প্রতারণায় প্রশ্নের মুখে চিকিৎসা
ল্পনা দেবীর স্বামী নিরুদ্দেশ হয়েছেন বহু বছর আগে। কিডনির অসুখের চিকিৎসার জন্য ভিটেমাটি বিক্রি করে তিনি আশ্রয় নেন বাপের বাড়িতে। বাড়ি বিক্রির টাকা শিলিগুড়ির ইউকো ব্যাঙ্কের বর্ধমান রোড শাখায় গচ্ছিত রেখে তার সুদ দিয়ে চলছিল চিকিৎসা। কিন্তু, সেই টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়েনি। অভিযুক্তরা নিজেদের কাছে রেখে মাসে মাসে সুদের টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে জমা কেরে দিচ্ছিলেন, এই তথ্য জেনে ভেঙে পড়েছেন শিলিগুড়ির শক্তিগড়ের সুকান্তপল্লির কল্পনা বড়ুয়া। তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী বেবি সাহা ওই টাকার খোঁজে পড়ে আছেন ব্যাঙ্কের ওই শাখায়। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, তাঁর বাবা তরণী সাহার নামে ব্যাঙ্কে ৮ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা রাখা হয়েছিল। তার মধ্যে খোঁজ মিলেছে ৪৩ হাজার টাকার। বাকি টাকার কোনও খোঁজ নেই! ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের তরফে জোনাল ম্যানেজার উমেশপ্রসাদ সিংহ বলেছেন, “কল্পনা দেবীর পরিবারের লোকজন আমাদের সঙ্গে দেখা করলে সব খতিয়ে দেখা হবে। এটা বলতে পারি, ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের বিপদে-আপদে পাশে আছে ও থাকবে।” বেবিদেবী বলেন, “দিদি ভাল করে হাঁটতে পারেন না। কথাও বলতে পারেন না। তাঁকে দক্ষিণ ভারতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়েছে। তাতেও কিছু হয়নি। দুটি কিডনিই খারাপ হয়েছে। প্রতি মাসে চিকিৎসক দেখাতে ও ওষুধ কিনতে ৪ হাজার টাকা খরচ হয়। তাঁর বাড়ি বিক্রির টাকা বাবার নামে ব্যাঙ্কে জমা রাখা হয়। ব্যাঙ্কের থেকে ৫ হাজার ২০০ টাকা পাওয়া যেত। তা দিয়েই তাঁর সংসার চলত। এবারে কী হবে বুঝতে পারছি না। আমার স্বামী গাড়ি চালায়। আমরা তাঁর জন্য কতটা কী করতে পারব।” চোখের জল মুছতে মুছতে অস্পষ্ট উচ্চারণে কল্পনাদেবী বলেন, “ওই টাকা ছাড়া আমার কিছু নেই। একমাত্র ছেলে সে ছোট। টাকা যাতে পাই সে ব্যবস্থা করে দিন।” সাত মাসে আগে কল্পনা দেবীর বাবা তরণীবাবুর নামে ওই ব্যাঙ্কে মাসিক সুদ প্রকল্পে ৫ লক্ষ টাকা রাখা হয়। অভিযুক্ত চন্দন মণ্ডল তাঁদের ওই প্রকল্পে টাকা রাখার সমস্ত কাজ করে দেন। সার্টিফিকেটও তরণীবাবুকে দেওয়া হয়। পরে আরও ৩ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা ওই চন্দনের মাধ্যমেই ব্যাঙ্কে ‘ফিক্সড ডিপোজিট’ করে রাখা হয়। তার রসিদ ওই চতুর্থ শ্রেণির কর্মী বেবী দেবীর হাতে তুলে দেন। বেবীদেবী বলেন, “চন্দনবাবু দিদির অসুস্থতার কথা জানতেন। তাঁকে দেখেও গিয়েছেন। এভাবে তিনি আমাদের টাকা লোপাটের চক্রান্ত করবেন ভাবতে পারছি না।” তরণীবাবু জানান, গত কয়েক মাস ধরে তিনি ব্যাঙ্কে টাকার সুদ নিতে যেতেন। প্রতিবারই তাঁর সঙ্গে চন্দনবাবুর দেখা হয়েছে। প্রথম ছয় মাসে ওই কর্মী ব্যাঙ্কের স্লিপে সমস্ত কিছু লিখে দিতেন। সেই স্লিপ দিয়েই তিনি টাকা তুলেছেন। এপ্রিল মাসের টাকা তুলতে গেলে চন্দনবাবু স্লিপ লিখে নিজেই টাকা তুলে দেন। তিনি জানান, ১২ লক্ষ টাকায় বাড়ি বিক্রি করেন তাঁর মেয়ে কল্পনা দেবী। সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা খরচ করে ভেলোরে গিয়ে তিনি কিডনির চিকিৎসা করান। তার পরেও তিনি সুস্থ হননি। তিনি বলেন, “মেয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটে, ঠিকমতো কথা বলতে পারে না।” কল্পনা দেবীর ছেলে বিশ্বজিৎ বলে, “আমি বেকার। ওই টাকা ফিরে না পেলে মায়ের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যাবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.