‘পিক’ শব্দটা আর পাঁচটা খেলার মতো ফুটবলেও খুব জরুরি একটা শব্দ। যে কোনও বড় টুর্নামেন্টে একটা টিম ঠিক সময়ে ‘পিক’ করছে কি না, তার উপর টিমের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে। পর্তুগিজদের পক্ষে সবচেয়ে সুখবর, ঠিক সময়ে টিমটা ‘পিক’ করতে শুরু করেছে। কারণ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। কোনও একজনের পারফরম্যান্সে যে একটা গোটা টিমের পারফরম্যান্স এ ভাবে বদলে যেতে পারে, তার সেরা উদাহরণ রোনাল্ডো। ও একাই ট্রফি আনতে পারে। সেই সম্ভাবনা কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালেই চেক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে ম্যাচে তৈরি হল। রোনাল্ডোর দুটো শট পোস্টে লেগেছিল মনে রেখেই বলছি, পরিষ্কার তিন গোলে ম্যাচটা জিততে পারত পর্তুগাল। পারেনি কারণ গোলে পের চেক বেশ কয়েকটা নিশ্চিত গোল বাঁচিয়েছে আর মিডফিল্ডে জিরাসেক একা চেকদের নড়বড়ে ডিফেন্সকে সামলেছে।
রোনাল্ডো ক্লাবের হয়ে যতটা সফল, দেশের হয়ে নয়। এই অভিযোগটা ইউরোর শুরু থেকেই তাড়া করছিল ওকে। সঙ্গে মেসির সঙ্গে ওর তুলনা। জিনিয়াস যে হবে, সব সময় যাবতীয় সমালোচনার জবাব মাঠে দেওয়ার চেষ্টা করবে। বিশ্ব ফুটবলে দাগ কাটার মতো কিছু করে ইতিহাসে ঢুকতে হলে ২০১৪ বিশ্বকাপের আগে ইউরোই ছিল সেরা মঞ্চ। সেখানে কিন্তু নেদারল্যান্ডস ম্যাচ থেকেই ভয়ঙ্কর হতে শুরু করেছে রোনাল্ডো। কমপ্লিট ফুটবলার বলতে যা বোঝায়, ও বরাবরই তাই। ফুটবলের তিনটে ‘এস’ মানে স্পিড, স্কিল আর স্ট্যামিনা, তিনটেই ওর আছে। যখন যেটা দরকার, তখন সেটা প্রয়োগ করতে পারে। নেদারল্যান্ডস ম্যাচে যদি পায়ের কাজে গোল এসে থাকে, কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে এল হেডে। মোতিনহোর যে ক্রসটা চেক প্রজাতন্ত্রের বক্সে ভেসে এসেছিল, সেটায় হেড করা একেবারেই সহজ ছিল না। রোনাল্ডো বলেই পেরেছে। পর্তুগালকে পরের ম্যাচটা খেলতে হবে স্পেন বা ফ্রান্সের সঙ্গে। যেখানে আমার বাজি অবশ্যই স্পেন। সেমিফাইনালে রোনাল্ডোকে সামলাতে কিন্তু মার্কার লাগাতে হতে পারে দেল বস্কিকে। কারণ পুয়োল না থাকায় স্পেনের ডিফেন্স কিন্তু গত বিশ্বকাপের মতো জমাট নয়। |