ফুলের ঘায়েও এখন মূর্ছা যাওয়ার জোগাড়
শুধু সব্জি নয়। দামের দৌড়ে ফুলও পাল্লা দিচ্ছে সমানে! বিয়ের মরসুমে ফুল কিনতে গিয়ে লোকের মাথায় হাত। যাঁরা রোজ বাজার থেকে অল্পবিস্তর কেনেন, তাঁরা আরও ফ্যসাদে। গাঁদা, গোলাপ, রজনীগন্ধা সবই যে অগ্নিমূল্য!
আনাজের আঁচ ফুলেও কেন?
‘সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল-ব্যবসায়ী সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ নায়েকের ব্যাখ্যা, “প্রচণ্ড গরমে ফুলগাছ শুকিয়ে গিয়েছে। গাঁদা-গোলাপের ক্ষতিই সবচেয়ে বেশি। আবার গরমে যে সব গাছ বাঁচানো গিয়েছিল, সেগুলো বর্ষার কোপে পড়েছে।” চাষিরা জানাচ্ছেন, পর পর ক’দিনের বৃষ্টিতে গোড়ায় জল জমে অনেক গাছের গোড়া পচে গিয়েছে। সব মিলিয়ে উৎপাদন মার খেয়েছে বিস্তর। কতটা?
একটা হিসেব দিলেন পাঁশকুড়ার ফুল-চাষি অসিত হাইত। অসিতবাবু মল্লিকঘাট ফুলবাজারে বসেন। বললেন, “এক বিঘে জমিতে ১৮ হাজার গাঁদার চারা লাগিয়েছিলাম।
টিকে আছে সাকুল্যে হাজার তিনেক।” তাঁর দাবি, সাধারণ ভাবে ১৮ হাজার গাঁদার চারা লাগালে গরমে বড়জোর হাজার চারেক মারা যায়।
সেচের ‘যথেষ্ট ভাল’ ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও এই গরমে অসিতবাবু গাঁদা বাঁচাতে পারেননি। একই বক্তব্য কোলাঘাটের ফুল-চাষিদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, গরমের জেরে এ বার রজনীগন্ধা, দোপাটি ও গোলাপের উৎপাদন অনেক কম। নারায়ণবাবুর হিসেবে, দক্ষিণবঙ্গের যে সব জায়গায় ফুল চাষ হয়, সর্বত্রই অবস্থা কম-বেশি এক। ফলে মল্লিকঘাটে ফুলের জোগানে ঘাটতি ৩০% থেকে ৪০%।
দরের আঁচ
মল্লিকঘাট ফুল বাজার খুচরোবাজারে দাম
  এ বছর গত বছর
• গাঁদা (কেজি) ১০০ ৩০
• রজনীগন্ধা (কেজি) ৮০ ৪০
• দোপাটি (কেজি) ১০০ ২৫
• বেলফুল (কেজি) ১৫০ ৮০
• গোলাপ (একশোটি) ১৪০ ৫০
*(সব অঙ্ক টাকায়)
জোগান কম, তার উপরে বিয়ের মরসুম। দু’য়ে মিলে ফুলের চাহিদা আকাশছোঁয়া। কাঁকুড়গাছির রাজু দত্তের কথায়, “বন্ধুর বিয়ের জন্য মানিকতলা বাজারে ফুল কিনতে গিয়েছিলাম। রজনীগন্ধার কেজি ৮০ টাকা! একশোটা গোলাপের দাম ১৪০ টাকা। বাজেট ফেল হয়ে গেল!” নিউ মার্কেটের ফুল-ব্যবসায়ী সুরজিৎ দাঁর আক্ষেপ, “এখান থেকে পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রচুর ফুল যায়। অথচ জোগান খুবই কম। গোলাপ-গাঁদা-রজনীগন্ধা নেই বললেই চলে।”
সরকার কী বলছে? জেলার চাষিদের সাহায্যের জন্য রাজ্যের যে উদ্যানপালন দফতর আছে, তার আধিকারিকদের আশ্বাস: ফুল-চাষিদের যাবতীয় সহযোগিতা দিতে তাঁরা তৈরি। উন্নত মানের ‘কন্দমূল’ ও সার (যেমন কেঁচো সার) ব্যবহার করে কী ভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায়, সে ব্যাপারেও চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হবে জানিয়েছেন উদ্যানপালন-কর্তারা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.