নেতাজি ইন্ডোরে পর্যটন মেলা
ঠেকায় কে
সহ্য গরমে শহর যখন হাঁসফাঁস, আকাশে দেখা নেই বর্ষার মেঘের তখনই শহরের মন আবার উড়ুউড়ু। পুজোর ছুটির বুকিং শুরু হয়ে গিয়েছে। রেলের কাউন্টারে রাত থাকতে লাইন, আইআরসিটিসি-র ওয়েবসাইটে হিট বেড়েছে দশ গুণেরও বেশি! কলকাতার পায়ের তলার সরষে নড়ে উঠেছে। এমনই মাহেন্দ্রক্ষণে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে আনন্দবাজার পত্রিকার আয়োজনে বসছে ভ্রমণের মেলা ‘ট্যুরিস্ট স্পট’। বেড়াতে যাওয়ার আনন্দটা যে শুরু হয় তার পরিকল্পনা করার সময় থেকেই, সেটা কে না জানে। কিন্তু কোথায় যাওয়া? পাহাড় না জঙ্গল, নিছক নির্জন ছুটি নাকি তীর্থ? এ বড় কঠিন প্রশ্ন, তবু ছয় থেকে আট জুলাই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মেলায় ঘুরতে ঘুরতে এই প্রশ্নটাই নিশ্চয় ঘুরপাক খাবে বঙ্গজনের মনে। নানা ট্যুর অপারেটর, হোটেল গ্রুপের সঙ্গে মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, হিমাচল, গুজরাত, ওড়িশা ও মহারাষ্ট্রের সরকারি পর্যটন বিভাগ সেখানে হাজির থাকবে। আয়োজকদের হিসেব বলছে, প্রতি বছর পূর্ব ভারতে বৃহত্তম এই ভ্রমণমেলায় কুড়ি হাজারেরও বেশি মানুষ আসেন। কিন্তু ভ্রমণপিপাসু বাঙালির চরিত্র কি বদলাচ্ছে? কী বলছেন ট্যুরিজমের সরকারি কর্তারা?
কথা হচ্ছিল রাজস্থান ট্যুরিজমের কলকাতা দফতরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক গোপালকৃষ্ণ গোস্বামীর সঙ্গে। বললেন, “কিছুটা তো বদলাচ্ছেই, নতুন নতুন স্পট খুঁজছেন তাঁরা, তাঁদের সুবিধের কথা মনে রেখে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাকে অনেক আধুনিক করেছি আমরা।” বদলটা আরও সাফ জানালেন মধ্যপ্রদেশ ট্যুরিজমের কলকাতার রেসিডেন্ট ম্যানেজার অভিজিৎ ধর, “প্রায় তিরিশ বছর আমি এ শহরে ট্যুরিস্ট সামলাচ্ছি। আগে কেউ যদি দশটা প্রশ্ন করতেন তার আটটাই হত স্পট সম্পর্কে। আর এখন সাতটা থাকাখাওয়ার আরামদায়ক বন্দোবস্তের উপরে।” কিন্তু পকেট? “সে বাধাও কেটেছে অনেক, পর্যটনে কলকাতার মানুষের ব্যয়ক্ষমতা বেড়েছে,” বললেন অভিজিৎবাবু। অর্থাৎ, মূল্যবৃদ্ধির বাজারেও বাঙালি পকেটের পরোয়া বিশেষ করছে না। ছুটলে বাঙালি, ঠেকায় কে! সঙ্গে ভ্রমণপিপাসু ই-বাঙালি, দেবাশিস দেবের তুলিতে।

