এগারো বছর বন্ধ থাকার পরে দুর্গাপুরের এমএএমসি কারখানা কি অবশেষে খুলতে চলেছে? সোমবার মহাকরণে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের তিন সংস্থার বৈঠকের পরে তেমনই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, নতুন করে যাত্রা শুরু করার আগে এক মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের ৩ সংস্থা অংশীদারিত্বের চুক্তি করবে। তার পর অন্য পদক্ষেপ করা হবে।
খনিজ পদার্থ উত্তোলনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরির এই কারখানাটির জন্ম ১৯৬৫ সালে। তৈরি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকারের ভারী শিল্প মন্ত্রক। একটা সময় গোটা দেশে এই সংস্থার নাম ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী কালে সংস্থাটি রুগ্ণ হয়ে পড়ে। ১৯৯২ সালে এমএএমসি-কে বিআইএফআর-এ পাঠানো হয়। তাদের সুপারিশে ২০০১ সালে পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যায় কারখানাটি। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ২০০৫ সালে ‘লিকুইডেশন’-এ যায় এমএএমসি। আদালত কারখানা নিলামের নির্দেশ দেয়। প্রথম ইউপিএ সরকারের চেষ্টায় কেন্দ্রীয় সরকারের তিন সংস্থা ভারত আর্থ মুভারস লিমিটেড (বিইএমএল), কোল ইন্ডিয়া এবং ডিভিসি একটি ‘কনসোর্টিয়াম’ গঠন করে কারখানাটি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১০ সালের জুন মাসে নিলামে সর্বাধিক ১০০ কোটি টাকা দাম দিয়ে তারা কারখানাটি কিনে নেয়।
কিন্তু তার পরেও সমস্যা মেটেনি। অংশীদারিত্ব নিয়ে তিন সংস্থার মধ্যে বিবাদের জেরে কারখানার ভবিষ্যৎ অন্ধকারেই থেকে যায়। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই নিয়ে তৎপর হন শিল্পমন্ত্রী পার্থবাবু। তারই অঙ্গ হিসেবে এ দিন মহাকরণে তিন কেন্দ্রীয় সংস্থার সর্বোচ্চ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিল্পমন্ত্রী। ছিলেন শিল্প পুনর্গঠন দফতরের সচিব সুব্রত গুপ্ত। বৈঠক শেষে পার্থবাবু বলেন, “আগামী এক মাসের মধ্যে তিন সংস্থাকে অংশীদারিত্বের চুক্তি করতে বলা হয়েছে।” ঠিক হয়েছে, নতুন নামে এমএএমসি (এমএএমসি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড) কারখানায় বিইএমএল-এর ৪৮%, কোল ইন্ডিয়া এবং ডিভিসি-র ২৬% করে ‘শেয়ার’ থাকবে। যে হেতু বন্ধের সময় কারখানার শ্রমিকদের পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাই নতুন করে লোক নিয়োগ করে কারখানা চালু করতে হবে। কারখানার নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সিআইএসএফ-কে নিয়োগ করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলবে ওই ৩ সংস্থা। |