তনভীর মোকাম্মেল-এর নতুন ছবি
১৯৭১
বাংলাদেশে ২৫ মার্চের সেই নারকীয় গণহত্যাকে অভিহিত করা হয়েছিল ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে। অতঃপর বাংলাদেশ সমস্ত শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। ওখানকার নৌসেনাদের ট্রেনিং হয়েছিল মুর্শিদাবাদের গঙ্গায়, অত্যন্ত গোপনে। ট্রেনিংপ্রাপ্ত সেনারা ‘লিমপেট মাইন’ বুকে বেঁধে অনেকটা ডুবসাঁতার দিয়ে শত্রুপক্ষের জাহাজে লাগিয়ে এসেছে সেই মাইন। জীবন-মৃত্যুর মাঝে সময় মাত্র আধঘন্টা। চট্টগ্রামের কর্ণফুলি আর খুলনার কাছে পশুর নদীবন্দরে এ ভাবেই ধ্বংস হয়েছিল আক্রমণকারী জাহাজ। বায়ুসেনাদের ট্রেনিং হয়েছিল ডিমাপুরের একটি পরিত্যক্ত এয়ারবেস-এ। সে সময় ভারত দুটি প্লেন ও একটি হেলিকপ্টার দিয়েছিল বাংলাদেশকে। একটি প্লেন ছিল জয়পুরের মহারাজের, তাতে বোমা ফেলার ব্যবস্থা করে নিতে হয়েছিল। সাত বছরের গবেষণায় মুক্তিযুদ্ধের নানা তথ্য খুঁজে পেয়েছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট পরিচালক তনভীর মোকাম্মেল। এ সমস্ত নিয়েই তনভীরের নতুন ছবি ‘১৯৭১’। পৌনে চার ঘন্টার এই ছবির জন্য তিনি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ১৭৬ জনের।
তার মধ্যে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া মানুষ থেকে মুক্তিযোদ্ধা, অনেকেই রয়েছেন। সেক্টর কমান্ডার মেজর রফিক, কামরুল হাসান, জিয়া-র মতো নেতাদের সঙ্গেই দেখা যাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জেনারেল জেকব এবং সিদ্ধার্থশংকর রায়ের সাক্ষাৎকার। তনভীর ক্যামেরা নিয়ে ছুটেছেন নাগাল্যান্ডের এয়ারবেস থেকে গাইঘাটা-বনগাঁয় শরণার্থী শিবির যেখানে পত্তন হয়েছিল সে পর্যন্ত। খুঁজে পেয়েছেন তেমন মানুষজন, যাঁদের স্মৃতিতে এখনও রয়ে গিয়েছে সে দিনের কথা। এ সব স্মৃতিও বড় তাড়াতাড়ি হারিয়ে যাচ্ছে, বলছিলেন তনভীর, আড়াইশো ঘন্টার শু্যটিং-এর এতটুকুও তাই নষ্ট করিনি। ভবিষ্যৎ গবেষণার জন্য যাতে কেউ চাইলেই পেতে পারেন তথ্য, সেই লক্ষ্যে এগুলি এখন সংরক্ষিত। ক্যামেরায় রয়েছেন আনোয়ার হুসেন এবং সম্পাদনা করেছেন কলকাতার মহাদেব শী। আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাবের উদ্যোগে ‘১৯৭১’ এ দেশে প্রথম প্রদর্শিত হচ্ছে ২৬ মে বিকেল পাঁচটায়, গোর্কি সদনে। পরে দর্শকদের সামনে হাজির থাকবেন পরিচালক।

শতবর্ষে
শতবর্ষ পূর্ণ হল বিশিষ্ট সাংবাদিক সুকমলকান্তি ঘোষের। জন্ম ৫ মে ১৯১২। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর ১৯৩৫-এ অমৃতবাজার পত্রিকায় শিক্ষানবিশ সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু। বছর দু’য়েক পরে যুগান্তর পত্রিকার সহকারী-ম্যানেজার পদে যোগ দেন। ১৯৬৩-তে ওই পত্রিকার সম্পাদক হন, আমৃত্যু আসীন ছিলেন সেই পদে। সাংবাদিক হিসেবে সুকমলকান্তি সারা পৃথিবী ঘুরেছেন। তিনি কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়নের ভারতীয় বিভাগের সম্পাদক ও পত্রিকা সিন্ডিকেটের প্রধান ছিলেন। অমায়িক ও বন্ধুবৎসল এই মানুষটির নাম কলকাতার সাংস্কৃতিক জগতে বিশেষ পরিচিত ছিল। উদয়শংকর কালচারাল ইনস্টিটিউটের প্রথম চেয়ারপার্সন হন তিনি। অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস, সি এল টি প্রভৃতি বহু সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স-এর সভাপতিও হন সুকমলকান্তি। ১৯৭৮-এর ১৯ এপ্রিল প্রয়াত হন তিনি। গত ১৮ মে রোটারি সদনে পালিত হল তাঁর শতবর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান। সঙ্গের ছবিটি পরিমল গোস্বামীর তোলা।