লাল পাহাড়ি
শ্রীরামপুর রেল স্টেশনের পাশে একাকী এক মহুয়া গাছকে দেখে কবি অরুণ চক্রবর্তী লিখেছিলেন, ‘লাল পাহাড়ির দ্যাশে যা’ কবিতাটি। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় অরণ্য হত্যার শব্দে কাব্যগ্রন্থে। পরে তাঁরই কণ্ঠে গান হয় কবিতাটি। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, পরিব্রাজক এই স্বভাব-বাউল মানুষটি তাঁর ‘লাল পাহাড়ি’র দৌলতে গ্রামবাংলার লোকগায়ক, লোকাল ট্রেনের গায়ক বা বাংলা ব্যান্ড, সবার কাছেই সমান জনপ্রিয়। ১৯৭২-এ তাঁর এই রচনা কপিরাইটের নিয়ম ভেঙে ব্যবহৃত হয়েছে বিভিন্ন ভাবে, উল্লেখ করা হয়েছে ‘প্রচলিত লোকসঙ্গীত’ বলে। ৬ জুলাই সাড়ে ৫টায় রবীন্দ্রসদনে এই গানের চল্লিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত হয়েছে এক অনুষ্ঠান। ‘লাল পাহাড়ি’-র স্রষ্টাকে সম্মান জানাতে উপস্থিত থাকবেন কালাচাঁদ দরবেশ, মনসুর ফকির, সুরজিৎ-সৌমিত্র (ভূমি), অনিন্দ্য-উপল (চন্দ্রবিন্দু), সিধু-পটা (ক্যাকটাস), কালিকাপ্রসাদ (দোহার), লোপামুদ্রা, শিলাজিৎ, আব্রাহাম মজুমদার ও আরও অনেকে। থাকবেন অরুণ চক্রবর্তী স্বয়ং (সঙ্গের ছবি)। আয়োজনে সহজিয়া ফাউন্ডেশন।

বিদ্রোহী
রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতবর্ষ। নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লেখার নব্বই বছর। উদ্যাপনের এই সূত্রটিকে ধরে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যাপন ৪ জুলাই বিকেলে পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের পূর্বশ্রীতে। প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী শ্রীপ্রকাশ জয়সোয়াল। সম্মাননীয় অতিথি বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। নজরুলগীতি, আবৃত্তি ও পাঠে দুই দেশের শিল্পীরা। নৃত্যাকারে উপস্থাপিত হবে ‘বিদ্রোহী’।

স্বামীজি
১৮৮০-র ২৭ জানুয়ারি নরেন্দ্রনাথ দত্ত ভর্তি হলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের কলা বিভাগে। প্রথম বর্ষে উপস্থিতির হার ছিল যথেষ্ট, কিন্তু দ্বিতীয় বর্ষে অসুস্থতার জন্য তা কমে গেল। ফলে প্রেসিডেন্সি থেকে ফার্স্ট আর্টস পরীক্ষা দেওয়া হল না। পরীক্ষা দিলেন জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন থেকে। প্রেসিডেন্সির ওই জগদ্বিখ্যাত প্রাক্তনীটির উত্তরকালের নাম স্বামী বিবেকানন্দ। তাঁর সার্ধশতবর্ষের উদ্যাপনে এ বার শামিল প্রেসিডেন্সি কলেজ প্রাক্তনী সংসদও। ৭ জুলাই ডিরোজিয়ো হলে, বিকেল সাড়ে পাঁচটায় উদ্যাপনে থাকবেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, উপাচার্য মালবিকা সরকার প্রমুখ। প্রেসিডেন্সির দুঃস্থ ও মেধাবী পড়ুয়াদের বৃত্তি দেওয়া হবে অনুষ্ঠানে। প্রাক্তনীরা পরিবেশন করবেন স্বামীজির পছন্দের গান নিয়ে একটি আলেখ্য।

