আর কখনও সুযোগ পাব না
ধরেই নিজেকে সব দিতে হয়
ক জন অ্যাথলিটের উপর অলিম্পিক শুরুর আগে থেকেই চাপ বাড়তে শুরু করে। স্টার্টলাইনে পৌঁছে যা পাহাড়প্রমাণ হয়ে যায়। ভাল পারফরম্যান্সের জন্য এই চাপ সামলানোর রসায়নটাই জানা দরকার।
আমার অভিজ্ঞতা থেকে জানি, এই সময়ে কেউ চিন্তায় ডুবে যায়। কেউ উত্তেজনায় ফুটতে থাকে। আবার কেউ ভয়ে কুঁকড়ে যায়। সবার মনে একই প্রশ্ন “রেস শেষে আমার অবস্থান কী হবে?” এই অবস্থায় যাদের কাছে দশটা প্রশ্নের সঠিক উত্তর মজুত থাকে, তারাই চাপকে নাগালের বাইরে রাখতে পারে। প্রশ্নগুলো হল:

১) আমার পক্ষে যতটা সম্ভব ততটা ট্রেনিং কি আমি করেছি?
উত্তর যদি ‘না’ হয়, তা হলে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। এর জন্য আমি বেশ কয়েক মাস আগে থাকতেই অনুশীলনে আমার সবটুকু দিতাম। যাতে নিজেকে আরও উন্নত করতে পারি। যাতে নার্ভের উপর চাপ কমে, জয়ের সম্ভাবনা বাড়ে।

২) আমি কি সুস্থ ও সম্পূর্ণ ফিট?
পুরোপুরি ফিট থাকাটা অবশ্যই দরকার। এর থেকেই কিন্তু মানসিক ভাবে চাঙ্গা থাকার ব্যাপারটাও আসে। এই পর্যায়ে ফোকাস থাকার সঙ্গে সঙ্গে জরুরি— শরীর কতটা মানসিক ফিটনেসের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে।

৩) আমার প্রতিদ্বন্দ্বীদের ঠিক কতটা গুরুত্ব দেব?
অন্যের রেজাল্ট পাল্টানোর ক্ষমতা আমার হাতে নেই। দৌড় শুরুর আগে দেখতা— সব প্রতিদ্বন্দ্বীর নাম জানি। তারা কী রকম পারফরমার জানি। কত সময় তারা নেয় সেটাও জানি। কিন্তু সেগুলো আমাকে ছুঁতো না। আমার কাছে বাকিরা ছিল হার্ডলস-এর মতো। যেন আমার জয়ের পথে একের পর এক বাধা। আমি কত ভাল ভাবে তাদের টপকে যাব সেটাই ভাবতাম।

৪) আমার নিয়ন্ত্রণে কী আছে?
কী ভাবে আমি দৌড়ব, সেটাই আমার নিয়ন্ত্রণে। তাই রেসের আগের ১০-১৫ মিনিট আমি মনে মনে ছকে নিতাম কী ভাবে আমি দৌড়টা শেষ করব। অনেক বার সেটা করতাম।

৫) কী আমার নিয়ন্ত্রণে নেই?
আবহাওয়া, ট্র্যাকের অবস্থা, ইভেন্ট পিছিয়ে যাওয়া এবং অন্য কেউ যদি ফল্স স্টার্ট করে। বাকি সবাই এগুলোর দ্বারা সমান ভাবে প্রভাবিত। এগুলো চিন্তাতেই আনা উচিত নয়।

৬) এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কী?
রেসটা আমাকে দৌড়তে হবেএটাই সব। এই সময়ে এক জন অ্যাথলিটের মনকে থাকতে হবে ট্র্যাকের দু’টো লাইনের মধ্যে। অন্য কিছু ভাবার অবকাশ নেই।

৭) হারা মানে কি সব শেষ?
এক কথায় না। তবে এর সম্পূর্ণ উত্তর একটু গোলমেলে। হারলে পৃথিবী ধ্বংস হচ্ছে না মানে, এই নয় যে রেসটা গুরুত্বহীন হয়ে গেল। এত দিন ধরে রেসটা জেতার যে স্বপ্ন দেখেছি সে গুলো মোটেই অর্থহীন হয়ে যাচ্ছে না। নিজেকে বলতাম, হারলে ভীষণ হতাশ হব। কিন্তু এর আগেও হতাশার সময় কাটিয়েছি। সেটার সঙ্গে লড়ে নিতে পারব।

৮) জিততে আমি ঠিক কতটা মরিয়া?
বেশির ভাগ অ্যাথলিটই বহু দিন ধরে স্বপ্ন দেখে তার ইভেন্টে পদক জেতার। জীবনের অন্য সব কিছুর থেকে তারা এই ব্যাপারেই বেশি সময় ও শক্তি ব্যয় করে। ফোকাস্ড-ও থাকে। বিশ্বের অন্য সব কিছুর থেকে অলিম্পিক পদকটাই তারা সবচেয়ে বেশি করে চায়। অলিম্পিক অ্যাথলিটদের সাত আর আট নম্বর প্রশ্নের উত্তরের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়।

৯) আমি কি আর সুযোগ পাব?
আর কোনও দিন হয়তো আমি অলিম্পিকে দৌড়নোর সুযোগ পাব না। এটা মাথায় রেখেই নিজেকে সবটা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়।

১০) আমি কি নিজের সেরাটা দিতে পারব?
শারীরিক ভাবে ফিট থাকলে এই প্রশ্নের উত্তর ‘হ্যাঁ’। আমাকে বিশ্বাস রাখতে হবে যে আমার প্রতিভা আছে, আমি কড়া অনুশীলন করে এসেছি, আর নির্ভুল ভাবে আমি রেসটা শেষ করতে পারব।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.