বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভোরের সূর্যের বুকে বিন্দু হয়ে
হাঁটবে সন্ধ্যাতারা

এক অন্য ‘গ্রহণ’! সূর্য ঢেকে যাবে না, বরং তার গায়ে ফুটে উঠবে একটি চলমান কালো বিন্দু।
সঙ্গে বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: আগামী ৬ জুন এই মহাজাগতিক ঘটনা না-দেখলে জীবনভর আফসোস করতে হবে। কারণ, এর পুনরাবৃত্তি হবে ২১১৭ সালে, অর্থাৎ ১০৫ বছর পরে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিভাষায় ঘটনাটির নাম: সূর্যের উপর শুক্রের চলন (ট্রানজিট অফ ভেনাস ওভার দ্য সান)। বিজ্ঞানীরা হিসেব কষে দেখেছেন, প্রথমে ৮ বছর, তার পরে সাড়ে ১২১ বছর, তার পরে ফের ৮ বছর, তার পরে সাড়ে ১০৫ বছর, তার পরে ফের সাড়ে ১২১ বছর এই পর্যায়ক্রমে সূর্যের উপরে ‘হাঁটে’ শুক্র গ্রহ (চলতি কথায় যা শুকতারা বা সন্ধ্যাতারা)।
আগামী ৬ জুন ভোর থেকে সেটাই দেখা যাবে। কালো বিন্দুর চেহারায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ধরে সূর্যের বুকে হাঁটতে হাঁটতে মিলিয়ে যাবে শুক্র। কেন্দ্রীয় পজিশনাল অ্যাস্ট্রনমি সেন্টারের অধিকর্তা সঞ্জীব সেন জানাচ্ছেন, এমনটা ফের ঘটবে ২১১৭-র ১১ ডিসেম্বর।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সৌরজগতে শুধু শুক্র আর বুধের ক্ষেত্রে এ ধরনের চলন দেখা যায়। কারণ, দু’টোর কক্ষপথই পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। সূর্যের উপরে বুধের চলন প্রথম লক্ষ্য করেন ফরাসি বিজ্ঞানী পিয়ের জ্যাসেন্ডি, ১৬৩১-এর নভেম্বরে। আট বছর বাদে, ১৬৩৯-এ প্রথম শুক্রের চলন দেখেছিলেন দুই ব্রিটিশ জেরেমিয়া হরক ও উইলিয়াম ক্র্যাবট্রি।

ফের দেখা যাবে শতবর্ষ পরে

২০১২-র ৬ জুন


ভোর ৪টে ৫২ মিনিট থেকে সকাল ১০টা ২১ মিনিট পর্যন্ত (কলকাতায়)


২০০৪-এর ৪ জুন


২১১৭-র ১১ ডিসেম্বর


১৪ নম্বর শেডের ওয়েল্ডিং গ্লাস বা অ্যালুমিনাইজড মাইলার ফিল্টার কিংবা ব্ল্যাক পলিমার লেন্সের মাধ্যমে দিয়ে। খালি চোখে কখনওই নয়।

কেন ঘটে এই ঘটনা?
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা: সূর্যগ্রহণের পিছনে যে কারণ, এর পিছনেও তা-ই। সূর্যগ্রহণের সময়ে পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে চাঁদ চলে আসে। পৃথিবী-চাঁদ-সূর্য একই সরলরেখায় অবস্থান করায় চাঁদের ছায়া সূর্যের গায়ে পড়ে। ৬ জুন কলকাতাএকই ভাবে পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে চলে আসবে শুক্র, সূর্যের উপরে যার চলমান ছায়া পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান হবে।
তা হলে তখন সূর্যগ্রহণ হবে না কেন?
সঞ্জীববাবুর বক্তব্য, পৃথিবীর সঙ্গে চাঁদ ও সূর্যের পারস্পরিক একটি বিশেষ অবস্থানের কারণে চাঁদের ছায়া সূর্যকে ঢেকে দিতে সক্ষম হয়।
কিন্তু শুক্রের ক্ষেত্রে ‘অবস্থান’টি অন্য রকম। তাই শুক্রের ছায়া সূর্যকে ঢাকতে পারে না, বরং কালো বিন্দুর মতো মনে হয়। ফলে এটাকে সূর্যগ্রহণ বলা যায় না।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ৬ জুন ভারতীয় সময় রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ প্রথম সূর্যের গায়ে দাগ ফেলবে শুক্র। কিন্তু তখন ভারতীয় ভূখণ্ডে কোথাও সূর্যোদয়ই হবে না। বস্তুত প্রক্রিয়াটি শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক পরে তা দেখতে পাবেন এ দেশের মানুষ। এবং চার মহানগরীর মধ্যে সর্বাগ্রে পাবেন কলকাতাবাসী। কারণ, কলকাতায় সূর্য উঠবে সব চেয়ে আগে, ভোর ৪টে ৫২ মিনিটে। আর সবার পরে দেখবে মুম্বই, ৬টা ৩ মিনিটে সূর্যোদয়ের পর থেকে। দিল্লি ও চেন্নাইয়ে যথাক্রমে ৫টা ২৪ মিনিট ও ৫টা ৪৩ মিনিট থেকে। পূর্ব ভারতে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ও পশ্চিম ভারতে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে মহাজাগতিক দৃশ্যটি দেখা যাবে।
এবং দেখা যাবে দূরবিন বা টেলিস্কোপ ছাড়াই।
এ কথা জানিয়েও বিজ্ঞানীদের হুঁশিয়ারি: খালি চোখে এ দৃশ্য দেখবেন না। সরাসরি সূর্যের দিকে তাকালে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
তাঁদের পরামর্শ: ১৪ নম্বর শেডের ওয়েল্ডিং গ্লাস কিংবা অ্যালুমিনাইজড মাইলার ফিল্টার দিয়ে দেখুন সূর্যের বুকে শুক্রের চলন।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.