সংঘাতের আবহে বিদেশসচিব বৈঠক
হামজার পাক পাসপোর্ট নিয়ে আজ সরব হবে দিল্লি
ভারতের মাটিতে পা দিয়ে পাকিস্তানের বিদেশসচিব জলিল আব্বাস জিলানি আজ বলেছিলেন, তিনি ‘শান্তি’ এবং সমৃদ্ধির’ বার্তাই এনেছেন। ভারত-পাকিস্তান বিদেশসচিব পর্যায়ের বৈঠক শুরুর আগে কূটনৈতিক পরিস্থিতি কিন্তু উল্টো ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আব্বাস জিলানি
২৬/১১য় অভিযুক্ত লস্কর জঙ্গি আবু হামজার গ্রেফতার হওয়া এবং তার পাকিস্তানি পাসপোর্ট ও পাক পরিচয়পত্র (যা ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসে পাকিস্তানের সরকারি মদতের প্রমাণ বলেই নয়াদিল্লি মনে করছে) ঘিরে পরিস্থিতি যথেষ্ট উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। পাশাপাশি পাক জেলে বিশ বছরেরও বেশি বন্দি সর্বজিৎ সিংহের মুক্তি নিয়ে ইসলামাবাদের ‘নিষ্ঠুর তামাসা’ এক জাতীয় বিড়ম্বনা তৈরি করেছে মনমোহন সরকারের জন্য। তার উপর আজ দিল্লি আসার পরই কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গে দেখা করে পরোক্ষে কাশ্মীরের তাস খেলেছেন জলিল আব্বাস জিলানি। বিষয়টিতে যথেষ্ট ভ্রু কুঞ্চিত হয়েছে সাউথ ব্লকের। সব মিলিয়ে আসন্ন বৈঠকে কোনও ইতিবাচক বিবৃতি বা সফল আস্থাবর্ধক সিদ্ধান্ত উঠে আসার সম্ভাবনা খুব কম বলেই মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক।
আগামী কালের বৈঠকে প্রথমেই পাক নেতৃত্বের হাতে আবু জিন্দল ওরফে আবু হামজার পাক-পাসপোর্ট এবং পাক সরকারের দেওয়া দু’টি পরিচয়পত্রের কপি তুলে দেওয়া হবে। ২০০৯-এ জিন্দলকে রিয়াসত আলি নামে ওই পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। পাসপোর্টে তাকে পাক-পঞ্জাবের শেখপুরার বাসিন্দা বলে দেখানো হয়েছে। সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্রগুলিতেও উর্দু এবং ইংরেজিতে নাম লেখা। জিন্দল ভারতীয় নাগরিক এবং ইন্টারপোল জিন্দলের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করা সত্ত্বেও পাক-সরকারের তরফে এই পাসপোর্ট ও পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছিল বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আজ দাবি করেছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের আরও দাবি, ২০০৯-এ লাহৌরে পুলিশ অ্যাকাডেমিতে তালিবান হামলার পরে নাসিকে পুলিশ অ্যাকাডেমিতে একই ধাঁচে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করে হামজা।
পাকিস্তান এখনও পর্যন্ত ২৬/১১-র সঙ্গে ইসলামাবাদের সংযোগের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে চলেছে। হামজার গ্রেফতারির পর পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন, হামজা ভারতীয়। তার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং মালিকের দাবি ছিল, এই ঘটনা প্রমাণ করে যে সন্ত্রাসবাদীরা অনেক ক্ষেত্রেই ভারতীয়। পাকিস্তান তাদের জিহাদে উস্কানি দেয় না। আগামী কাল আবু হামজার পাকিস্তান-পাসপোর্টের বিষয়টি তুলে ধরে মুম্বই হামলায় অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের দাবি নিয়ে চাপ বাড়াতে চলেছে ভারত। পাকিস্তানের কাছে চাওয়া হবে মুম্বই সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কণ্ঠস্বরের নমুনাও। সন্ত্রাসের প্রশ্নটি ছাড়াও সর্বজিৎ সিংহের দ্রুত মুক্তির প্রশ্নে সরব হবেন বিদেশসচিব রঞ্জন মাথাই।
সাম্প্রতিক ঘটনাবলী যে দিকে যাচ্ছে তাতে এই বৈঠকে যে চাপের মধ্যে পড়তে হবে সে কথা আগে থাকতেই টের পেয়েছে ইসলামাবাদ। সে কারণে তা মোকাবিলার কৌশল তৈরি করেই ভারতে আসার বিমান ধরেছেন আব্বাস জিলানি। ভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের আগেই তিনি আজ হুরিয়ত মধ্যপন্থী নেতা মিরওয়াইজ ওমর ফারুক, জেকেএলএফ নেতা ইয়াসিন মালিক-সহ কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার সঙ্গে কথা বলে পরোক্ষে কাশ্মীরের আবেগটিকে উস্কে দিতে চেয়েছেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীরই মূল বিষয় ও তা নিয়ে আলোচনাকে যেন অগ্রাধিকার দেওয়া হয় এমনই বলা হয়েছে পাক দূতাবাসের পক্ষ থেকেও। বৈঠকের পর চরমপন্থী হুরিয়ত নেতা সৈয়দ গিলানি ভারত-পাক আলোচনাকে অর্থহীন বলে আখ্যা দিলেও মিরওয়াইজ বলেন, আলোচনা দরকার। তবে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে কাশ্মীরিদের সামিল করতে হবে। তাঁর দাবি, পাক সচিব তাঁদের ইসলামাবাদ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যথেষ্ট জটিল। এর আগে সিয়াচেন এবং স্যার ক্রিক নিয়ে দু’তরফের আনুষ্ঠানিক বৈঠক কার্যত ভেস্তে গিয়েছে। বিদেশমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণর পাকিস্তান যাওয়ার কথা ছিল জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সফরে যেতে আদৌ উৎসাহী নন তিনি। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের তরফেই তাঁকে এই সময় পাকিস্তানে যেতে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন পাকিস্তান গেলে ঘরোয়াভাবে ভুল বার্তা যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

বাড়তি ফি ছাড়াই বাংলাদেশে যাবে ভারতীয় জাহাজ
বাড়তি ফি না দিয়েই বাংলাদেশের উপকূলে যাওয়ার সুযোগ পাবে ভারতীয় জাহাজ। ভারত ও বাংলাদেশের জাহাজ পরিবহণ সচিবদের বৈঠকে আজ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দু’দিন ধরে বাংলাদেশের জাহাজ সচিব আব্দুল মান্নান হাওলাদারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের জাহাজ সচিব পি কে সিংহ। এ দেশের জাহাজমন্ত্রী শাহজাহান খানের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। এত দিন বাংলাদেশের নদীপথে যাতায়াতের সুযোগ পেত ভারতের জলযান। এ বার সমুদ্র উপকূলে আসার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রগামী জাহাজকে বাড়তি ফি দিতে হয়। কিন্তু, ভারতের জাহাজ বাংলাদেশের বন্দরেই আসবে। তাই বাড়তি ফি দেওয়ার প্রশ্ন নেই। হাওলাদার জানান, ভারত থেকে আসা প্রতি টন পণ্যের জন্য আট ডলার পরিষেবা চার্জ চেয়েছে বাংলাদেশ। পণ্য বাংলাদেশে ব্যবহৃত হলে শুল্ক মেটাবে স্থানীয় এজেন্ট। শুল্ক মেটানোর নিশ্চয়তা বজায় রাখতে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি চেয়েছে ঢাকা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.