|
|
|
|
|
আমরা বোধহয়
নতুন সহবাগকে দেখছি
দীপ দাশগুপ্ত |
|
নিজের ব্যাটিং থেকে ঝুঁকি ছেঁটে ফেলে বীরেন্দ্র সহবাগের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন। এ দিন ৯৭ বলে ৯৬-এ ওর স্ট্রাইক রেট ৯৮.৯৬। দেখে বেশ ভালই লাগছিল, আগের মতো সারাক্ষণ টপ গিয়ারে চালাচ্ছে না বীরু। বরং অনেক দিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছে এটা মাথায় রেখে ইনিংস গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। আর ভাগ্যের এমন খেলা যে, এত সাবধানে গড়ে তোলা সহবাগের ইনিংসটা কিনা শেষ হল বিরাট কোহলির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হওয়া দিয়ে!
সহ-অধিনায়ক হিসেবে উত্থানের পর বিরাট কোহলির দুর্দান্ত ফর্ম ধরে রাখা। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির হেলিকপ্টার শট থেকে এমনকী লাসিথ মালিঙ্গারও রক্ষা না পাওয়া। আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম যে, সহবাগ আর কোহলি সবথেকে ভাল খেলে মালিঙ্গাকে। এর কারণ হচ্ছে, দু’জনেই পা ততটা নাড়ায় না এবং দেরিতে স্ট্রোকে যায়। এখন সেই তালিকায় ধোনিকেও যোগ করতে হবে। ও রকম পায়ের পাতায় উড়ে আসা ইয়র্কার পা তুলে হেলিকপ্টার শট বিশ্বে আর কেউ খেলতে পারবে? কিন্তু আমাকে যদি মালিঙ্গার বিরুদ্ধে সেরা ব্যাটসম্যান বাছতে বলা হয় তা হলে কোহলিকেই বাছব। চার মাস পর ফের ওয়ান ডে খেলতে নামা ভারতীয় দলে অনেক ইতিবাচক ছবিই পাওয়া গেল শনিবারের হাম্বানটোটায়। ৫০ ওভারে ৩১৪ তোলার পর শ্রীলঙ্কার লড়াই একা চালিয়ে গেল সঙ্গকারা (১৩৩)। |
|
হাম্বানটোটায় সহবাগ-কোহলি। ছবি: এ পি |
কিন্তু এটাও তো বলতে হবে যে, এমন একটা দিনে তিক্ত সেই দৃশ্যটা থেকেও মুক্তি পাওয়া গেল না। আবারও মনোজ তিওয়ারি আর অশোক দিন্দা প্রথম একাদশের বাইরে। বিশ্বাস করাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে যে, শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচে মনোজ তিওয়ারি নামে কেউ সেঞ্চুরি করেছিল। তার পর এই নিয়ে পনেরোটা ম্যাচ কেটে গেল। মনোজের কপালে সুযোগের দরজা খুলল না। এতে যেটা হচ্ছে, ওর সেই সোনার টাচটাই চলে যাচ্ছে। এক জন ব্যাটসম্যানের পক্ষে ভীষণ কঠিন এই সময়টা। বোলার তো তাও নেটে বল করার সুযোগ ঠিক পেয়ে যাবে। ব্যাটসম্যান হলে নেটে ব্যাটিংয়ের বরাতটাও ঠিকঠাক জুটবে না, যদি না তুমি প্রথম একাদশের প্লেয়ার হও।
রায়না এ দিন হাফসেঞ্চুরি করলেও রোহিত কিন্তু আবার ব্যর্থ। বারবার দেখা যাচ্ছে ওর প্রতিভার প্রতি সুবিচার করতে ব্যর্থ রোহিত। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্টের যা ভাবগতিক দেখছি, এর পরেও মনোজের ভাগ্য খুলবে কি? বরং আমার তো মনে হচ্ছে, প্রথম তিনটে ম্যাচে এই টিমই খেলিয়ে যাওয়া হবে। তার পর শেষ দু’টো ম্যাচে যদিও বা মনোজকে খেলানো হয়, ওর ওপর প্রবল চাপ থাকবে।
