সদ্য চলে গেল ২১ জুন। ওই তারিখেই উত্তর গোলার্ধের আকাশে সূর্য সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী। সকল প্রাণের উৎস উজ্জ্বলতম নক্ষত্রটিকে অভিবাদন জানাতেই নাকি ১৯৭৬ সালে শুরু হয় বিশ্ব সঙ্গীত দিবস। দিনটা উপলক্ষমাত্র, এই সুযোগে পড়ে নিই বিশ্বসঙ্গীতের অগণিত গৌরবের ১, ২, ৩... ২১টির কথা।


তানসেন

ভারতীয় মার্গসংগীত কে চেনাল? বছর আটেক-এর বাচ্চা আলবাত উত্তর দেবে মিঞা তানসেন। সম্রাট আকবর-এর
নবরত্ন সভার একটি জ্বলজ্বলে নক্ষত্র। রাগ মেঘমল্লার গেয়ে বৃষ্টি নামিয়ে দিতে পারতেন আর রাগ দীপক গেয়ে
জ্বালিয়ে দিতে পারতেন আগুন! এই মিথ (অথবা সত্যি, কে বলতে পারে!) বেয়ে ধ্রুপদের সঙ্গে পরিচয় হয় সাধারণ
মানুষের। ভারতীয় সব ঘরানারই তানসেন-এর কাছে কিছু ধার-বাকি রয়েছে বইকি। অতকাল আগে ভারতীয়
ধ্রুপদের সঙ্গে মধ্য এশিয়ার সুফি সংগীতের ফিউশন তৈরি করাও নাকি তাঁরই পেটেন্ট। এ রকম আরও
সৃষ্টির অধিকর্তা তিনি। অতএব তাঁকে ব্যতীত মহান ভারতীয় সঙ্গীত অসম্পূর্ণ।

হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা
কোথায় গিয়েছিল হ্যামেলিনের শিশুরা? চলে গিয়েছিল অন্য কোথাও? হারিয়ে গিয়েছিল? কেন? প্রাকৃতিক বিপর্যয়? কালান্তক প্লেগ? ক্রুসেড? কেউ জানে না, নানা উপকথার নানা মত। কিন্তু কত না গল্প, কত না গাথা সেই হারিয়ে যাওয়ার সূত্র ধরে। এবং, উল্ফগাঙ ফন গ্যোয়টে, গ্রিম ভাই, রবার্ট ব্রাউনিং সকলের সব কাহিনিতেই জার্মানির লোয়ার স্যাক্সনি-র ছোট্ট শহরটির পথে বহুবর্ণ পোশাক পরা সেই আশ্চর্য মানুষ হেঁটে যায়, তার বাঁশি বাজিয়ে। সেই বাঁশির সুর যে শিশুর কানে যায়, তার আর রক্ষা নেই। একই সঙ্গে মোহময় এবং মর্মান্তিক হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা।

বেগম আখতার
১৯৩৪ সালে কলকাতায় প্রথম ঘরোয়া আসরের বাইরে গান গেয়েছিলেন আখতারি বাঈ ফৈজাবাদী। কিরানা আর পাটিয়ালা, দুই ঘরানার সম্মিলনে তৈরি হয়ে উঠলেন বেগম আখতার। সঙ্গীতের বিশুদ্ধতাকে বিসর্জন না দিয়ে তাঁর দাদরা, ঠুংরি আর গজল যে মোহজাল তৈরি করল, তার টানে ধ্রুপদী সঙ্গীতের ভক্ত হয়ে উঠলেন অগণিত ‘সাধারণ মানুষ’। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতকে তার অভিমানী উচ্চকোটি থেকে মুক্তি দিয়ে বৃহত্তর সমাজে ছড়িয়ে দিয়েছেন যাঁরা, আখতারি বাঈ তাঁদের প্রথম সারিতে। তাঁর ফিল্মি কেরিয়ার নিয়ে যাঁরা উচ্চাঙ্গের কটাক্ষ করেন, তাঁদের মনে করিয়ে দেওয়া যাক, বেগম আখতারের শেষ ছবি ‘জলসাঘর’।