স্মৃতির সরণি
স্মৃতির সরণি থেকে এই ছবিটির মতো আরও বেশ কয়েকটি দুর্লভ ছবি নিয়ে গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় ১-৩ জুন হতে চলেছে সৌমিত্রময় এক প্রদর্শনী। থিয়েটার থেকে সিনেমা থেকে নিছক অন্তরঙ্গ মুহূর্তের নানা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ফ্রেমবন্দি হয়ে থাকবেন ‘মুখোমুখি’ আয়োজিত সেই প্রদর্শনীতে। নাট্যদলটির ১৬ বছর উপলক্ষে অ্যাকাডেমি, মধুসূদন মঞ্চ, রবীন্দ্রসদন আর গিরিশ মঞ্চে পাশাপাশি ৩০ মে থেকে ৫ জুন চলবে এক ডজন নাটকের উৎসব। থাকছে সৌমিত্র-অভিনীত মিনার্ভা রেপার্টরির ‘রাজা লিয়ার’ এবং সৌমিত্র-নির্দেশিত সংস্তব-নিভা আর্টসের ‘ছাড়িগঙ্গা’ও। সঙ্গের ছবিতে একটি আড্ডায় ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়-সহ অন্যরা। পাশাপাশি শার্লক হোমস-এরও ছবির উৎসব নন্দনে, ২৪-২৫ মে। উদ্যোগে সিনে সেন্ট্রাল ও এনলাইটেন ফিল্ম সোসাইটি।

অবতার
উপন্যাস থেকে চিত্রনাট্য অনেক হয়েছে। কিন্তু চিত্রনাট্য থেকে উপন্যাস? না, তেমন বড় একটা ঘটেনি। সেই বিরল ঘটনাটাই ঘটল সত্যজিৎ রায়ের ৯২তম জন্মদিন উপলক্ষে। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হল তাঁর চিত্রনাট্য থেকে শঙ্করলাল ভট্টাচার্য লিখিত উপন্যাস অবতার (প্রতিভাস, ১৫০.০০)। সত্যজিতের না-হওয়া ছবির তালিকায় এটি বোধহয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ‘দ্য এলিয়েন’ নামে ইংরেজিতে এই চিত্রনাট্যটি তৈরি করেছিলেন সত্যজিৎ। কিন্তু সে ছবি আর হয়ে ওঠেনি প্রযোজকের অভাবে। অথচ তার মধ্যে ছিল এক আশ্চর্য কল্পবিজ্ঞান। নির্জন গাঁ মঙ্গলপুরের পদ্মঝিলে একদিন নামল এক ব্যোমযান, তার সওয়ার অলীক মানুষ অবতার। এ ভাবেই চিত্রনাট্যে গল্প এগিয়ে চলেছিল। সন্দীপ রায়ের অনুরোধে চার বছরের বেশি সময় ধরে ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় ‘দ্য এলিয়েন’-এর অনুবাদ করেছিলেন শঙ্করলাল, এ বার তা-ই প্রকাশিত হল সুদীপ্ত দত্তের প্রচ্ছদ ও অলংকরণ-সহ গ্রন্থাকারে।

আমার মা
‘মা’। শুধু মনুষ্যকুলেরই নয়, সমগ্র জীবজগতেই মা হল এক পরম নির্ভয় নিরাপদ আশ্রয়। অভিযান পাবলিশার্স-এর উদ্যোগে সেই মাকে নিয়ে লেখা চিঠি, কবিতা, গল্প, উপন্যাস ও ছবির সংকলন আমার মা (সম্পাদনা মারুফ হোসেন, ১৫০.০০) সম্প্রতি প্রকাশিত হল ইলিয়ট রোডের ‘অল বেঙ্গল উইমেন’স ইউনিয়ন’ পরিচালিত বৃদ্ধাবাসের ‘মা’দের হাত দিয়ে। মা প্রভাবতীদেবীকে লেখা সুভাষচন্দ্র বসুর চিঠি দিয়ে গ্রন্থের আরম্ভ। বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, অতুলপ্রসাদ সেন, শামসুর রহমান প্রমুখের মা বিষয়ক রচনা ছাড়াও যামিনী রায়, বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়, মকবুল ফিদা হুসেনের আঁকা ছবিও। গ্রন্থপ্রকাশ ছাড়াও সত্তর, আশি এমনকী একশো পেরোনো মায়েদের কণ্ঠের আবৃত্তি, গান ছিল অনুষ্ঠানের উপরি পাওনা।

