জুন মাসেও যেখানে মেরামতির কাজ হয়েছে সেখানে জুলাইয়ে মহিষমারিতে মহানন্দায় কী করে বাঁধ ভাঙল সেচ দফতরের কাছে তার ব্যাখ্যা চাইলেন শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব। মহকুমাশাসক বলেছেন, “জুন মাসেই ওই এলাকায় একশো দিনের প্রকল্পে বাঁধের কাজ হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। এটাও জানতে পেরেছি, বাঁধের একটি অংশের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়নি। এদিন ওই এলাকাতেই বাঁধ ভেঙেছে। সেই জন্যই সেচ দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়রকে কাজ শেষ না-করার কারণ ব্যাখ্যা করতে বলেছি।” ওই এলাকায় বাঁধ ভাঙার ঘটনায় সেচ দফতরের উপরে ক্ষুব্ধ শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যও। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহেই তিনি মহানন্দা নদী পরিদর্শনে ওই এলাকায় গিয়েছিলেন। এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান বলেন, “মহকুমাশাসক সঠিক কথাই বলেছেন। বাঁধ তৈরির কাজ আমিও দেখেছি। কী ভাবে বাঁধ তৈরি হল যে একমাসও টিঁকল না। সেচ আধিকারিককে দ্রুত বাঁধ মেরামতির জন্য ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” পাশাপাশি, তাঁর নির্দেশে এদিন সেচ দফতরের কর্মীরা তড়িঘড়ি নদীতে জেসিপি নামিয়ে নদীর স্রোত অন্য খাতে বইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। যেখানে বাঁধ ভেঙেছে সেই অংশটি যে অসম্পূর্ণ ছিল তা স্বীকার করেছেন সেচ দফতরের শিলিগুড়ির এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র সমর সরকার। তিনি বলেন, “বর্ষা নেমে যাওয়ায় এবং বরাদ্দের অভাবে কাজ শেষ করা যায়নি। মহকমাশাসক জানতে চাইলে সে কথাই জানাব।” এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাজ অসম্পূর্ণ করে ফেলে রাখাই নয়, মেরামতির জন্য বাঁধের একেবারে ধার ঘেঁষে নদী খাত থেকে বালি তোলা হয়। তাতেই এ দিন প্রবল জলোচ্ছ্বাসে নদীর স্রোত ঘুরে মহিষমারির দিকে ঘুরে আসে। প্রবল জলের স্রোত বাঁধ ধরে রাখতে পারেনি। স্থানীয় সাইমন লাকড়া বলেন, “ওই বাঁধ তৈরির কাজ দেখেছি। আমরাও বলেছিলাম, জেসিপি যখন ব্যবহার হচ্ছে তখন নদীর মাঝখান থেকে বালি আনা হোক। তাতে বাঁধ চাপ পড়বে না। ইঞ্জিনিয়ররা আমাদের কথা পাত্তাই দেননি। রাতে জল বেড়ে নদীর স্রোত মহিষমারির দিকে ঘুরে যায়।” এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়রের বক্তব্য, “বাঁধ লাগোয়া নদী খাত থেকে বালি তোলার বিষয়টি জানা নেই। তবে আমরা নদী খাত ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি।” ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের বক্তব্য, যদি বাঁধ লাগোয়া জমি থেকে বালি তোলা না-হয় তাহলে নদীর স্রোত ঘরিয়ে অন্য খাতে বইয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হল কেন? |