রবিশঙ্কর
১৮ জুন, ১৯৬৭। ভোর হয়ে আসছে। ক্যালফোর্নিয়ায় সে দিন শেষ হচ্ছে মন্টেরেই পপ মিউজিক ফেস্টিভ্যাল। সহসা, যেন বহু যুগের ও পার থেকে, রক-মিউজিক জমানায় ভোরের আলোয় ‘ধুন’ বয়ে এল এক ভারতীয় শিল্পীর আঙুল বেয়ে। মুগ্ধ, উল্লসিত, চুপ, ছলোছলো, পাগলামো শ্রোতাদের মধ্যে এ রকম সব অদ্ভুত শিরশিরানি, আর মঞ্চে মগ্ন হয়ে বাজাচ্ছেন পণ্ডিত রবিশঙ্কর। এর আগেও পাশ্চাত্যে পরিচিত তিনি, কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু শ্রোতাগোষ্ঠীর মধ্যে। তার আগেই অবিশ্যি এ মহামান্য ভারতে তাঁর নিজ মুকুট পরেই নিয়েছেন। কিন্তু এই বার দুনিয়া তাঁকে মাথায় করে রাখবে। এক্ষণে পাশ্চাত্যের সবাই হুড়মুড়িয়ে পড়বে তাঁর কাছে। এর আগের বছর বিটলস-এর জর্জ হ্যারিসন-এর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে। ১৯৬৭ সালে তিনি জিতে নিয়েছেন গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডস। এ তো কেবল খানিক স্মৃতিচারণ, আসলে তাঁর সম্পর্কে কিছু বলতে যাওয়া বোকামি।

উডস্টক

১৯৬৯। আমেরিকা বীরবিক্রমে ভিয়েতনামে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে সব, ওয়ান স্মল স্টেপ-এ পায়ে চাঁদ পেয়ে নিচ্ছে।
তা-ও, না কি তাই-ই, ফুটছে একটা গোটা প্রজন্ম। হাওয়ায় আহ্বান ভাসতেই জমায়েত হল নিউইয়র্ক-এর
বেথেল-এ, যেখানে হবে থ্রি ডে’জ অব পিস অ্যান্ড মিউজিক উডস্টক। উন্মাদনার অলখ টানে সেই থ্রি বেড়ে হল ফোর।
স্বামী সচ্চিদানন্দ শান্তির পাঠ পড়লেন, শুরু হল নন-স্টপ গান, ৩২টি ব্যান্ড ও শিল্পী মিলে, ছিলেন রবিশঙ্করও।
লাখ পাঁচেক লোক, জায়গা নেই, বসারও না, বৃষ্টি অঝোর, কাদায় মিশল হিসি, ঘাম, ড্রাগ, বমি, বীর্য, তবু চলল গান।
জেহাদ। যুদ্ধের বিরুদ্ধে, স্বাধীনতার পক্ষে, খোলা বক্ষে। ওরা নাম পেয়ে গেল নতুন। উডস্টক জেনারেশন।

বব ডিলান
ষাটের কাউন্টারকালচার তো জল পেয়েছিল তাঁকে ধরেই। গলা মোটেই ভাল নয়, কী বলেন অর্ধেক বোঝাই দায়, কিন্তু হাত থেকে যে লেখা বেরোত, তার ক্ষমতা ছিল সময় ঘুরিয়ে দেওয়ার। আর সেই জোরেই তো বব ডিলান হয়ে উঠলেন প্রকৃত আর্বান ফোকস্টার। ফোক, ব্লুজ, দাদা’ইজম, বিট পোয়েট্রি, বিজ্ঞাপনের ভাষা, সব মিলিয়ে তৈরি করলেন গান, যা একই সঙ্গে ছিঁড়ে খায় আবার সান্ত্বনাও দেয়। হয়ে উঠলেন একটি গোটা প্রজন্মের স্বর। যাঁর লেখা কিট্স, এলিয়ট, টেনিসন-এর সঙ্গে তুলনা করা হল। কিন্তু ডিলান যে ডিলান... অতএব তিনি অন্য সব চলতি হাওয়ার মতো, নিজের নামের হাওয়কেও বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেরিয়ে গেলেন। বয়ে গিয়েছে তাঁর পতাকাবাহক হতে, তাঁর খোঁজ তো সমাজ-টমাজ ছাড়িয়ে আরও ওপরে, অন্য কোথাও...

