জেলারই অন্য পঞ্চায়েতে গড়ে ৩২ দিন কাজ পেয়েছেন জবকার্ড পাওয়া শ্রমিকরা। মালদহের চাঁচল-১ ব্লকের মকদমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের কাজ দিতে পেরেছেন ৫০ দিন। এ ছাড়া জল সংরক্ষণ করা থেকে সবুজায়ন প্রকল্প, সবেতেই জেলার আর ১৪৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে ছাপিয়ে গিয়েছে মকদমপুর। মহাত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান তথা ১০০ দিনের প্রকল্পে জেলার মধ্যে কোন পঞ্চায়েত ভাল কাজ করেছে তা নিয়ে সম্প্রতি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। ১৪টি বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্বের নিরিখে ২০১১-১২-র উৎকর্ষ পুরস্কার পেয়েছে কংগ্রেস পরিচালিত মকদমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। মকদমপুর উৎকর্ষ পুরস্কার পেলেও ভাল কাজ করেছে চাঁচল-১ ব্লকের অন্য পঞ্চায়েতগুলিও। ফলে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কাজের নিরিখে জেলার ১৫টি ব্লকের মধ্যে উৎকর্ষ পুরস্কার পেয়েছে চাঁচল-১ ব্লকও। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি ব্লক প্রশাসনের তরফে ওই পঞ্চায়েতকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়। চাঁচলের মহকুমাশাসক পলাশ সেনগুপ্ত বলেছেন, “১০০ দিনের প্রকল্পে চাঁচলে খুব ভাল কাজ হয়েছে। প্রচুর রাস্তাঘাট-সহ পুকুর খননের কাজ হয়েছে। তার মধ্যে মকদমপুর পঞ্চায়েত ওই প্রকল্পের কাজে জেলার মধ্যে সেরার শিরোপা পেয়েছে। এ জন্য অবশ্য প্রশাসনকেও যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হয়েছে। কীভাবে দ্রুত ভাল ভাবে কাজ করা যায় তা নিয়ে বিডিও পঞ্চায়েতগুলিকে নানাভাবে সাহায্য করেছেন।” প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মকদমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০১১-১২ আর্থিক বছরে ১০০ দিনের প্রকল্পে ওই পঞ্চায়েতের শ্রমিকরা শুধু যে বেশি কাজ পেয়েছেন তাই নয়, ৪০টি মোরামের রাস্তা তৈরি হয়েছে ওই এলাকায়। ৭০টি পুকুর খনন হয়েছে। গ্রিন মালদহ তথা সবুজায়ন প্রকল্পেও ভাল কাজের স্বাক্ষর রেখেছে মকদমপুর। কাজ না মেলায় মহকুমা এলাকা থেকে বহু শ্রমিক ভিন রাজ্যে চলে যান। ১০০ দিনের প্রকল্পে শ্রমিকরা বেশি করে কাজের সুযোগ পাওয়ায় সেই প্রবণতাও অনেকটাই ওই পঞ্চায়েতে কমেছে বলে প্রশাসনের দাবি। এ ছাড়া জাতীয় গ্রামীন কর্মসংস্থান প্রকল্পে ভারত নির্মাণ সেবা কেন্দ্র ভবন তৈরির কাজও গত বছরেই সেরে ফেলেছে ওই পঞ্চায়েত। ওই ভবন থেকে ১০০ দিনের প্রকল্পে কবে, কোথায়, কী কাজ হবে তার যাবতীয় তথ্য পাবেন শ্রমিকরা। যে ভবন তৈরির কাজ অন্যান্য পঞ্চায়েতগুলি সবে তৈরি করার কাজ শুরু করেছেন। জল সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন এলাকায় ১০ হাজার লিটারের জলের ট্যাঙ্ক বসানো হয়েছে। যাতে ছাদ থেকে পড়া বৃষ্টির জল ধরে রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। অসময়ে ওই জল ব্যবহার করতে পারবেন গ্রামবাসীরা। তাই ভাল কাজের জন্য প্রধানকে সংবর্ধনা দেওয়ার পাশাপাশি শংসাপত্রও তুলে দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। চাঁচল-১ ব্লকের বিডিও ভূপ্রভা বিশ্বাস বলেন, “ওই পঞ্চায়েত খুব ভাল কাজ করেছে। পঞ্চায়েতের ভাল কাজের নিরিখেই চাঁচল-১ ব্লকেরও স্বীকৃতি মিলেছে। অনুপ্রাণিত করতেই পঞ্চায়েত প্রধানকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। কাজের স্বীকৃতি পেয়ে খুশি প্রধান ওবাইদুল্লা আহমেদ চৌধুরীও। তিনি বলেন, “সরকারের নানা প্রকল্প রয়েছে। সেই সুযোগ থেকে বাসিন্দারা যেন বঞ্চিত না হন সেটাই খেয়াল রাখি।”
|