নকল করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ার পরে ৭ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করেছিলেন শিক্ষকরা। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর শিক্ষকদের ঘরে চড়াও হয়ে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি বাইরে থেকে শিকল তুলে আটকে রাখল একদল ছাত্র। মালদহের সামসি কলেজে শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। আধ ঘণ্টা ধরে কমনরুমে আটকে থাকার পর পুলিশ গিয়ে শেকল খুলে শিক্ষকদের উদ্ধার করে। এসএফআইয়ের নেতৃত্বে শিক্ষকদের হুমকি দেওয়া সহ কমনরুমে আটকে রেখে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার জেরে এ দিন উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কলেজে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কলেজের শিক্ষকরাও। এসএফআইয়ের তরফে তরফে অবশ্য ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। সামসি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রলয় ঘোষ বলেছেন, “নকল করার সময় কিছু ছাত্র শিক্ষকদের বাধা দেয়। পরে কিছু ছাত্র এসে শিক্ষকদের ঘরে বাইরে থেকে শেকল তুলে দেয়। পুলিশ প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তা খুলে দেয়। কারা এ কাজ করেছে তা জানি না।” এসএফআইয়ের সামসি কলেজের জিএস জিয়াউল হকের দাবি, কলেজে কি হয়েছে তা জানি না। তবে এদিনের কোনও ঘটনার সঙ্গে এসএফআইয়েক কেউ জড়িত নয়। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছে কলেজগুলিতে। এদিন ছিল তৃতীয় বর্ষের পাশ কোর্সের ইতিহাস পরীক্ষা। পরীক্ষার সময় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্য়ন্ত। এদিন পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকেই বেশ কিছু ছাত্র নকল করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। শিক্ষকরা বারবার নিষেধ করার পরও তারা নিষেধ না মেনে নকল চালিয়ে যেতে থাকেন বলে অভিযোগ। উল্টে নকল করতে দিতে হবে বলে শিক্ষকদেরকেই ওই ছাত্ররা হুমকি দিতে থাকে বলে অভিযোগ। নকল বন্ধ না হওয়ায় শেষে ৭ ছাত্রের পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়া হয়। কলেজের ছাত্র সংসদ আসএফআইয়ের দখলে। পরীক্ষা শেষ হতেই এসআফআইয়ের নেতৃত্বে একদল ছাত্র কয়েকজন শিক্ষকের নাম ধরে হুমকি দিতে দিতে কলেজে ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ। এরপর তারা শিক্ষক কমনরুমে চড়াও হয়ে শিক্ষকদের হুমকিও দেয়। বেরিয়ে যাওয়ার সময় বাইরে থেকে কমনরুমে শেকল তুলে দিয়ে দেয়। কয়েকজন শিক্ষক বলেন, “এমাসের ২৬ তারিখ থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তার পর থেকেই নকলে বাধা দেওয়ায় ছাত্রদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। আর এদিনের ঘটনার পর থেকে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সামসি কলেজ ইউনিটের সম্পাদক মহম্মদ সানাউল্লা বলেন, “কলেজের ছাত্র সংসদ এসএফআইয়ের দখলে। তাই ক্ষমতার জোর দেখিয়ে ওরা যা খুশি করতে চাইছে। ওদের দাবি এসএফআই কর্মীদের নকল করতে দিতে হবে। এটা মানা যায় না। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাক অনিমেষ সিংহ বলেছেন, “এ ধরনের ঘটনা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে যা বলার বলব।” |