এলভিস
আগে ধরা হত কৃষ্ণাঙ্গ শ্বেতাঙ্গের মিউজিক আলাদা। মেলে না। এলভিস এ বার যা করলেন, তা বদলে দিল আমেরিকান মিউজিক। নিগ্রো’র পেট থেকে ছিটকে আসা ব্যথা আত্মস্থ করে, মেশালেন শ্বেতাঙ্গ এলিট সংগীতে। শুরু হল রক অ্যান্ড রোল জেনারেশন। নিজের গান, ভাবভঙ্গি দিয়ে দুমড়ে দিলেন যাবতীয় আড়ষ্ট ভাব, নিষেধ। গানকে নামিয়ে আনলেন রাস্তায়। পৃথিবী পেল তার প্রথম সুপারস্টার, সেক্স-সিম্বল। যাঁর গান টিনএজ-এর কানে পৌঁছল ট্র্যানজিস্টর হয়ে, আর রগে রগে পুরে দিল স্পর্ধা। আর সেই স্পর্ধা, শরীর বা যৌনতাকে আপন করতে শেখাল যেই, ঘটে গেল ধুন্ধুমার। তিনি মসিহা হলেন, বিষ-ও। সিক্সটিজ-ও তো এল তাঁকে ধরেই।

বিটল্স



জিমি হেনড্রিক্স মাইকেল জ্যাকসন
রক মিউজিকের আসল কলজে ইলেকট্রিক গিটার। তার চেরা আর্তি, ক্রুদ্ধ হুঙ্কার। আর কে করলেন সেটা? জিমি হেনড্রিক্স। জিমি’র গিটার, ও ভাবেই রককে ‘হিউম্যান’ করে তুলেছিলেন। রক কালচারে জিমি যা করেছেন, মাত্র তিন বছরের পেশাদার জীবনে। কারণ তাঁর মৃত্যু ২৭ বছর বয়সেই। স্টেজে দাঁড়িয়ে গিটারের সঙ্গে সঙ্গম করা বা সেটিকে পুড়িয়ে ফেলার মধ্যে প্রতিষ্ঠান-বিরোধী অবস্থান ছিল নির্ঘাত, কিন্তু আরও বেশি করে ছিল, রক-এর অন্তরাত্মার সঙ্গে আকুল এক আলাপচারিতা। অমন গিটার বাজানো ও অমন ভাবে গিটার বাজানোর চোটেই হার্ড রক আরও দৃপ্ত হল, আর তার কিছু পর জন্ম নিল হেভি মেটাল । স্টেজের বাইরে কী হয়েছে ভুলে যান, স্টেজে দাঁড়িয়ে যা করেছেন, তার মাত্র চল্লিশ ভাগ করলেও মাইকেল জ্যাকসন অমর হতেন। গানের গলা তো ঈশ্বরের মতো। আবার অবলীলায় তৈরি করেছেন নরম ‘গন টু সুন’-এর মতো ব্যালাড, ‘ইয়ু আর নট অ্যালোন’-এর মতো অ্যানথেম, ‘জ্যাম’-এর মতো র‌্যাপ ধর্মী হিপ-হপ গান। একই সঙ্গে গাইছেন, সুর করছেন, অ্যারেঞ্জ করছেন, বাজাচ্ছেন, লিখছেন আর এমন সব মিউজিক ভিডিয়ো বানাচ্ছেন, যেগুলো প্রায় আস্ত একটা সিনেমা। আর নাচ? তাঁর নাচ? সে তো...

