আবেদনে ঘর মেলেনি, ভরসা ত্রিপল
ক সময় পশ্চিমবঙ্গে নলহাটির কাঁসা -পিতলের বাসনের বেশ কদর ছিল। নম্বর ওয়ার্ডের কামারপাড়ায় একমাত্র এই বাসন তৈরি হয়। এই শিল্প আজ বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে একটি ঘর কাঁসা -পিতলের বাসন তৈরি করে। এলাকা ঘুরে জানা গেল, অধিকাংশ বাড়ির যুবকেরা এখন মুম্বই, পুনেতে রং মিস্ত্রি, কেউ সোনার দোকানে কাজ করছেন। আবার অনেকে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতে ছুটছেন। কয়ালপাড়ার বাসিন্দা সানোয়ারা বিবি জানান, ছেলেরা সব কাজের সন্ধানে মুম্বই পাড়ি দিয়েছেন। স্বামী -স্ত্রী দু’জনেই মাথার উপরে ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া বাড়িতে থাকেন। তাঁর কথায়, “ছেলেরা এই ছোট ঘরে কষ্ট করে থাকতে চাইল না। এখানে কাজ না পাওয়ায় মুম্বই চলে গেল। ওখানে রাজমিস্ত্রির কাজ করছে। পুরসভায় অনেকবার আবেদন করেও ঘর পেলাম না।” তাঁর ক্ষোভ, “অথচ যাঁদের জমি আছে, স্বামী -স্ত্রী সরকারি চাকরি করেন তাঁদেরকে বিপিএল তালিকায় এনে সরকারি সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে।” ওই পাড়ার আর এক বাসিন্দা পেশায় ভ্যান চালক নাসিরুদ্দিন খাঁ ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া বাড়িতে বাস করছেন। তাঁর অভিযোগ, “পুরসভায় কাকে বলব ! কাউন্সিলর তো কোনও কাজ করতেন না, ওয়ার্ড সেক্রেটারি যা করতেন কাউন্সিলর তাই মেনে নিতেন।”
মজে যাচ্ছে পুকুর। নোংরা জলেই গৃহস্থালীর কাজ। ছবি : সব্যসাচী ইসলাম।
বাড়ি নিয়ে বিস্তর অভাব অভিযোগের পাশাপাশি নিকাশি নালা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে। বাসিন্দারা জানান, তিন মাস অন্তর নালা পরিষ্কার করা হয়। কয়ালপাড়ার অভিযোগ শুনতে শুনতে কামারপাড়ায় গিয়ে দেখা গেল বিদায়ী কাউন্সিলর তৃণমূলের গায়ত্রী ফুলমালি নিজে বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পে এক লাখি ঘর পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, নিজের আত্মীয় লাল্টু ফুলমালির স্ত্রী, মিন্টু ফুলমালির স্ত্রীর নামে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। তালিকায় ক্রাশার মালিক জীবন চক্রবর্তীর নামও রয়েছে। তালিকায় কী করে বিত্তবানদের নাম ঢুকল? গায়ত্রীদেবীর দাবি, “ওয়ার্ডে কী কাজ হচ্ছে আমাকে জানানো হত না। ওয়ার্ড সেক্রেটারি কাজ দেখাশোনা করতেন।” কামারপাড়া ছাড়িয়ে মাঠপাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, সেখানেও অনেকে ঘর পাননি। জিতু লেট, সিতু লেটদের ক্ষোভ, “বস্তি উন্নয়ন বা আশ্রয় প্রকল্পে আমরাও ঘর পাইনি।”
এই ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী পূর্ণিমা ঘোষের অভিযোগ, “এলাকার ঐতিহ্যবাহী বোড়ালপুকুর সংস্কার হয়নি। সাহা ওয়ার্ডের নোংরা জল নিকাশি নালা দিয়ে ওই পুকুরে পড়ে। এলাকার একমাত্র ব্যবহার্য পুকুর সংস্কার করা দরকার।” সিপিএম প্রার্থী কেকা গুপ্তও অভিযোগ করেছেন, “পুরপ্রধানের কাছের লোক হওয়ায় তৃণমূল কর্মী দীপ্তিমান সিংহ খাস জায়গায় বাড়ি করেছেন। অথচ খাস জায়গার অভাবে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন হচ্ছে না।” যদিও দীপ্তিমান সিংহ দাবি করেছেন, “ব্লক ভূমি ভূমি সংস্কার দফতর তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার পরে বাড়ি করা হয়েছে। কেকা গুপ্তও অবৈধ ভাবে নিজের বাড়িতে পাইনলাইন নিয়েছেন।” যতই ভোট এগিয়ে আসছে ততই অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ চলছেই। এর মাঝে পড়ে প্রকৃত প্রাপকেরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
নজরে নলহাটি
ওয়ার্ড
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন নেই।
• বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পে ‘বিত্তবানদের’ নাম।
• বোড়ালপুকুর সংস্কার হয়নি, নিকাশি নালা সাফাই হয় না।
নিকাশি, রাস্তাঘাট, জলের সমস্যা
রয়েছে। সব জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছে
দিতে ব্যর্থ কাউন্সিলর।
পূর্ণিমা ঘোষ,
রাস্তার উন্নতি, বস্তি উন্নয়নে গৃহনির্মাণ,
নলকূপ বসানো হয়েছে। তবে কী পরিমাণ
কাজ হয়েছে, তা আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়।
গায়ত্রী ফুলমালি,



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.