দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আতঙ্ক শিল্পতালুকে
থার যুদ্ধ আর হুমকি। কয়েক দিন ধরে এমনই চলছে বলে অভিযোগ। এ বার সেই ‘যুদ্ধ’ নেমে এল পথে। গত এক সপ্তাহে পরপর দু’বার রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল রাজ্যের শিল্পের মুখ, পাঁচ নম্বর সেক্টরের তথ্যপ্রযুক্তি তালুকে। মঙ্গলবার রাতের এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই রাতে আট জন নিরাপত্তারক্ষীর পুনর্বহালের দাবি ঘিরে ওয়েবেল মোড়ের কাছে একটি সংস্থার সামনে বিক্ষোভ দেখান সিটু-সমর্থকেরা। তা শেষ হওয়ার পরে লাগোয়া একটি চায়ের দোকানে কয়েক জন সিটু-সমর্থক দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখনই মোটরবাইক-আরোহী একদল যুবক তাঁদের ঘিরে ধরে মারধর করে বলে অভিযোগ। ওই সময়ে সেখানে অফিস-ফেরতা কিছু মানুষের ভিড়ও ছিল।
সিটু-র অভিযোগ, হামলাকারীরা তৃণমূল-আশ্রিত। এই হামলায় তাদের একাধিক কর্মী আহত হন। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের পাল্টা দাবি, তাদের কোনও সদস্যই সিটু-কর্মীদের মারধর করেননি।
সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা অন্য রকম। সংঘর্ষের সময়ে ওয়েবেল মোড়ের কাছে ওই চায়ের দোকানে বেশ কয়েক জন চা খাচ্ছিলেন। সংঘর্ষ শুরু হতেই যে যে দিকে পারেন, ছুটে পালানোর চেষ্টা করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী বলেন, “চা খাচ্ছিলাম। রাত সাড়ে আটটার পরে আচমকা কুড়িটারও বেশি মোটরবাইক এসে থামল। বাইক-আরোহীরা দোকানে দাঁড়ানো কয়েক জনকে লাল ঝান্ডা খুলতে বলল। তাঁরা রাজি না হওয়ায় মারধর শুরু হল। কোনও মতে দৌড়ে পালাই।” দেবাশিস গুহ নামে এক নিত্যযাত্রী বলেন, “কোনও দিন এখানে এ সব দেখিনি। এ বার বাইক-বাহিনীর দাপট দেখলাম। হাতে লাঠিও দেখলাম। ছিল না কেবল পুলিশ। আমাদের নিরাপত্তার হালটাও বুঝলাম।” যদিও খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সিটু-র অভিযোগ, বাইক-বাহিনীর কথা পুলিশকে জানানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, “দশ-বারোটি বাইকে করে কয়েক জন এসেছিল। তবে এতটা আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। সেক্টর ফাইভের নিরাপত্তার ব্যাপারে আমাদের যথেষ্ট নজরদারি রয়েছে।”
সিটু নেতা অমিতাভ নন্দীর অভিযোগ, “আমাদের সমর্থকদের লাগাতার হুমকি দিচ্ছিল তৃণমূল। পুলিশকে জানিয়েছিলাম। কিছু দিন আগে সমর্থকদের উপরে হামলাও হয়। ফের হামলা হল। শিল্পতালুকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করা যাবে না বলে ফরমান জারি করেছে তৃণমূল। আমরা গণতান্ত্রিক পথেই এর প্রতিবাদ করছি।” বাম নেতাদের দাবি, তাঁদের কর্মীদের নিজেদের দলে টানতে না-পেরেই এখন মারমুখী হচ্ছে তৃণমূল।
অভিযোগ অস্বীকার করে পাঁচ নম্বর সেক্টরে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা দিলীপ ঘোষের পাল্টা দাবি, “সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। এমন কিছু ঘটেছে বলে জানা নেই। আমাদের দলের কেউ কাউকে মারধর করেনি। আগে এখানে সিটু-রই সংগঠন ছিল। এখন কর্মীরা আমাদের দলে আসছেন। আধিপত্য কমায় উত্তেজনা ছড়াচ্ছে সিটু।” তৃণমূল নেতৃত্বের আরও দাবি, বিক্ষোভের নাম করে সিটু একটি সংস্থায় গোলমাল পাকাচ্ছিল। তা জানাতেই তাঁরা থানায় গিয়েছিলেন। এর বেশি কিছু তাঁদের জানা নেই। দিলীপবাবুর সাফ কথা, “এখানে কোনও সংস্থাই এখন সিটুকে পাত্তা দিচ্ছে না। ফলে রোজই মিটিং-মিছিল করে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। এর পরে আমরা বাধ্য হব পথে নামতে।”
এ দিকে, শিল্পতালুকের প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষের ভাইস চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক সুজিত বসু বলেন, “আমাদের কাছে কেউ কিছু জানায়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে দেখা হবে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.