জাতীয় স্তরে উঠে এলেন মোদী, সাক্ষী হলেন না আডবাণী-সুষমা
ভার সবটুকু আলো কেড়ে নিলেন তিনি। উপস্থিত আরও দুই মুখ্যমন্ত্রী যখন নিজের রাজ্যে সুশাসন আর সাফল্যের খতিয়ান দিতে ব্যস্ত, তখন তাঁর বক্তব্যের গোটাটা জুড়েই শুধু দিল্লির কথা। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হলেও তিনি যে এ বার জাতীয় রাজনীতিতে উঠে আসছেন, সেটা আজ ভালই বুঝিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদী। আরও সোজাসুজি বললে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিই যে তাঁর পাখির চোখ, সেটাও এ দিন ঠারেঠোরে স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। বিজেপি-র দু’দিনের কর্মসমিতির বৈঠকের পরে আজ প্রকাশ্য জনসভায় নাম ঘোষণা থেকে শুরু করে তাঁকে ঘিরে উপস্থিত দলীয় সমর্থকদের উন্মাদনা সব কিছুর মধ্য দিয়েই দলে জাতীয় স্তরের নেতা হিসেবে উঠে এলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী।
মুম্বইয়ের সভায় মোদী-গডকড়ী। ছবি: এ পি
এ দিনের সভায় মোদী প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে রীতিমতো তুলোধোনা করেছেন প্রসঙ্গ ধরে ধরে। ফাঁপা প্রতিশ্রুতির অভিযোগ তুলে বলেছেন, “কেন্দ্রে এখন চলছে নির্মল বাবার সরকার।” জোটধর্মের বাধ্যবাধকতা নিয়ে মনমোহনের বক্তব্য, এনসিটিসি, সাম্প্রদায়িক হিংসা বিল, টাকার দাম পড়ে যাওয়ার মতো বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে একের পর এক আক্রমণ শানিয়েছেন মোদী। করেছেন তীব্র কটাক্ষ। যে কাজটা এত দিন করে এসেছেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। তিনি ও সুষমা স্বরাজ আজকের এই সভায় ছিলেন না। দু’জনেই ‘কাজ’ থাকার কথা জানিয়ে ফিরে যান সভার আগেই। গোটা কর্মসমিতির বৈঠক ও তার পরে এই সভায় দলের ঐক্যবদ্ধ চেহারাটা তুলে ধরতেই ব্যস্ত ছিলেন বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব। সেখানে খোদ আডবাণী ও সঙ্গে সুষমার অনুপস্থিতি দেখিয়ে দিল, মুখে ঐক্যের কথা বললেও অনৈক্যের ছবিটা কিছুতেই মুছে ফেলতে পারছে না বিজেপি।
আডবাণীদের অনুপস্থিতি যদি হয় ছন্দপতন, তবে মুদ্রার অন্য পিঠও রয়েছে। ‘ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের উষ্ণতা’। যা আজ দেখা গেল মোদী ও নিতিন গডকড়ীর মধ্যে। মোদীকে সামনে তুলে ধরার ক্ষেত্রে আয়োজন ও আগ্রহে আজ এতটুকু খামতি দেখায়নি গডকড়ীর দল। দলের সভাপতির পদে সঙ্ঘের আশীর্বাদধন্য এই নেতার মেয়াদ বাড়ানোর পথ গত কালই সবে পরিষ্কার হয়েছে। তার পরে আজ যে ভাবে পরস্পরকে আলিঙ্গন করে সম্পর্কের উষ্ণতা দেখিয়েছেন মোদী ও গডকড়ী, তা ছিল লক্ষ করার মতো। বৈঠকের সময় ও পরে সভামঞ্চে তাঁদের ঘনিষ্ঠ আলোচনা, হাতে হাত ধরে ‘ঐক্যের ঘোষণা’ থেকেই স্পষ্ট, প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে এ বার মোদীকে এগিয়ে রাখছেন গডকড়ীরা। যে কারণে আজকের সভায় মোদীর নাম ঘোষণায় যে উচ্ছ্বাসটা দেখা গেল, আর দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর (ছত্তীসগঢ়ের রামন সিংহ ও মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিংহ চৌহান) ক্ষেত্রে তা ছিল না। “দেখো দেখো কৌন আয়া, গুজরাতকা শের আয়া,” ঘোষণা হতেই, গোটা সভা উঠে দাঁড়িয়ে যে ভাবে হর্ষধ্বনি করেছে তা দেখার মতো। মোদীকে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে আনার সাংগঠনিক প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বছরের মধ্যে মোদীকে সংসদীয় বোর্ডে সামিল করা যায় কি না, তার পথনির্দেশিকা নিয়েও ঘরোয়া স্তরে আলোচনা হয়েছে। রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “এই বিষয়টি সভাপতির এক্তিয়ারভুক্ত। তিনিই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
তবে বিজেপি-তে মোদীর এই ‘উত্থান’ পর্বেও দলে প্রশ্ন উঠছে আডবাণীকে ঘিরে। কর্মসমিতির বৈঠকের পরের সভায় আডবাণী নেই, এমন কখনও হয়নি। গত লোকসভা ভোটেও দলের প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী ছিলেন তিনি। আজ কী এমন হল, তাঁকে চলে যেতে হচ্ছে? প্রশ্নটা তুললেন দলেরই এক নেতা। আডবাণী থাকবেন না আগেই জানিয়েছিলেন। তাঁর মেয়ে প্রতিভাও জানালেন, “আজ আমাদের দিল্লিতে ফিরে যাওয়ারই কর্মসূচি ছিল।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.