েছে। কিন্তু তিনি কে, রিপোর্টে সেটা স্পষ্ট করে জানানো হয়নি। ওই ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে কমিশনের কাছে। তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে কমিশনকে।
পরীক্ষায় গোলমাল বাধানোর পিছনে কি বাইরের কেউ ইন্ধন জুগিয়েছেন? শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “সব রাজনৈতিক দলের সমর্থকেরাই পরীক্ষা দেন। তাঁদের কেউ গোলমাল পাকিয়েছেন কি না, জানি না। কিন্তু সেটা যদি হয়, তা হলে তাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রই বলব।”
সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা বাছাইয়ের জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশন দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষা নিচ্ছে। কমিশনের লেখা পরীক্ষা ছিল গত রবিবার। সারা রাজ্যে ৫৫ হাজার শিক্ষক-পদের জন্য ওই পরীক্ষায় বসেন প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ প্রার্থী। বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রশ্ন-বিভ্রাটের জেরে ওই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হাঙ্গামা হয়। কিছু কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র দেরিতে পৌঁছনোয় প্রার্থীরা পরীক্ষা দিতে অস্বীকার করেন। শেষ পর্যন্ত সরকার জানায়, পাঁচটি কেন্দ্রে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। কেন ওই গোলযোগ হল, মন্ত্রী সেই ব্যাপারে এসএসসি-কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিলেন। রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল বিভিন্ন জেলাশাসকের কাছেও।
বৃহস্পতিবার স্কুলশিক্ষা দফতরে দু’তরফের রিপোর্টই জমা পড়ে। তা নিয়ে আলোচনার পরে ব্রাত্যবাবু দোষী ব্যক্তির নাম জানিয়ে ফের রিপোর্ট দিতে বলেন কমিশনকে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “কোথায়, কী ভাবে এবং কার গাফিলতিতে বিভ্রাট হল, তা চিহ্নিত করে রিপোর্ট দিতে বলেছি। সেটা পেলে আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করব এবং কঠোর
ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।”
এসএসসি-র চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল সংস্থার বিভিন্ন আঞ্চলিক চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আলোচনার পরে বুধবার জানিয়েছিলেন, ‘ভিতর ও বাইরের’ কিছু লোকের অসহযোগিতার জন্যই পরীক্ষার দিন গোলমাল হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “ছাপাখানা থেকে জানানো হয়েছে, পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে ঠিক সংখ্যায় প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও প্রশ্নপত্র কম পড়ে গিয়েছিল। একটি অঞ্চলের চেয়ারম্যানকে সকাল সাড়ে ১০টায় বাড়তি প্রশ্নপত্র নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে হয়েছিল।” প্রশ্নপত্র প্যাকেটে ভরার সময়েই গোলমাল হয়েছে বলে জানান চিত্তরঞ্জনবাবু। এ দিন জেলাশাসকেরা স্কুলশিক্ষা দফতরে যে-সব রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, তাতেও একই কথার উল্লেখ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রাত্যবাবু।
প্রশ্ন-বিভ্রাটের ঘটনায় মন্ত্রী কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেও বিরোধী শিবির সরকারের সমালোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। সিপিএম নেতা তথা সিটুর রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী এ দিন বলেন, “যে-সব দক্ষ কর্মী এত দিন ধরে এসএসসি পরীক্ষা পরিচালনা করতেন, তাঁদের বদলি করে তৃণমূল নিজেদের কিছু অযোগ্য লোককে বসিয়েছে। তার ফলেই এই অবস্থা।” তৃণমূল সাধারণ মানুষ, শ্রমিক-কর্মচারীদের উপরেও নানা ভাবে অত্যাচার করছে বলে তাঁর অভিযোগ। তিনি বলেন, “কংগ্রেসের পাঁচ বছরের জমানায় রাজ্যে ফ্যাসিস্ত শাসন কায়েম হয়েছিল। ৩৪ বছরের মধ্যে কংগ্রেস আর ফিরতে পারেনি। তৃণমূল যা করছে, তাতে একশো বছরের মধ্যে ক্ষমতায় ফিরতে পারবে না!” এর পরেই নিজের কথা কিছুটা ‘সংশোধন’ করে শ্যামলবাবু বলেন, “তৃণমূলের মতো আঞ্চলিক দল বেশি দিন স্থায়ী হয় না। কিছু দিন পরেই তারা বুদ্বুদের মতো উড়ে যায়!” |
|
|
|
|
|