ভাগ হবে এলাকা, আলাদা হবে রং-ও
বশেষে অটোকে শৃঙ্খলায় বাঁধতে চলেছে রাজ্য সরকার। অটো নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের শেষ নেই। অটোচালকেরাও ভাড়া বৃদ্ধির দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। দুই পক্ষের কথা শুনে কলকাতা ও শহরতলিতে অটো চলাচলের একটি নীতি তৈরির জন্য কমিটি গড়েছিল রাজ্য সরকার। তারাই নিজেদের সুপারিশ রাজ্য সরকারের কাছে জমা দিয়েছে। অটোকে শৃঙ্খলায় আনতে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে ওই কমিটির তরফে।
কমিটির প্রস্তাব, শহর ও শহরতলিতে চলাচলকারী অটোর সব রুটেই ভাড়ার হার এক রাখা হোক। প্রথম তিন কিলোমিটার পর্যন্ত পাঁচ টাকা, পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত সাত টাকা এবং সাত কিলোমিটার পর্যন্ত ভাড়া নয় টাকা রাখার সুপারিশ জানিয়েছে কমিটি। সাত কিলোমিটারের বেশি কোনও রুট যাতে না রাখা হয়, তেমন প্রস্তাবও রাখা হয়েছে ওই রিপোর্টে। বর্তমানে শহরের বিভিন্ন রুটে পাঁচ কিলোমিটারের জন্য ১০-১১ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেন অটোচালকেরা। কমিটির আরও সুপারিশ, কোনও রুটেই অটো ভেঙে চলতে পারবে না। অর্থাৎ, গড়িয়া থেকে গড়িয়াহাট রুট হলে পুরোটাই যেতে হবে অটোকে।
শহর ও শহরতলির সব অঞ্চলে অটোর উপরে নিয়ন্ত্রণ আনতে আশিসরঞ্জন ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন ওই কমিটির সুপারিশ, এ বার থেকে অটো চলার এলাকা ছ’টি ভাগে ভাগ করা হোক। প্রতিটি এলাকার জন্য পৃথক রঙের অটো চালানোরও প্রস্তাবও জানিয়েছে কমিটি। উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম কলকাতা ছাড়া বাকি দু’টি উত্তর শহরতলি এবং দক্ষিণ শহরতলি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি, এক এলাকার অটো অন্য এলাকায় চলতে না দেওয়ার সুপারিশও করেছে রাজ্য সরকারের ওই কমিটি।

অটো-রাজ নিয়ন্ত্রণ দাওয়াই

কলকাতা ও শহরতলিকে ছ’টি এলাকায় ভাগ করা হবে
প্রতিটি এলাকার জন্য অটোর পৃথক রং
এক এলাকার অটো অন্য এলাকায় যেতে পারবে না
সব রুটেই ভাড়ার হার এক রাখা হবে
ভাড়া হবে প্রথম তিন কিলোমিটারে পাঁচ টাকা
কোনও অটোর রুটই সাত কিলোমিটারের বেশি নয়
নতুন কোনও রুট তৈরি করা যাবে না
সব অটোকে দ্রুত এলপিজি-তে রূপান্তরিত করা হবে

পরিবহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, “কোন এলাকায় কোন অটো চলবে, তা নির্দিষ্ট করতে বিভিন্ন রঙের অটো ব্যবহার করা হবে। তার উল্লেখ সংশ্লিষ্ট অটোর পারমিটেও থাকবে। এক অঞ্চলে অন্য এলাকার অটো চলে এলে তাকে পারমিটের রং দেখে ধরে ফেলা যাবে।” ওই কর্তার কথায়, “সাধারণ ভাবে যে সমস্ত এলাকায় অটো চলে, চালকের বাড়িও ওই এলাকার আশপাশেই হয়। তাই বিশেষ কারণ ছাড়া অটো নিয়ে অন্য অঞ্চলে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।” এই ভাগটি করার আগে সব এলাকায় যাতে গ্যাস ভরার পর্যাপ্ত সংখ্যক পাম্প থাকে, তা-ও পরিবহণ দফতরকে নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছে ওই কমিটি।
কিন্তু এলাকার ভিত্তিতে অটোয় রং করে দিয়েই সমস্যার সমাধান হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পেট্রোল থেকে গ্যাসে রূপান্তরিত করার সময়ে এলপিজি-র সব অটো সবুজ রং করার নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য। তখন দেখা যায়, পেট্রোলে চলা বহু অটোও গ্যাসে রূপান্তরিত না হয়ে সবুজ রং করা হয়েছে। প্রশাসন তাদের ধরতেই পারেনি। এ ক্ষেত্রে কী হবে? পরিবহণকর্তাদের কাছে সেই প্রশ্নের জবাব নেই। তাঁদের কথায়, “এ সব দেখার কথা পুলিশের। তাদের ধরার রাস্তা বার করতে হবে।” অন্য দিকে পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, কলকাতা পুলিশ এলাকায় এমনিতেই কর্মী-সঙ্কট। এই অবস্থায় রাস্তায় নেমে রং দেখে অটো ধরা কার্যত অসম্ভব।
নতুন রুট ও নতুন অটোর পারমিট দেওয়া বন্ধ রাখার পরামর্শও দিয়েছে কমিটি। ইতিমধ্যেই কলকাতায় প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি পারমিটবিহীন অটো চলছে। সেগুলিকে দ্রুত নিয়মিত করার প্রস্তাব দিয়েছে কমিটি। একই সঙ্গে ওই রিপোর্টে কমিটি জানিয়েছে, মহানগরে এখনও গ্যাসচালিত অটোয় রূপান্তরের প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। তাই দ্রুত সেই কাজ শেষ করার কথাও বলা হয়েছে রিপোর্টে।
কমিটি জানায়, কলকাতায় যে ১২৫টি রুট রয়েছে, সেগুলি সবই সরকারি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট। কলকাতা লাগোয়া জেলাগুলিতে আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিকের (আরটিও) অফিস থেকে সব রুট নির্দিষ্ট করা থাকলেও সেগুলির সরকারি অনুমোদন নেই। সরকারকে এই সব রুটগুলিকে অনুমোদন দেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছে কমিটি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.