ক্ষণজন্মা
‘নতুন মিউজিক বটুকদা তৈরি করে ফেললেন। নিজে নিলেন যত রাজ্যের ভাঙা পেয়ালা ধাতু আর কাঠের টুকরো টাকরা, রাস্তা থেকে কেনা ফটফটি, পুঁইবাঁশি এইসব। চতুর্থ শ্রেণীর বাদকবৃন্দ দিয়ে সেদিন প্রথম শ্রেণীর সুরসৃষ্টি করলেন বটুকদা।’ রঘুনাথ গোস্বামীর স্মৃতি থেকে জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্রের প্রতিভার ব্যাপ্তিটা চেনা যায়। প্রণতি দে (বিষ্ণু দে-র স্ত্রী) প্রশ্ন তুলেছেন ‘এরকম বিশুদ্ধ আর্টিস্ট যাকে বলে, কষ্টসহিষ্ণু দিলদরিয়া লোক আমরা কি আর পাব? এরকম লোক ক্ষণজন্মা, কিন্তু আমরা তাঁদের চিনতে শিখিনি, এবং বারবারই মূল্য দিতে ভুল করি!’ শতবর্ষে জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র-কে ‘বিশেষ আলোচ্য’ করে তুলেছে এ বারের পরিচয় (সম্পা: বিশ্ববন্ধু ভট্টাচার্য), পুরনো সংখ্যা থেকে ‘বটুকদা’কে নিয়ে এ ধরনের লেখাগুলি পুনর্মুদ্রিত হয়েছে, অন্য লেখকদের মধ্যে আছেন বিজন ভট্টাচার্য রথীন মৈত্র মণীন্দ্র রায় সাধন দাশগুপ্ত প্রীতি বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যেশ্বর মিত্র প্রমুখ। সঙ্গে জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র-র রচনা আর চিঠিপত্র।

উদ্ভাবন
এ শহরে এক সময় পাখিদের জল খাবার জন্য ব্যবস্থা ছিল। এখন পশু-পাখি দূরস্থান, পথচারীদের পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। তেষ্টা পেলে জল কিনে খেতে হবে। আশার কথা, তীব্র এই কাঠফাটা গরমে এ শহরে জলসত্র নিয়ে হাজির হয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন বা শ্রীগুরু সঙ্ঘের মতো প্রতিষ্ঠান। সে দিন বাঘাযতীন মোড়ে ঠান্ডা জলের সঙ্গে পাওয়া গেল লাল বাতাসা। এ দিকে জানবাজার থেকে গড়িয়া প্রায় সর্বত্রই অটোর ডান দিকে একখণ্ড সানবোর্ডের টুকরো লাগানো দেখা যাচ্ছে। হঠাৎ লাল-হলুদ বোর্ডগুলি দেখলে বিজ্ঞাপন বলেই ভ্রম হবে। আসলে নৌকোর পালের আদলে লাগানো বোর্ডগুলি কাজ করছে ‘উইন্ড ডিভাইডার’ হিসেবে। অটোচালকের আসনে হাওয়া প্রায় ঢোকেই না, তাই ঘুরপথে এই ব্যবস্থা। হোক গরম, তবু হাওয়া তো! ছবি: গোপী দে সরকার