সাইরেন বোনেরা
একাকী দ্বীপে বসে তারা তিন (না কি, দুই) বোন গান গাইত। সেই সুর যে শুনবে, তার ধ্বংস অনিবার্য।
ইথাকার রাজা ইউলিসিস তাঁর নাবিকদের আদেশ দিয়েছিলেন, দ্বীপের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় যেন
তারা তাঁকে বেঁধে রাখে। তাদের কানে মোম ঢেলে দেওয়া হয়েছিল আগেই। নাবিকরা রাজার আদেশ পালন করেছিল,
তাই সে গান শুনেও তাঁকে প্রাণ দিতে হয়নি। বৃন্দাবনের মেয়েটিকে আটকানোর কেউ ছিল না, তাকে মরতে হল।


হ্যাপি বার্থডে টু ইয়ু
গান নয়, ট্র্যাডিশন। পৃথিবীর যেখানেই যান, আনন্দদিনে এ গান শুনবেনই। কেন্টাকি’র প্যাটি ও মিল্ড্রেড হিল,
দু’জনে মিলে বাচ্চাদের জন্যে সুর করেছিলেন ‘গুড মর্নিং টু অল।’ বাচ্চারা এমন মাতোয়ারা হল,
যে কথা বদলে গেয়ে ফেলল জন্মদিনে। বাকি তো ইতিহাস। এর চেয়ে বড় সাম্রাজ্যবাদী আছে?

বাখ

মোৎসার্ট, বেঠোফেন, শপ্যাঁ, শুমান, মেন্ডেলসন তাঁর গুণমুগ্ধ। শুধু তা-ই নয়, তাঁর কম্পোজিশন
শোনার পরে এঁরা নিজের নিজের সঙ্গীত সৃষ্টির শৈলীতে পরিমার্জন ঘটিয়েছিলেন। বেঠোফেন বলেছিলেন,
‘তিনি আধুনিক হার্মনি-র আদি জনক।’ জার্মানির সন্তান জোহান সেবাস্টিয়ান বাখ (১৬৮৫-১৭৫০)
জীবৎকালে যন্ত্রী হিসেবে খ্যাতি পেয়েছিলেন বটে, কিন্তু তাঁর সৃষ্টিপ্রতিভাকে প্রাপ্য সম্মান দিতে
পরের শতাব্দী অবধি অপেক্ষা করতে হয়েছিল। এমন তো কতই হয়।


এবং আই পি টি এ
আজ হরতাল, আজ চাকা বন্ধ। তবু স্লোগান নয়, গান। প্রতিবাদের গান তো কতই, কিন্তু তারা সকলেই সঙ্গীত নয়,
কেউ কেউ সঙ্গীত। সহজ নয় সেই কেউ কেউ হয়ে ওঠা। এখানেই পল রোবসন, পিট সিগারদের মহিমা।
‘ওল ম্যান রিভার’ বা ‘হোয়্যার হ্যাভ অল দ্য ফ্লাওয়ার্স গন’ শুনি যখন, তখন গানই শুনি, প্রতিবাদটা
গানের ভিতর দিয়ে মরমে প্রবেশ করে। এবং তার পর ‘দ্বিগুণ জ্বলে যেন, দ্বিগুণ...’ এখানেই আই পি টি এ।


থিম মিউজিক
সাপুড়ের বীণ কতকালের পুরনো? ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে নিশ্চয়ই উত্তর পাওয়া যাবে। কিন্তু তখনও কি সাপুড়ে
‘নাগিন’-এর থিম মিউজিক বাজাত? ওই ছবিটির (১৯৫৪) পর সাপুড়ের বাঁশিতে আর কোনও ধুন তো বাজে না।
শতকোটি প্রণাম এ রকম থিম মিউজিকদের। পথের পাঁচালী, ডক্টর জিভাগো, গডফাদার, লাইমলাইট, শোলে,
দীপ জ্বেলে যাই আড্ডায় বা রিংটোনে এখনও এদের রমরমা। একলা-ফোকলা সময়ের শিসে তো এরাই ফিরে ফিরে আসে।

ডোভার লেন

১৮/২ ডোভার লেন। গড়িয়াহাটের একটি ঠিকানা। এবং উচ্চাঙ্গসঙ্গীত-রসিকদের মহাতীর্থ। ১৯৫২ সালে
এখানেই শুরু হয়েছিল ডোভার লেন সঙ্গীত সম্মেলন। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে, কলকাতার আদুরে শীত গায়ে মেখে
রসিকরা হাজির হতেন আসরে, সারারাত্তির অবগাহন করতেন সারা দেশের শ্রেষ্ঠ শিল্পীদের গানে ও বাজনায়।
অন্দরে আসন মেলেনি, মাঘ মাসের ঠান্ডায় সারা রাত বাইরে বসে গান এবং বাজনা শুনেছেন, এমন মানুষ আজও
বিরল নয় এই শহরে। এমন আরও নানান আসর বসত মহানগরীতে, তারা প্রায় সবাই এখন অতীত। ডোভার লেন মিউজিক
কনফারেন্স আজও সগৌরবে জমজমাট। আসরের ঠিকানা বদলেছে, নাম বদলায়নি। ডোভার লেন আসলে ভূগোল নয়, ইতিহাস।