শতবর্ষে অ কৃ ব
পুরো নাম অজিতকৃষ্ণ বসু। কিন্তু অ কৃ ব নামেই তিনি সর্বত্র পরিচিত। মূলত রসসাহিত্যিক হলেও জাদুবিদ্যা ও সঙ্গীতেও তাঁর পারদর্শিতা ছিল। ১৯১২-র ৩ জুলাই ঢাকা-গ্যান্ডেরিয়ায় অজিতকৃষ্ণর জন্ম। পড়াশোনা ঢাকার জগন্নাথ কলেজ ও কলকাতার স্কটিশচার্চ কলেজে। ১৯২৬-এ, মাত্র ১৪ বছর বয়সে ‘খোকাখুকু’ মাসিকপত্রে প্রকাশিত অনুবাদ-কবিতা দিয়ে লেখালিখির সূত্রপাত। কৌতুকরসের কবিতা-গল্প-উপন্যাসই লিখেছেন বেশি। ‘শনিবারের চিঠি’তে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত ‘পাগলা গারদের কবিতা’ তাঁর অন্যতম সেরা রচনা। ইংরেজি কৌতুককবিতা লিখেছেন ‘শঙ্করস উইকলি’তেও। ডি জে কিমার ও ডাকব্যাক কোম্পানিতে বিজ্ঞাপন ও প্রচারের কাজে কর্মজীবন শুরু। পরে ইংরেজির অধ্যাপনা গোবরডাঙা কলেজ ও আশুতোষ কলেজে। জাদুসম্রাট পি সি সরকারের বাল্যবন্ধু অজিতকৃষ্ণ জাদুবিদ্যা নিয়ে লেখালিখিও করেছেন। সঙ্গীতশিক্ষার হাতেখড়ি কৃষ্ণচন্দ্র দে’র কাছে। তালিম নিয়েছেন উস্তাদ গুল মহম্মদ খাঁ ও তারাপদ চক্রবর্তীর কাছে। সে কথা আছে ওস্তাদ কাহিনী গ্রন্থে। তাঁর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ৮ জুলাই বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ২৪ অশ্বিনী দত্ত রোডে ‘শরৎ সমিতি’র প্রেক্ষাগৃহে ‘অ.কৃ.ব. মণ্ডলী’ ও ‘ব্যঙ্গমা ব্যঙ্গ রসিক সভা’ এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সঙ্গীত, আবৃত্তি, রচনা পাঠের সঙ্গে থাকবে জাদু প্রদর্শনও। প্রকাশিত হবে দিগম্বর দাশগুপ্ত সম্পাদিত অ.কৃ.ব. ব্যক্তি ও স্রষ্টা নামে একটি গ্রন্থ।

অ-ভয়
‘মৃত্যুকে নয়, শ্বাসকষ্টটাকে ভয় পেতাম। আর পাই না। কষ্টটা তো সাময়িক। হয় চিকিৎসায় কষ্ট কমবে, নয়তো মৃত্যুতে। কষ্টের ভয় আর আমার আনন্দকে নষ্ট করবে না।’ কয়েক দিন আগে সৌগত বলেছিলেন। পেশায় মনস্তাত্ত্বিক। গবেষণার বিষয় মানসিক শক্তির উৎস। জীবন-যন্ত্রণার মধ্যে মানুষ কী ভাবে বেঁচে থাকার রসদ খুঁজে পায়, তাই বোঝার চেষ্টা করতেন। সৌগতর সংবেদনশীল মন মানুষের দুর্বলতা নয়, সবলতার সন্ধান করত। মানসিক রোগকে, প্রতিবন্ধকতাকে, ভয় পেয়ে নয়, দূর থেকে সহানুভূতি জানিয়েও নয়; আর্তজনের মনুষ্যত্বকে সম্মান জানিয়ে অন্তরের সম্পদে কী ভাবে তাকে বলীয়ান করা যায়, এই ছিল ওঁর ভাবনার জগৎ। লেখাপত্রে ঘুরে ঘুরে আসত আশা, আনন্দ, বিশ্বাসের কথা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত মনোবিজ্ঞানের ছাত্র, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ডক্টরেট অধ্যাপক। ব্যাঙ্গালুরুর নিমহানস-এ শিক্ষিত ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট। ডঃ সৌগত বসুর গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে দেশি-বিদেশি জার্নালে। জনপ্রিয় শিক্ষক, ক্লিনিকাল সুপারভাইজার। মানসিক স্বাস্থ্য সংস্থা ‘মন ফাউন্ডেশন’, এবং শিশু-নারী-পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা ‘টুওয়ার্ডস ফিউচার’-এর সভাপতি। বাংলা লেখার হাত চমৎকার, গুটিকতক লেখায় পরিচয় রয়ে গিয়েছে। ভালবাসত সাহিত্য পড়তে, নাটক-সিনেমা দেখতে, রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতে, পাখি চিনতে, পাহাড়ে বেড়াতে। সারা ভারতে ছড়ানো গুণগ্রাহী বন্ধুরা। অফুরন্ত আড্ডা দিতে পারত। দুরারোগ্য হার্টের অসুখ ধরা পড়ার পরে সবাই জানত মৃত্যু খুব দূরে নয়। কিন্তু ২৪ জুন গভীর রাত্রে যখন ডাক এল, তখন কেউ প্রস্তুত ছিল না। মাত্র আটচল্লিশটি বসন্তে সব আড্ডা ফুরোলোও না হয়তো। রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজে মেঘনাদ সাহা হল-এ তাঁর স্মরণসভা ৪ জুলাই ৩টেয়।

