বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের ‘অপবাদ’
সালিশি সভায় কেটে নেওয়া হল বধূর মাথার চুল
স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করতেন স্বামী। তারই জেরে স্থানীয় ক্লাবের সাহায্যে সালিশির ব্যবস্থার করেন স্বামী। সালিশিতে স্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করে জরিমানা করা হয়। কিন্তু তা না দেওয়ায় তাঁর চুল কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামী ও সালিশি সভার সদস্যদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার পাঠানখালির ৭ নম্বর জেলেপাড়ায় ওই ঘটনা ঘটে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কঙ্করপ্রসাদ বাড়ুই বলেন, “মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ স্বামী-সহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭ নম্বর জেলপাড়ার বাসিন্দা হরিপদ মণ্ডল স্ত্রী সুমিত্রাদেবীর সঙ্গে পাশের গ্রামের বাসিন্দা চিন্তা দাসের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করতেন। এ দিন তিনি বলেন, “অনেকদিন ধরেই স্ত্রীর সঙ্গে পাশের গ্রামের চিন্তার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে স্ত্রীকে নিষেধ করলেও ও তা স্বীকার করত না। কিন্তু বৃহস্পকতিবার রাতে ওদের দু’জনকে হাতেনাতে ধরে ফেলি। তার পরেই বিচারের জন্য ঘটনাটা পাড়ার ক্লাবে জানাই। ওরা যে সিদ্ধান্ত নেয় তা আমি মেনে নিই।”
ধৃত স্বামী। নির্যাতিতা বধূ।—নিজস্ব চিত্র।
যদিও স্বামীর বক্তব্য অস্বীকার করেছেন সুমিত্রাদেবী। তিনি বলেন, “এক বছর ধরে স্বামীর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। আমি ছোট ছেলের সঙ্গে থাকি। সামনেই ওর বিয়ে। চিন্তা সম্পর্কে আমার পাড়াতুতো দেওর হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে বৃষ্টির সময় ও আসে। দেখি বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে ভিজছে। ওকে ভিজতে দেখে বারান্দায় আসতে বলি। ইতিমধ্যে আমার স্বামী ছুটে এসে আমাকে গালাগালি দিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিতে থাকে। তার পরে লোকজন ডেকে মারধর করতে করতে ক্লাবে নিয়ে যায়।” তিনি আরও বলেন, “ক্লাবে নিয়ে গিয়ে সকলের সামনে আমাকে ‘অপবাদ’ থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য ৪০ হাজার টাকা চাওয়া করা হয়। টাকা দিতে পারব না জানানোয় মারধর করে আমার মাথার চুল কেটে নেওয়া হয়। আমাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ওদের অনেক অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু ওরা শোনেনি। যারা আমার এমন অবস্থা করেছে তাদের যেন কঠোর শাস্তি হয়।” সুমিত্রাদেবীর ছেলে সচ্চিদানন্দন মণ্ডল বলেন, “আমি আমার বিয়ের নিমন্ত্রণ সারতে অন্যত্র গিয়েছিলাম। তারই সুযোগ নিয়ে বাবা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার মা সম্পূর্ণ নির্দোষ। বাবার শাস্তি চাই।”
ক্লাবের সভাপতি ধৃত বিশ্বনাথ মণ্ডল বলেন, “ওই মহিলার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক হাতে নাতে ধরে ফেলে তাঁর স্বামী আমাদের কাছে বিচার চাইতে আসেন। বিচারে সিদ্ধান্ত হয় মহিলাকে ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে। কিন্তু তিনি দিতে রাজি হননি। তখন তাঁর চুল কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওঁর স্বামীও তাতে সায় দেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.