বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: আজ ঘোষণা সার্ন-এর
ঈশ্বর কণার ‘জোরালো’
প্রমাণের আশায় বিজ্ঞানীরা

বিজ্ঞানের আকাশে-বাতাসে এখন শুধুই ঈশ্বর। মানে, ঈশ্বর কণা।
বুধবার জেনিভার অদূরে সার্ন গবেষণাগারে বিজ্ঞানীরা ঘোষণা করবেন ওই কণা সন্ধানে তাঁদের পরীক্ষার ফল। কী ঘোষণা করবেন, তা নিয়ে যখন জল্পনা চরমে, তখনই মঙ্গলবার ভোর রাতে আমেরিকার ফের্মিল্যাবের বিজ্ঞানীরা জানালেন, ঈশ্বর কণা সন্ধানে তাঁদের পরীক্ষার ফলাফল। বললেন, ঈশ্বর কণা যে আছে, তার ‘জোরালো প্রমাণ’ পেয়েছেন তাঁরা।
এ যেন তাঁর দর্শন নয়, শুধু বাঁশি শোনা। অথবা, বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যায়, এ যেন অনেকটা ডাইনোসর দেখতে চেয়ে শুধু তার ফসিল খুঁজে পাওয়া।
বলা দরকার, সার্ন-এ লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার (এলএইচসি) যন্ত্রে যেমন খোঁজা হচ্ছে ঈশ্বর কণা, ফের্মিল্যাবে টেভাট্রন যন্ত্রেও তেমন বহুকাল ধরে চলার পর গত বছর ধরে শেষ হয়েছে সেই কাজ। খোঁজ মানে কণায় কণায় সংঘর্ষ, তা থেকে এনার্জি, এবং তা থেকে নতুন কণা তৈরি। এ ভাবে তৈরি হয় লক্ষ কোটি নতুন কণা। আবার মুহূর্তে ধ্বংসও হয় তারা। ওই জন্ম এবং মৃত্যুর মাঝে ক্ষণিকের জন্যও ঈশ্বর কণা তৈরি হয়েছে কি না, তার সন্ধানে ব্যস্ত হাজার হাজার বিজ্ঞানী। কণায় কণায় সংঘর্ষে মিলেছে কী কী, তা খোঁজার কাজে ব্যস্ত পৃথিবী জুড়ে কয়েকশো বিজ্ঞানী। টেভাট্রন যন্ত্রে আসল সংঘর্ষ শেষ হয়ে গেলেও এখন চলছে ফলাফল বিশ্লেষণের কাজ। আর এলএইচসি-তে এখন চলছে যে সব সংঘর্ষ তার ফলাফল বিশ্লেষণ। টেভাট্রনের বিজ্ঞানীরা তাঁদের তথ্য বিশ্লেষণ শেষ করে ফলাফল ঘোষণা করলেন আজ ভোরে। আর এলএইচসি-র বিজ্ঞানীরা তাঁদের ফল ঘোষণা করবেন বুধবার। পিঠোপিঠি এমন আয়োজনের থেকেই বোঝা যায় ঈশ্বর কণা সন্ধানে পৃথিবী জুড়ে চলছে কেমন প্রতিযোগিতা। বলাবাহুল্য এই দৌড় প্রত্যাশিত। পদার্থ বিজ্ঞানে ঈশ্বর কণার গুরুত্ব বলে শেষ করা যায় না।
তাঁদের তথ্য পেশ করে টেভাট্রন-এর বিজ্ঞানীরা খুশি। কারণ ওঁরা দেখছেন, ঈশ্বর কণার উপস্থিতির যে ইঙ্গিত ওঁরা পেয়েছেন, তা অনুযায়ী কণাটির ভর যা দাঁড়াচ্ছে তা এলএইচসি-র বিজ্ঞানীদের হিসেবের সঙ্গে মিল যাচ্ছে। গত ১৩ ডিসেম্বর সার্ন-এর এক সেমিনারে এলএইচসি-র বিজ্ঞানীরা ঈশ্বর কণার ভর কী হতে পারে, তা জানিয়েছিলেন।
টেভাট্রন-এর মুখপাত্র রব রোসার মন্তব্য করেছেন, “আমাদের তথ্যে হিগস-বোসন (ঈশ্বর কণার বৈজ্ঞানিক নাম)-এর অস্তিত্বের জোরালো প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু তা আবিষ্কৃত হয়েছে বলতে হলে এলএইচসি-র তথ্য খতিয়ে দেখা দরকার।”
টেভাট্রনের বিজ্ঞানীরা তো নিজেদের গবেষণার ফল জানালেন। এলএইচসি-র বিজ্ঞানীরা বুধবার কী জানাবেন?
মুখে কুলুপ এঁটেছেন ওঁরা। তবে কানাঘুষো এই যে, ‘ঈশ্বর কণা ধরা পড়েছে’ এমন ঘোষণা নাকি ওঁরা করবেন না। এলএচিসি-তে তথ্য বিশ্লেষণের কাজে ব্যস্ত দু’দল গবেষক। যাঁদের কাজ দু’টো ডিরেক্টর যন্ত্রে। অ্যাটলাস এবং সিএমএস। এই দুই যন্ত্রে পাওয়া তথ্যই আলাদা ভাবে ঘোষিত হবে বুধবার। দু’দলের তথ্যে সম্পূর্ণ মিল না থাকলে নাকি ঈশ্বর কণা সম্পর্কে চূড়ান্ত ঘোষণা স্থগিত থাকবে।
কণার জঙ্গলে ঈশ্বর কণার সন্ধান, বিজ্ঞানীরা বলেন, একটা খড়ের গাদায় একটা সূচ খোঁজা নয়, হাজারটা খড়ের গাদায় একটা সূচ খোঁজা। তাই এই কাজে নিশ্চিত ফলাফল ঘোষণা কেমন কঠিন কাজ, তা অনুমেয়। এলএইচসি-র বিজ্ঞানীরা মনে করেন ভুলের সম্ভাবনা ১৭ লক্ষে ১ হলে তবেই তা সত্যি বলে গণ্য হবে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.