কবীর সুমন (চট্টোপাধ্যায়)
কে বলল, সোনার কাঠি কেবল রূপকথায় পাওয়া যায়? ১৯৯২ সালে কলকাতা শহর যে ঘুম ভেঙে জেগে উঠেছিল, সোনার কাঠি ছাড়া সে ম্যাজিক হয় নাকি? বিবর্ণ প্রচ্ছদে মোড়া একটি ক্যাসেট, এক ডজন গান। ব্যস, দীর্ঘ অনাবৃষ্টিতে তৃষ্ণার্ত নাগরিক বললেন, ‘তোমাকে চাই’। সুমন চট্টোপাধ্যায় এ কালের বাংলায় এক বিস্ময়, অবশ্যই। কিন্তু তার চেয়েও বড় বিস্ময়, যে বাঙালি সত্যিকারের প্রতিভা চেনার ব্যাপারে নিতান্তই তালকানা, সে এই এক বার অন্তত কোনও ভুল করেনি। হাফহাতা শার্ট আর জিনস পরা একটা লোক একা একা গিটার আর কিবোর্ড আর হারমোনিকা নিয়ে গান গাইবে, আর সেই গান শুনবে বলে পনেরো থেকে পঁচাশি নজরুল মঞ্চ থেকে কলামন্দির সর্বত্র পাড়ি দিচ্ছে রূপকথা নয়?

প্রথম রেকর্ড
ছবিটি আঁকা ১৮৯৯ সালে। নিপার-এর ছবি। সে একটা চোঙের সামনে মুখ ঝুঁকিয়ে এক মনে গান শুনছে। তার প্রভুর কণ্ঠস্বর। হিজ মাস্টার্স ভয়েস। এইচ এম ভি’র জন্ম ১৯২১ সালে, লন্ডনে। শতাব্দী পেরিয়ে এল, আমরা মুখ ঝুঁকিয়েই আছি। কিন্তু শুরুরও শুরু থাকে। ১৮৭৭ সালে নিজের গলায় ‘মেরি হ্যাড আ লিটল ল্যাম’ রেকর্ড করেছিলেন অদ্বিতীয় টমাস আলভা এডিসন। প্রথম রেকর্ড করা মানুষের কণ্ঠস্বর? অনেক কাল তেমনটাই জানা ছিল। নতুন ইতিহাস লেখা হল ২০০৮-এর মার্চ মাসে। প্যারিসের এক আর্কাইভে খুঁজে পাওয়া গেল একটি ‘ফোনঅটোগ্রাফ’, ১৮৬০ সালে একটি লোকগান রেকর্ড করেছিলেন কোনও এক শিল্পী। এই প্রাচীন যন্ত্রটি থেকে সে গান উদ্ধার করেছেন বিজ্ঞানীরা। দশ সেকেন্ডের গান। মহাকালের দখল থেকে জয় করে আনা দশ সেকেন্ড।

গীতবিতান

হাতে ধরতে গেলে একখানা মোটা বই। জীবন-দর্শন-আশ্রয় সব লুকিয়ে রয়েছে লাইনে লাইনে।
বাঁধানো গীতবিতান নেই এমন বাঙালি বাড়ি, হয় নাকি? রবীন্দ্রসঙ্গীত তো মরমে ছুঁয়েই গিয়েছে। কিন্তু
একান্তে গীতবিতান পড়া এই মুহূর্ত কাউকে উত্তরণ দিতে, কাউকে আশ্রয় দিতে আবার কাউকে
উদাসীন হতে কম সাহায্য করেনি। এক জন গীতিকারের পক্ষে এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি কিছু হয়?

এবং, অবশ্যই,
তিনি। লতা মঙ্গেশকর।
বাকি যা কিছু, বলাই বাহুল্য।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.