প্রাণের খেলা
আহা, তোমার সঙ্গে প্রাণের খেলা... এ ভাবেই তো রবীন্দ্রগান নিয়ে মাতোয়ারা শিল্পীজনেরা। যেমন লালন ও রবীন্দ্রনাথের গানের ভাবসম্মিলন নিয়ে সিডি বেরিয়েছে ‘প্রাণের আলাপ’ (সারেগামা), এতে রবীন্দ্রগান গেয়েছেন প্রমিতা মল্লিক, লালনগান তপন রায়, ভাষ্যপাঠে চলচ্চিত্রকার গৌতম ঘোষ, আর বিন্যাসে পবিত্র সরকার। আবার আশিস ভট্টাচার্যের সিডিটির নাম ‘প্রাণের প্রাণ জাগিছে’। আশিসবাবুর গাওয়া রবীন্দ্রগান কেন প্রিয় তা তাঁকে জানিয়েছেন আলপনা রায়: ‘বিশুদ্ধতার জন্যই শুধু নয়, গানের সঙ্গে আপনার ভাবনা জড়িয়ে থাকে...।’ স্বপন মজুমদার তাঁর গান শোনেন ‘ব্রহ্মসংগীতের তৃষ্ণা মেটাবার জন্য’, আর সাক্ষাৎকারে অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তর মন্তব্য ‘শৈলজাদা’র এই মুহূর্তে সম্ভবত একমাত্র উত্তরসূরি তিনি আশিস ভট্টাচার্য।’ অন্যদিকে গান্ধার-এর প্রযোজনায় ২৬ মে কলাকুঞ্জে সন্ধে সাড়ে ছ’টায় রবীন্দ্রনাথের গান গাইবেন সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রদর্শনী
উপরের ছবিটিতে উত্তরপ্রদেশের মথুরার বিধবারা, ’৭৪ সালে তোলা। বিখ্যাত দক্ষিণী চিত্র-সাংবাদিক প্রয়াত টি এস সত্যন-এর এ-ছবিটি সহ আরও বেশ কিছু ছবির প্রদর্শনী চলছে সিগাল আর্টস অ্যান্ড মিডিয়া রিসোর্স সেন্টারে, তসবির ও সিগাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে। চলবে ২৮ মে অবধি, ১১-৮টা।

আরও দূরে
চিত্রী, কবি, ঔপন্যাসিক, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী আর এক জন প্রকাশক পাঁচ জনে মিলে সূচনা ‘প্রতিক্ষণ’-এর। প্রথম বই অবশ্য প্রকাশিত হয় চার বছর পরে, জানুয়ারি ১৯৮৪-তে, পূর্ণেন্দু পত্রী চিত্রিত জীবনানন্দ দাশের রূপসী বাংলা। তার পরে এই তিরিশ ছুঁইছুঁই বয়স পর্যন্ত বরাবরই অন্য পথে হেঁটেছে ‘প্রতিক্ষণ’। বইয়ের বিষয় কিংবা প্রকাশ দুয়েই এ প্রকাশনা জরা হঠকে। ঠিক যেমন তার ঠিকানায়, বইপাড়া থেকে অনেক দূরে, ধর্মতলায় স্বতন্ত্র অবস্থানটি এত কাল বজায় রেখেছিল প্রতিক্ষণ। এখন তা চলে গেল আনন্দ পালিত রোডে। রয়ে গেল ধর্মতলার সেই বাড়িতে পূর্ণেন্দু পত্রী, অরুণ সেন-সহ নানা বিশিষ্টের একান্ত আড্ডাগুলির স্মৃতি। অবশ্য নতুন দফতর এবং বিপণিতে গিয়েই এক মাস ধরে প্রকাশনাটি দিচ্ছে এক বিশেষ সুযোগ, রবীন্দ্র-চিত্রাবলি-সহ সব বইতে ৪০ শতাংশ ছাড়। উপলক্ষ? অবশ্যই রবীন্দ্রজন্মসার্ধশতবর্ষ।

