প্রশ্নে প্রশ্নে শিক্ষকদের নাজেহাল করে তুলত মেয়েটি। এমনকী প্রশ্নের উত্তর পেতে অনায়াসেই সাইকেল ঠেঙিয়ে চলে যেত বেশ কয়েক কিলোমিটার। এভাবেই এ বছর রায়নার মাদারনগর গ্রাম থেকে ৬৬৬ পেয়ে মাধ্যমিকে নবম হয়েছে মোনালিসা খাতুন। মেড়ালের সতীশচন্দ্র পাবলিক হাইস্কুলের ছাত্রী সে।
রায়নার শ্যামসুন্দর থেকে সাড়ে পাঁচ কিমি দুরের মাদারনগর গ্রাম থেকে সারাদিনে একটিই মাত্র ট্রেকার চলে। ন্যুনতম প্রয়োজন মেটাতেও যেতে হয় কয়েক কিমি। প্রত্যন্ত গ্রামে থেকেও শুধু নিজের চেষ্টাতেই যে এগোনো যায় তা প্রমাণ করেছে মোনালিসা। বাবা শেখ মহম্মদ হোসেন চাষবাস করেন। পড়াশোনাও বেশিদূর নয়। মেয়ের রেজাল্টের পুরো কৃতিত্বটাই দিচ্ছেন স্কুলের শিক্ষকদের। মোনালিসার দাদা ইসমাইল শেখই নিজেই বোনকে ইংরেজি পড়াতেন। বললেন, “বোনের শেখার আগ্রহই ওঁকে এত দুরে নিয়ে গিয়েছে। মাদারনগর থেকে বর্ধমানের বেড় মোড়ে চলে আসত ইংরেজি পড়তে। সারাদিন নাজেহাল করত প্রশ্ন করে। ও নিশ্চয় অনেকদুর যাবে।”
স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মুখেও একই কথা। বলেন, ‘‘সব থেকে বেশি নজর কাড়ত মেয়েটির নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করার প্রবনতা। জানতামই ভাল কিছু করবে।” তবে ফল যে এত ভাল হবে তা আশা করেনি মোনালিসা নিজেও। সে বলে, “এত ভাল ফল হবে ভাবিনি। ইংরেজি আর গণিত ছাড়া বাকি সব বিষয়ই দেখাতেন শিক্ষকেরা।”
ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে গ্রামের মানুষের সেবা করাই আপাতত লক্ষ মোনালিসার। আর তাই বর্ধমানের পুর বালিকা বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান নিয়ে ভর্তিও হয়ে গিয়েছে সে। |