খেলতে খেলতেই চলছে নাটকে হাতেখড়ি। গোল হয়ে বসা জনা পঁচিশেক কচিকাঁচা। নাটকের সঙ্গে কচিকাঁচাদের পরিচয় করিয়ে দিতে নবদ্বীপে শুরু হয়েছে সাপ্তাহিক নাট্য কর্মশালা।
প্রতি রবিবার সকাল থেকেই কচিকাঁচাদের ভিড়ে সরগরম নবদ্বীপের সাধারণ গ্রন্থাগার মঞ্চ। অভিনব এই উদ্যোগ নাট্যসংস্থা ছন্দনীড়ের।
প্রতিদিনই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চলছে প্রস্তুতি। নাচ, গান, আবৃত্তি, ছবি আঁকা, মঞ্চের ব্যবহারসবই রয়েছে কর্মশালায়। আর এ ভাবেই নাটকের বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে আলাপ হচ্ছে পাঁচ বছরের স্বস্তিক, অঙ্কিতা বা ক্লাস সেভেনের সুজয়ের।
সংগঠনের তরফে অজয় চক্রবর্তী বলেন, “এরকম একটা কিছু করার পরিকল্পনা আমাদের দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। মফসস্লে আমাদের মতো নাট্যকর্মীর সংখ্যা দিন দিন কমছে। কেরিয়ার তৈরি করতেই ব্যস্ত সবাই। ছেলে মেয়েদের নাটক করতে পাঠানোর কথা তো অভিভাবকেরা চিন্তাই করতে পারেন না। আমাদের মতো ছোট শহরের ছোট নাটকের দলের এই পরিস্থিতি একেবারেই কাম্য নয়। আমরা ভেবেছি আমরাই শহরের পিছিয়ে পড়া কয়েকটি পরিবারের খুদেদের প্রশিক্ষণ দেব। ঠিক করেছি, অভিনয়ের প্রয়োজনে যা যা শেখানোর দরকার ওদের আমরা সবটাই শেখাব। ওদের মধ্যে থেকে যদি দু’জনও ভবিষ্যতে নাটক নিয়ে এগোতে চায় সেটাই তো আমাদের সবথেকে বড় পাওনা হবে।” কাঁসা-পিতলের কারখানায় কাজ করেন সুজিত বিশ্বাস। তাঁর একমাত্র ছেলে স্বস্তিক। চন্দনার বাবা কাজ করেন একটি কার্ডবোর্ডের কারখানায়। ওদের কাছে রবিবারের মানেটাই পাল্টে দিয়েছে এই কর্মশালা। নতুন খেলা, নতুন জিনিস শেখা নিয়ে উৎসাহের অন্ত নেই ওদেরও। এক অভিভাবক মিতালি কুণ্ডু বলেন, “এখন সপ্তাহের শুরু ছেকেই ছেলে রবিবারের জন্য অপেক্ষা করে থাকে।”
কর্মশালা শুরু হয়েছিল বারো জনকে নিয়ে। এখন সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়িয়েছে পঁচিশে। শুধু পিছিয়ে পড়া পরিবারেই নয়, দরজা খোলা সকলের জন্যই। |