নতুন ভাবনা
একুশ বছর বয়সেই ফিল্ম সোসাইটির সদস্য, তাতে আন্তর্জাতিক ‘আর্ট’ সিনেমা থেকে শুরু করে রোববার বা ছুটির দিনে মর্নিং শো-তে ডাকসাইটে হলিউড। পাগলের মতো সিনেমা দেখতে ভালবাসতেন যে নবীন যুবাটি, তাঁর শুধু বয়সই বেড়েছে, মনটি এখনও নবীন পাতার মতো, সমস্ত শিল্পরস শুষে নেয়। বঙ্গরঙ্গমঞ্চের বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব হিসেবেই প্রিয় তিনি বাঙালির কাছে, কিন্তু কোথাও যেন সিনেমার সঙ্গে লুকনো গাঁটছড়া। আপাতত মজে আছেন পশ্চিমি সিনেমায়, সেখান থেকেই নতুন নাটকের পরিকল্পনা ঘাই মারছে মাথায়। বিভাস চক্রবর্তী। দাপুটে এই অভিনেতা বরাবরই নাট্যপরিচালনাতেই বেশি আসক্ত। সেই ‘রাজরক্ত’ ‘শোয়াইক গেল যুদ্ধে’-র রাজনীতি, ‘মাধব মালঞ্চী কইন্যা’র লোকায়ত, বা হালের ‘হ্যামলেট’-এর অভিজাত... প্রায় সব ধরনের আঙ্গিক নিয়েই কাজ করা হয়ে গিয়েছে তাঁর। এ বারে মন ক্রাইম থ্রিলার-কমেডির মিশেলে চল্লিশ দশকে প্যাট্রিক হ্যামিলটনের নাটক থেকে দু’টি ছবি, হিচককের ‘রোপ’, জর্জ কুকরের ‘গ্যাসলাইট’, আর তৃতীয়টি জোসেফ কেসারলিংয়ের নাটক থেকে ফ্রাঙ্ক কাপরার ‘আর্সেনিক অ্যান্ড ওল্ড লেস’। ‘ব্ল্যাক হিউমারের ভিতর দিয়ে এই সব ছবির যে থিম্ মাইন্ডলেস কিলিং সেটাকে যদি ধরতে পারি, তবে চারপাশের যে ভায়োলেন্সের ভিতরে আমাদের বসবাস তার সঙ্গে কানেক্ট করাতে পারব।’ বললেন বিভাস। ইতিমধ্যে আবার তাঁকে নিয়ে ছবি করেছেন ল্যাডলী মুখোপাধ্যায়: ‘অন্য এক থিয়েটার’, বিধাননগরে অন্য থিয়েটার-এর নতুন ভবনে (সি কে ৪৩) পাওয়া যাচ্ছে ছবির ডিভিডি।

দ্বিশতবার্ষিকী
রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিরোজিওর এই ছাত্রকে একদা হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করতে হয়েছিল ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠীরই ক’জন সতীর্থের উচ্ছৃঙ্খল আচরণে। কৃষ্ণমোহনের অনুপস্থিতিতে ওই বন্ধুরা তাঁর বাড়ির ছাদ থেকে পাশের এক ব্রাহ্মণের বাড়িতে উচ্ছিষ্ট গোমাংস ছুড়ে ফেলে। ক্ষুব্ধ প্রতিবেশীদের চাপে কৃষ্ণমোহন সমাজচ্যুত হয়ে গৃহত্যাগ করতে বাধ্য হন। ১৮১৩-র ২৪ মে, শ্যামপুকুরে মামাবাড়িতে তাঁর জন্ম। বাবা জীবনকৃষ্ণ, মা শ্রীমতী দেবী। ডেভিড হেয়ারের ‘পটলডাঙার স্কুল’ থেকে হিন্দু কলেজে এসে ডিরোজিও ও ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠীর সংস্পর্শে আসেন। পড়া শেষে হেয়ারের স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করলেও গোমাংস-কাণ্ডের পর সে চাকরি যায়। এরপর আলেকজান্ডার ডাফের সংস্পর্শে এসে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হন এবং ‘চার্চ মিশনারি সোসাইটি’-র স্কুলে অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। পরে শিবপুরের বিশপস কলেজ থেকে খ্রিস্ট-ধর্মতত্ত্বের পাঠ নিয়ে হেদুয়ার গির্জার পাদ্রি নিযুক্ত হলেন। খ্রিস্টান হওয়ায় কৃষ্ণমোহনের স্ত্রী বিন্ধ্যবাসিনীকে তাঁর পিতা নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান। কিন্তু বিন্ধ্যবাসিনীর ইচ্ছায় আইনের সাহায্য নিয়ে কৃষ্ণমোহন স্ত্রীকে উদ্ধার করেন। পরে তিনি বিশপস কলেজে পাশ্চাত্যবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। তিনি প্রায় দশটি ভাষা জানতেন। ‘বিদ্যাকল্পদ্রুম’ নামে ১৩ খণ্ডের কোষগ্রন্থ ছাড়াও লিখেছেন নানা গ্রন্থ ও অসংখ্য প্রবন্ধ। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন, ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন, ইন্ডিয়ান লিগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রয়াত হন ১৮৮৫-র ১১ মে। বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে এখনও রয়েছে তাঁর সমাধি। এ বছর তাঁর জন্মের দ্বিশতবর্ষের সূচনা। ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ২৪ মে বিকেল চারটায় কলেজ স্কোয়ার থেকে ভারত সভা ভবন পর্যন্ত এক পদযাত্রা ও সভা দিয়ে সূচনা হবে উদযাপন অনুষ্ঠান।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.