তিনি আছেন
মনে হয় বাচ্চা কাঁদছে, ব্রাজিলের রিয়ো ফেস্টিভ্যাল-এ এমন এক অদ্ভুত আওয়াজ শোনা যায়। আওয়াজটা ভাবিয়েছিল রাহুলদেব বর্মনকে। রহস্য উদ্ধার করলেন ব্রাজিল গিয়ে। কুইকা নামের এক বাদ্যযন্ত্র এর উৎস। বাজানোর পদ্ধতি আবিষ্কার করার জন্য ধরিয়ে দেন টিম-সদস্য ফ্রাঙ্কো ভাজকে। তা দিয়েই বাঁধলেন, মাছের কাঁটা, খোপার কাঁটা। মনজিল মনজিল ছবিতে হে বাবা গানটির সুরে অন্য মাত্রা যোগ করেন জলি মুখোপাধ্যায়ের পিঠ বাজিয়ে। তিনি নেই দু-দশক। তবুও স্মৃতি অমলিন। ২৭ জুন, ৭৩ তম জন্মদিনে কলামন্দিরে অনবদ্য সে সব সুর বাজালেন তাঁর টিমের ফ্রাঙ্কো ভাজ, নীতীন শঙ্কর এবং কিশোর সোদা। গাইলেন জলি মুখোপাধ্যায়। সঙ্গে স্মৃতিচারণ। কাটা হল জন্মদিনের কেক। কিন্তু মঞ্চে মালাহীন ছবি। কারণ তিনি আছেন। গানের মাধ্যমে, অগণিত গুণমুগ্ধের অন্তরে। আয়োজনে ইউফোনি।

প্রয়াণ
‘দীর্ঘ পথ পরিক্রমা শেষে/ কোথায় পৌঁছেছি এসে/ এই প্রশ্ন খুবই স্বাভাবিক’। তাঁর পথ পরিক্রমা শুরু অবিভক্ত বাংলায়। ১৯৪৬-এ ম্যাট্রিকুলেশন-এ প্রথম হন। পরে ইন্ডিয়ান রেভেনিউ সার্ভিসে যোগ দেন। ইনকাম ট্যাক্সের চিফ কমিশনারের পদ থেকে অবসর নিয়ে সুধীরকুমার গঙ্গোপাধ্যায় জড়িয়ে ছিলেন সমাজসেবায়। আজীবন যুক্ত ছিলেন ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতালের সঙ্গে। লিখেছেন গল্প, কবিতা ও জাপানি হাইকু। ‘শরৎ সমিতি’ থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর গবেষণা গ্রন্থ শরৎ সাহিত্যে সত্য। বাংলার মনীষা, গোল্ডেন বুক অব শরৎচন্দ্র, গোল্ডেন বুক অব বিদ্যাসাগর গ্রন্থের অন্যতম সম্পাদক ও লেখক ছিলেন তিনি। সম্প্রতি প্রয়াত হলেন সুধীরকুমার।

রজত জয়ন্তী
ছোট ছোট পিজবোর্ডের টুকরো, তার উপরে মুদ্রিত যাত্রার সূচনা ও গন্তব্য স্টেশনের নাম। এক সময়ে এই ছিল ভারতীয় রেলের টিকিট। বুকিং কাউন্টারে টাকা দিলে ওই টিকিটের উপরে তারিখ ও সময়ের ছাপ মেরে দেওয়া হত। পরিবর্তন এল কম্পিউটার চালিত আসন-সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালুর পর। কম্পিউটারের সাহায্যে যাত্রা ও যাত্রীর যাবতীয় তথ্য এক সঙ্গে টিকিটের মধ্যেই দিয়ে দেওয়া সম্ভব হল। প্রথমে দিল্লি, তার ঠিক পরেই কলকাতায় ওই ব্যবস্থা চালু হয় পঁচিশ বছর আগে। ১৯৮৭-র ৩০ জুন নিউ কয়লাঘাট টিকিট সংরক্ষণ কার্যালয় থেকে প্রথম দিন রাজধানী, কাঞ্চনজঙ্ঘা, মিথিলা এবং রাঁচি-হাতিয়া এক্সপ্রেসের ‘কম্পিউটারাইজড টিকিট’ দেওয়া হয়েছিল। প্রথম টিকিটটি ছিল ৫৭ আপ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস-এর হাওড়া থেকে বর্ধমান পর্যন্ত যাত্রার ১৪ টাকা ভাড়ার দ্বিতীয় শ্রেণির একটি টিকিট। লক্ষণীয়, তখন ট্রেনের নম্বর ছিল ২ অঙ্কের এবং পিএনআর নম্বর ৬ অঙ্কের, এখন যা যথাক্রমে ৫ ও ১০ অঙ্কের।