মনোজের ব্যাপারটা হতে-হতে কোথাও যেন সয়ে গিয়েছে। এ দিন অনেক বেশি করে চোখে লেগেছে দিন্দাকে না খেলানোটা। এ বারের আইপিএলে অসাধারণ বোলিং করেছে দিন্দা। আমাদের পুণে ওয়ারিয়র্সেই ও ছিল। একশো শতাংশের কম বলে কিছু ওর অভিধানে কিছু নেই। মাঠে নেমে সব সময় একশো শতাংশ নয়তো তার চেয়ে বেশি দেবে। আমাদের পুণে ওয়ারিয়র্সের বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড খুব প্রভাবিত হয়েছিল দিন্দার মনোভাব দেখে। অ্যালান বারবার বলত, ছেলেটার বড় হৃদয় আছে আর ফাস্ট বোলারের ওটাই আসল। শুধু আইপিএল কেন, কয়েক দিন আগে ভারতীয় ‘এ’ দলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও দারুণ বোলিং করেছে দিন্দা। তার পরেও কেন যে বেঞ্চে বসে থাকতে হচ্ছে, সেটা বিষ্ময়কর।
অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, ইরফান পাঠান প্রথমে নির্বাচিত স্কোয়াডেই ছিল না। বিনয় কুমার আহত থাকায় পরিবর্ত হিসেবে এলো আর এসেই কি না সটান ম্যাচ খেলে ফেলল। হাম্বানটোটায় এ দিন নিঃসন্দেহে ভাল বল করেছে ইরফান। ও যে আবার সুইংটা ফেরত পেয়েছে সেটা ভারতীয় বোলিং বিভাগের জন্য ভাল খবর। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে, এক জন বোলার যদি পরিবর্ত হিসেবে এসে সোজা প্রথম একাদশে ঢুকে পড়তে পারে, তা হলে সে প্রথম অবস্থায় পনেরো জনের দলে থাকল না কেন? |
হাম্বানটোটার স্কোর |
ভারত |
গম্ভীর বো কুলশেখরা ৩
সহবাগ রান আউট ৯৬
কোহলি ক পরিবর্ত (সেনানায়কে) বো পেরেরা ১০৬
রোহিত বো ম্যাথেউজ ৫
রায়না ক পরিবর্ত (সেনানায়কে) বো পেরেরা ৫০
ধোনি ক থিরিমান্নে বো পেরেরা ৩৫
ইরফান ন.আ. ৭
অশ্বিন ন.আ. ০
অতিরিক্ত ১২
মোট ৫০ ওভারে ৩১৪-৬।
পতন: ৭, ১৮০, ১৯১, ২২৮, ৩০৭, ৩০৭।
বোলিং: কুলশেখরা ৫-০-২০-১, মালিঙ্গা ১০-০-৮৩-০, ম্যাথেউজ ১০-০-৫৮-১,
পেরেরা ১০-০-৭০-৩, দিলশান ৫-০-২৮-০, হেরাথ ১০-০-৫২-০। |
শ্রীলঙ্কা |
থরঙ্গা ক সহবাগ বো অশ্বিন ২৮
দিলশান এলবিডব্লিউ ইরফান ৬
সঙ্গকারা বো উমেশ ১৩৩
চণ্ডীমল ক ধোনি বো উমেশ ১৩
জয়বর্ধনে এলবিডব্লিউ প্রজ্ঞান ১২
ম্যাথেউজ ক গম্ভীর বো জাহির ৭
থিরিমান্নে এলবিডব্লিউ অশ্বিন ৭
পেরেরা ক কোহলি বো ইরফান ৪৪
হেরাথ রান আউট ০
মালিঙ্গা ন.আ. ১৯
কুলশেখরা ন.আ. ১
অতিরিক্ত ২৩
মোট ৫০ ওভারে ২৯৩-৯।
পতন: ৯, ৮৬, ১১৭, ১৩২, ১৭২, ১৯১, ২৬৯, ২৭১, ২৭৫।
বোলিং: জাহির ১০-০-৬৩-১, ইরফান ১০-১-৩৭-২, উমেশ ১০-০-৭৬-২,
অশ্বিন ১০-১-৪৬-২, সহবাগ ৪-০-২০-০, প্রজ্ঞান ৬-০-৪৪-১। |
|
|
|
|
|
|
|