জিন্দলদের সঙ্গে জমি লিজ চুক্তি চূড়ান্ত করল রাজ্য |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
অবশেষে শালবনির ইস্পাত কারখানা নিয়ে জিন্দলদের সঙ্গে জমি লিজ চুক্তি চূড়ান্ত হল। এ বার তা সই হওয়ার পালা। শিল্পমন্ত্রীর দাবি, চুক্তির খুঁটিনাটি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কোনও মতানৈক্য আর নেই।
মঙ্গলবার সংস্থার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, শীঘ্রই চুক্তি সই হবে। রাজ্য সরকার এই প্রকল্প নিয়ে আর দেরি করতে চায় না। এ দিকে, চুক্তি স্বাক্ষরের আগেই জমিহারাদের জমির দামের পাশাপাশি শেয়ার দেওয়ার মডেল বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে এগোল জিন্দল গোষ্ঠী। শালবনির প্রস্তাবিত ইস্পাত প্রকল্পে জমিহারাদের জন্য তৈরি ট্রাস্টে শেয়ার বাবদ ১৫ কোটি টাকা জমা করল সংস্থা। পার্থবাবু এ কথা জানিয়ে বলেন, “জমিহারাদের জন্য ক্ষতিপূরণ-সহ যে সব পদক্ষেপ সংস্থা করছে, তা চুক্তির অঙ্গ হিসেবেই থাকবে।”
সংস্থা সূত্রের খবর, ২০০৯ সালেই দু’সদস্যের ট্রাস্ট তৈরি করা হয়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক এবং জেএসডব্লিউ বেঙ্গলের প্রধান বিশ্বদীপ গুপ্ত ট্রাস্টে রয়েছেন। এই প্রকল্পের জন্য সব মিলিয়ে জমিহারার সংখ্যা ১২০০-র কাছাকাছি। একর প্রতি গড়ে তিন লক্ষ টাকা দেওয়ার পাশাপাশি জমির খতিয়ান পিছু একটি করে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে সংস্থা। জিন্দলদের প্রকল্পের জন্য প্রয়োজন মোট ৪৩৩৪ একর জমি। এর মধ্যে ৩০৩৫ একর খাস জমি। ৭৯৯.৯৭ একর জমি প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের কাছ থেকে নিয়ে রাজ্য সংস্থাকে দিয়েছে। ১৮৯.৬২ একর জমি পাট্টা মালিকদের কাছ থেকে কিনে নেয় রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম। সংস্থা নিজে ২৯৪ একর জমি কিনেছে। সমস্যার সূত্রপাত এই ২৯৪ একর জমি ঘিরেই। জমির ঊধ্বর্র্সীমা আইন অনুযায়ী অনুযায়ী ২৫ একরের বেশি জমি রাখতে গেলে ১৪ওয়াই ধারায় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে আবেদন করতে হয়। সেই অনুমোদন না থাকায় ২০০৫ সালে বিগত রাজ্য সরকারের সঙ্গে জিন্দলদের সমঝোতাপত্র সই হলেও জমির লিজ চুক্তি হয়নি। পরে অবশ্য জট কাটানোর সূত্র বেরোয়। ঠিক হয়, বিতর্কিত জমি প্রথমে খাস করে নেবে রাজ্য সরকার। তার পরে সেই জমি হাতে পাওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করবে সংস্থা।
এ দিন অন্ডালে বিমাননগরী এরোট্রোপলিসের নির্মাতা বেসরকারি সংস্থা বেঙ্গল এরোট্রোপলিস প্রজেক্ট (বিএপিএল) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন পার্থবাবু। শিল্পোন্নয়ন নিগম এবং বিএপিএল-এর প্রতিনিধি ছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের প্রতিনিধিরাও। পার্থবাবু জানান নিগমের তিন আধিকারিককে নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। এই প্রকল্পের জট ছাড়াতে কাজ করবে সেই কমিটি। চলতি মাসের মধ্যেই প্রকল্পের সমস্যা মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। তার পরে লিজ চুক্তি সই হবে বলে তিনি জানান। তাঁর অভিযোগ, সংস্থার সঙ্গে বিগত সরকারের করা চুক্তি অসমাপ্ত। |