অরবিন্দ রোড
দুর্ভোগ-সরণি
মিশনারেট হওয়ার পরে হাওড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলির ছবি বদলেছে। কিন্তু বড় রাস্তার সঙ্গে সংযোগকারী রাস্তাগুলির অবস্থা একই থেকে গিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীদের। যেমন, সালকিয়ার অরবিন্দ রোড।
জিটি রোডের চৌরাস্তা মোড় থেকে শুরু হয়ে অরবিন্দ রোড বাঁধাঘাট মোড়ে হাওড়া রোডে মিশেছে। রাস্তার দু’পাশে রয়েছে অসংখ্য দোকান, শপিং মল, সিনেমা হল, ব্যাঙ্ক ও বাজার। প্রতি দিন অসংখ্য মানুষ রাস্তাটি ব্যবহার করেন। রাস্তার দু’পাশে সাড়ে তিন ফুট ফুটপাথ রয়েছে। কিন্তু বাসিন্দা ও পথচারীদের অভিযোগ, ফুটপাথ জুড়ে রয়েছে জামাকাপড়, বাসনপত্র, খাবার, লোহার যন্ত্রপাতির অস্থায়ী দোকান। স্থায়ী ব্যবসায়ীদের একাংশ আবার ফুটপাথের উপরেই অস্থায়ী গুমটি বানিয়েছেন। বাধ্য হয়ে রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। স্থানীয় সুমন দাস বলেন, “জিটি রোডের সালকিয়া চৌরাস্তা যানজটের জন্য কুখ্যাত ছিল। কমিশনারেট হওয়ার পরে ওখানে যানজট হয় না। কিন্তু অরবিন্দ রোডের ছবিটা বদলায়নি।”
বাসিন্দারা জানান, কয়েক দিন আগেই পুলিশ ফুটপাথের ব্যবসায়ীদের রাস্তা ছেড়ে উঠে যাওয়ার নির্দেশ জারি করে। পরে পুলিশই তাঁদের তুলে দেয়। কিন্তু রাস্তার পাশের স্থায়ী দোকানদারদের অধিকাংশই এখনও মাল রাখছেন। পাশাপাশি, রাস্তার উপরেই মোটরসাইকেল, রিকশা, সাইকেল পার্ক করা থাকে। ফলে পথচারীদের ফুটপাথ ব্যবহারে অসুবিধা হচ্ছে।
ফুটপাথ দখল করাকে সমর্থন করছে না অরবিন্দ রোডের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিও। অরবিন্দ রোড ব্যবসায়ী সমিতি (পূর্ব)-র সাধারণ সম্পাদক সুবীর চক্রবর্তী বলেন, “ফুটপাথে মাল না রাখার জন্য বহু বার সদস্যদের জানিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল বড় দোকানগুলি নিয়ম মানছে না বলে ছোট দোকানগুলিকে নিয়ম মানাতে সমস্যা হচ্ছে। তবে ফুটপাথ দখল রাখাকে কখনও সমর্থন করি না।” একই মত অরবিন্দ রোড মার্চেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক অতনু মল্লিক ও মধু চট্টোপাধ্যায়েরও। আবার অরবিন্দ রোড ব্যবসায়ী সমিতি ও পল্লিবাসী বৃন্দের সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ বাগ বলেন, “বহু বার সদস্যদের ফুটপাথ ফাঁকা করতে অনুরোধ করেছি। এর পরে প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নিলে সংগঠনের কিছু করার নেই।”
হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “অস্থায়ী ব্যবসায়ীদের তুলে দেওয়া হয়েছে। রাস্তার ধারের দোকানদারদেরও ফুটপাথ খালি করতে বলা হয়েছে। না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনও ভাবেই ফুটপাথ দখল করে রাখা যাবে না।” হাওড়া জেলা তৃণমূলের সম্পাদক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ফুটপাথ দখল করে রাখা বেআইনি। দোকানদারদের অবিলম্বে ফুটপাথ মুক্ত করতে হবে। পুলিশের এই অভিযানকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।”
পথচারীদের অভিযোগ, ফুটপাথ দখলের পাশাপাশি এই রাস্তায় চলে বাস ও রিকশার দৌরাত্ম্য। চৌরাস্তা থেকে বাঁ দিকে ঢুকেই যেখানে-সেখানে যাত্রী তোলার জন্য বাস দাঁড়িয়ে যায়। ফলে যানজট শুরু হয়। এ বিষয়ে অখিলেশবাবু বলেন, “বাস ও রিকশাকে রাস্তায় দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। ইতিমধ্যেই ওই রাস্তায় বাস নিয়ম ভাঙলে কেস দেওয়া শুরু হয়েছে। অভিযান আরও বাড়ানো হবে।”

ছবি: রণজিৎ নন্দী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.