কবিতীর্থ
বিলেত বলতে কি কেবল রানির প্রাসাদ, টাওয়ার অব লন্ডন, ব্রিটিশ মিউজিয়াম? না, সত্যম রায়চৌধুরীর চোখে বিলেত মানে ‘কবিতীর্থ’ও। শেক্সপিয়র, কিটস, ওয়র্ডসওয়র্থ এবং অবশ্যই রবীন্দ্রনাথ এই চার কবির স্মৃতিবিজড়িত লন্ডনকে কবিতীর্থ হিসেবে দেখেছেন কবিতীর্থ বিলেত-এর লেখক। সম্প্রতি স্প্রিং ক্লাবে পত্র ভারতী-র বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হল। সত্যমের কিন্তু এমন চোখে লন্ডনকে দেখা কেন? লেখক বলছেন, ‘বিলেত আমি আগে কয়েকবার গেছি। কিন্তু এ বার একটু অন্য ভাবে দেখলাম। বিলেতের কবিতীর্থের অন্তরমহল খুঁজে পাওয়ার দুঃসাহসী ভাবনা কেউই বোধহয় করেননি। আমি সেই ভাবনা কাগজে এঁকে ফেলার লোভ সংবরণ করতে পারিনি।’

ই-ভাগাড়
তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার এখন সর্বত্র। তাতে অজস্র সুবিধা হয়েছে সন্দেহ নেই, কিন্তু একটা মস্ত বিপদও তৈরি হয়েছে। সেই বিপদের নাম তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের বর্জ্য, যাকে বলে ই-ওয়েস্ট। এই বর্জ্যের মধ্যে এমন সব রাসায়নিক পদার্থ থাকে যা স্বাস্থ্যের পক্ষে অতি ক্ষতিকর। কলকাতায় প্রতি বছর ২৬,০০০ টন ই-বর্জ্য তৈরি হয়। মুশকিল হল, এই বর্জ্য ফেলার কোনও বিশেষ ব্যবস্থা নেই তা সাধারণ বর্জ্যের সঙ্গে মিলেমিশে থাকে এবং দূষণ ছড়ায়। এই দূষণ প্রতিরোধে কলকাতায় একটি নতুন উদ্যোগ শুরু হল। পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ-এর সহায়তায় টক্সিকস লিঙ্ক নামক একটি অসরকারি সংস্থা ‘ডব্লিউ ট্রিপল ই’ নামক এক প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে কলকাতায় তিনটি ই-বর্জ্য রিসাইক্লিং বিন বসিয়েছে পরিবেশ ভবন, ভারতীয় জাদুঘর ও বি আই টি এম-এ। আরও ১৭টি বিন বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ই-বর্জ্য সম্বন্ধে সচেতনতা বাড়াতে থাকছে ওয়ার্কশপও।

