অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করল কাটোয়া থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাটোয়া ও মেমারি থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে মেমারি বাসস্ট্যান্ড থেকে তাদের ধরে। পুলিশ জানায়, যে ব্যক্তিকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ, উদ্ধার করার পরে প্রতারণার পাল্টা অভিযোগে তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার কাটোয়ার জাজিগ্রামের বাসিন্দা নন্দরানি দাস কাটোয়া থানায় অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার তাঁর স্বামী বিশ্বনাথ দাসকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে অপহরণ করা হয়েছে। রাতে তাঁকে ফোন করে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা মুক্তিপণও দাবি করা হয়েছে বলে পুলিশকে জানান তিনি। এ ব্যাপারে কাটোয়ার কুসুমগ্রামের পিন্টু রায়, ওতাই শেখ, মধু শেখ, খায়েরহাটের বুদু শেখ এবং কলকাতার আলিপুরের রবি সিংহ নামে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন নন্দরানিদেবী। তিনি পুলিশকে জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেমারি বাসস্ট্যান্ডে তাঁকে টাকা নিয়ে যেতে বলেছে অপহরণকারীরা।
পুলিশ জানায়, ইতিমধ্যে এ দিন সকালে পিন্টু রায় কাটোয়া থানায় বিশ্বনাথ দাসের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করেন।
এ দিন সন্ধ্যায় কাটোয়া ও মেমারি থানার পুলিশ সাদা পোশাকে মেমারি বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছিল। ছিলেন নন্দরানিদেবীও। পুলিশ জানায়, ওতাই শেখ ও রবি সিংহ টাকা নিতে আসতেই তাঁদের ধরে ফেলা হয়। উদ্ধার করা হয় বিশ্বনাথকেও। তবে প্রতারণার মামলা থাকায় তার পরে তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বিশ্বনাথ ও অপহরণে অভিযুক্ত পাঁচ জন, সকলেই বিভিন্ন কাজকর্ম করার সুবাদে কলকাতায় থাকেন। তাঁরা পরস্পরের পরিচিত। কয়েক দিন আগে আশিস সিংহ নামে এক ব্যক্তি বিশ্বনাথের বাড়িতে আসেন। বিশ্বনাথের বাড়িতে বসেই তাঁর কাছ থেকে একটি ‘সোনার রাধাকৃষ্ণ মূর্তি’ কেনে পিন্টু। দাম ঠিক হয় দশ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে সাড়ে ছ’লক্ষ টাকা নগদ দেন পিন্টু। বাকি টাকা সোনা যাচাইয়ের পরে দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়। পুলিশ জানায়, পিন্টুর দাবি, যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায়, মূর্তিটি ব্রোঞ্জের। তখন টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য তাঁরা বিশ্বনাথকে চাপ দিতে শুরু করেন। কিন্তু বিশ্বনাথ জানান, তার পক্ষে এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। পুলিশের অনুমান, টাকা ফেরত পাওয়ার জন্যই তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ দিন ধৃতদের কাছ থেকে একটি গাড়ি, বেশ কয়েক হাজার টাকা, সাইকেল ও গয়না উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানায়, ধৃত ও অন্য অভিযুক্তেরা সকলেই পরস্পরকে চেনে। তাই তারা একটি চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলেই প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান। |