শেষ পর্যন্ত বৃহত্তর কলকাতায় সরকারি বাসের পাঁচটি ডিপোয় এলপিজি পাম্প তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। এ নিয়ে শুক্রবার ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (আইওসি) ভবনে একটি বৈঠক হয়। তাতে হাজির ছিলেন বিভিন্ন তেল সংস্থা, পাম্প-মালিক সংগঠন এবং রাজ্যের পরিবহণ দফতর নিয়ন্ত্রিত একটি নিগমের কর্তারা।
এলপিজি পাম্প কম থাকার অভিযোগ তুলে গত বছর ৩১ জুলাই ভিআইপি রোডে অবরোধ করেছিলেন অটোচালকেরা। এর পরেই মহাকরণে বৈঠক ডেকে পরিবহণমন্ত্রী চালক-প্রতিনিধিদের জানিয়েছিলেন, দ্রুত কিছু জ্বালানিকেন্দ্র তৈরি করা হবে। এর জন্য কমিটি তৈরির কথাও হয় সে সময়ে। কিন্তু অটোচালকদের অভিযোগ, তাতে তেমন কাজ হয়নি। রুটের বাইরে দূরে কোনও পাম্প থেকেই নিয়মিত এলপিজি ভরতে হয় তাঁদের। বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি।
কয়েক মাস আগে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র অটোর চালক-প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিভিন্ন তেল সংস্থার কর্তাদের পাশে নিয়ে তিনি মহাকরণে ঘোষণা করেছিলেন, এই সমস্যার সমাধান করতে সরকারি বাসের বিভিন্ন ডিপোয় পাম্প তৈরি হবে। কিন্তু অটোচালকদের অভিযোগ, তার ব্যবস্থাও এত দিনে হয়নি।
কেন এই হাল? পরিবহণ কর্তারা এর দায় চাপানোর চেষ্টা করেছেন তেল সংস্থাগুলির উপরে। পরিবহণ দফতরের এক পদস্থ অফিসার বলেন, “এ ব্যাপারে তেল সংস্থাগুলির কাছ থেকে নির্দিষ্ট প্রস্তাব না পাওয়ায় কাজ এগোনো যায়নি।” এ দিকে আইওসি-র চিফ ডিভিশনাল ম্যানেজার সুজয় চৌধুরী জানিয়েছেন, হাওড়া-সহ কলকাতা মেট্রোপলিটন অঞ্চলে অটো এলপিজি-র জন্য ৩৬টি পাম্প রয়েছে। তিনি বলেন, “এর ১৬টি আইওসি-র। হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম এবং ভারত পেট্রোলিয়ামের পাম্পের সংখ্যা যথাক্রমে ১২ ও ৮টি।” এক-একটি পাম্প ভাল ভাবে তৈরি করতে খরচ পড়ে প্রায় তিন কোটি টাকা। এ কথা জানিয়ে সুজয়বাবু বলেন, “প্রতিটির জন্য ১৫০ ফুট দীর্ঘ এবং ১৫০ ফুট প্রস্থ জায়গা প্রয়োজন। উপযুক্ত জায়গা পেলে আমরা অবশ্যই পাম্প তৈরি করব।” পাম্প গড়ার জন্য পর্যাপ্ত জমির অভাবের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন পরিবহণকর্তারাও।
সুজয়বাবু বলেন, “কলকাতায় আগেই তিনটি ডিপোয় পাম্প তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। সেগুলি হল সিটিসি-র রাজাবাজার ও টালিগঞ্জ ডিপো এবং এসবিএসটিসি-র টিটাগড় ডিপো।” এ দিন বৈঠকের পরে পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর রাজ্য সভাপতি তুষার সেন বলেন, “বেলঘরিয়া এবং বারাসতে এসবিএসটিসি-র ডিপোতেও পাম্প তৈরির প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” শিলিগুড়ি, দুর্গাপুর এবং হলদিয়ায় সরকারি ডিপোয় পাম্প করার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রশাসনকে জানাবে তেল সংস্থাগুলি।
তুষারবাবুর বক্তব্য, “কল্যাণী ও বসিরহাটের মতো কিছু অঞ্চলের পাম্প থেকে এলপিজি বিক্রি হচ্ছে না। এটি খুব সমস্যার। তেমনই কিছু অঞ্চলে পাম্পের অভাবে চালকেরা ফের বিষাক্ত কাটাতেল ব্যবহার করতে শুরু করেছেন, তা-ও বন্ধ করতে হবে।” দুই সমস্যার সমাধান হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, অটোচালকদের সুবিধার্থে যেই নয়া পাম্পগুলি তৈরি হচ্ছে, সেখানে এলপিজি-র পাশাপাশি পেট্রোল এবং ডিজেলও বিক্রি হবে।
|
পাঁচটি রাজ্য সড়কে উন্নয়ন নিয়ে সমীক্ষা
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিতে রাস্তা উন্নয়নের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে বেছে নেওয়া হল কলকাতা-বাসন্তী হাইওয়ে-সহ পাঁচটি রাজ্য সড়ককে। রাজ্যের পূর্তসচিব অজিতরঞ্জন বর্ধন শুক্রবার জানান, পাঁচটি রাজ্য সড়কের সমীক্ষার দায়িত্ব কোন সংস্থা পাবে, তা ঠিক করবে সড়ক উন্নয়ন নিগম। বাসন্তী হাইওয়ে ছাড়াও হুগলি-বাঁকুড়া সংযোগকারী দু’নম্বর রাজ্য সড়ক এবং পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া সংযোগকারী চার নম্বর রাজ্য সড়কে সমীক্ষা হবে। বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পূর্ব মেদিনীপুরের মধ্যে সংযোগকারী পাঁচ নম্বর রাজ্য সড়ক এবং কোচবিহার ও জলপাইগুড়ির মধ্যে সংযোগকারী ১২এ রাজ্য সড়কেও সমীক্ষা হবে। |