কলকাতার গান
সেই ছোটবেলাতেই তাঁর অভিনয়জীবনের শুরু। বাবা কিশোরকুমারের সঙ্গে কিশোরেরই পরিচালনায় ‘দূর গগন কি ছাওঁ মে’ আর ‘দুর কা রাহি’ ছবির সেই কিশোরটি আজও রয়ে গিয়েছে চিত্রস্মৃতিতে। সেই কিশোর, অমিতকুমারের ৬০তম জন্মদিন আগামিকাল। এখনও তিনি গানে সক্রিয়। সাম্প্রতিক কয়েকটি বাংলা ছবিতেও গান গেয়েছেন তিনি। ‘পঞ্চম’ রাহুল দেব বর্মনের স্মৃতিতে ক্যালেন্ডার প্রকাশ কিংবা কিশোরকুমারকে ঘিরে নানা অনুষ্ঠান উপলক্ষে এ শহরে এসেছেন অনেক বার। এ বার তাঁর জন্মদিনের আগের দিন, আজ অমিতকুমার ফ্যান ক্লাবের আয়োজনে আইসিসিআর-এ শিল্পীর ৬০ বছরের জন্মদিন উদ্যাপন। বাইশ বছর পরে প্রকাশিত হবে ‘কলকাতার গান’ (সারেগামা), যেখানে রকেট মণ্ডল ও অর্ণব চট্টোপাধ্যায়ের সুরে, রংগন চক্রবর্তীর কথায় ব্যান্ডের গান গেয়েছিলেন অমিতকুমার। প্রকাশিত হবে অমিতকুমারের নিজের সুরে নিজের গানের হিন্দি অ্যালবাম ‘ও সুইট হার্ট’ (ইউনিভার্সাল)। ১৯৮৭-তে মৃত্যুর কয়েক মাস আগে সিডিটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেছিলেন কিশোরকুমার।

আলোকচিত্রী
গত শতাব্দীর চল্লিশের দশক। সমগ্র বাংলা তখন ধুঁকছে অন্নাভাবে। সামনে খাবারের শূন্য বাটি নিয়ে বসে থাকা উলঙ্গ, অর্ধউলঙ্গ, হাড়-পাঁজর বার করা মানুষে ভরে গিয়েছে বাংলার শহর-গ্রাম। ইতিহাসে এর পরিচিতি ‘তেতাল্লিশের মন্বন্তর’ নামে। অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির নির্দেশে পার্টির মুখপত্র ‘জনযুদ্ধ’-এর জন্য মন্বন্তরের ছবি তোলার দায়িত্ব দেওয়া হল সুনীল জানা নামে এক তরুণকে। সুনীলের তোলা মন্বন্তরের সেই সব ছবি আলোড়ন তুলল ভারত জুড়ে। তারপর স্বাধীনতা আন্দোলন, দেশভাগ-- তাঁর ক্যামেরা সব কিছুরই সাক্ষী থেকেছে। ১৯১৮-য় অসমে জন্ম সুনীলের। পড়াশোনা কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স ও প্রেসিডেন্সি কলেজে। ছাত্র বয়সেই কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। মন্বন্তরের পর পার্টির কাজ নিয়ে তৎকালীন বোম্বেতে চলে যান এবং ফটোগ্রাফিকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। কিছু কাল পরে আবার কলকাতায় ফিরে এসে ১৯৪৯-এ সত্যজিৎ রায়, চিদানন্দ দাশগুপ্তদের সঙ্গে ‘ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটি’ গড়ে তোলেন। সিগনেট প্রেস থেকে প্রকাশ হয় তাঁর প্রথম বই দ্য সেকেন্ড ক্রিচার। মূলত ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার হিসেবে থাকলেও স্বাধীনতার পর সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে কাজ করেছেন। সাধারণ গ্রামীণ মানুষের জীবনযাত্রা তাঁকে অবিরত আকর্ষণ করেছে। ভেরিয়ার এলুইন-এর সঙ্গে ছিল গভীর বন্ধুত্ব, আদিবাসী জীবন নিয়ে তাঁর তোলা ছবির তুলনা মেলা ভার। তুলেছেন স্থাপত্য-ভাস্কর্যের ছবিও। কলকাতায় স্কুল অব প্রিন্টিং টেকনোলজিতে ফটোগ্রাফি বিভাগের প্রধান ছিলেন ১৯৫৮-’৬৭। ১৯৭২-এ পদ্মভূষণ ও ২০১২-এ পদ্মবিভূষণ সম্মান পেয়েছেন। পৃথিবীর অনেক দেশেই প্রদর্শিত হয়েছে তাঁর তোলা ছবি। বইও লিখেছেন বেশ কয়েকটি। ১৯৮০-তে তিনি লন্ডনে চলে যান, ২০০৩ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলে শহরের বাসিন্দা। সম্প্রতি সেখানেই প্রয়াত হলেন ৯৪ বছরের এই বিশিষ্ট আলোকচিত্রী।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.