রবিবার, ছুটির দিন। ফি হপ্তায় এ দিনটায় সকালে তাঁর বাড়িতে দরবার বসে। কিন্তু ঘুম থেকে উঠে তিনি স্নান সেরে তড়িঘড়ি তৈরি হওয়ায় রাবড়ি দেবী নাকি চমকে গিয়েছিলেন! সংসদে বক্তৃতার ফাঁকে লালু বললেন, “রাবড়ি দেবী জিজ্ঞাসা করলেন, ছুটির দিনে আবার কোথায় চললে? বললাম, আরে বাবা জানো না, সংসদের প্রথম অধিবেশনের আজ ষাট বছর পূর্তি? অনেক কাজ আছে, অনেক কথা বলার আছে! সবাই অপেক্ষা করবে আমার জন্য।” লালুর কথা শুনেই হাসির রোল উঠল লোকসভায়।
|
‘অসুস্থতা’র কারণে সংসদের গোটা অধিবেশনে আসতে পারবেন না বলে ছুটি নিয়েছিলেন। কিন্তু রবিবার সকাল সকাল নীল রঙের পাঞ্জাবী আর পায়জামা পরে রাজ্যসভায় উপস্থিত হলেন কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। ঘণ্টাখানেক রাজ্যসভায় কাটিয়ে প্রবীণ সাংসদ রিশাং কেইশিংয়ের সঙ্গে কথা বলে চলে গেলেন সিঙ্ঘভি। রাজ্যসভার এক সাংসদের রসিক মন্তব্য, “অভিষেক জানতেন, সংসদের ষাট বছরের দিনে অন্তত তাঁকে নিয়ে কেউ কাটােঁছড়া করবে না। তাই একটু ঝুঁকি নিয়ে আবহাওয়াটা মেপে গেলেন!”
|
মনমোহন সিংহ, অরুণ জেটলি, মায়াবতীর বলা শেষ। জেডি (ইউ)-এর শিবানন্দ তিওয়ারির পালা। দশ মিনিট হতেই ডেপুটি চেয়ারম্যান পি জে কুরিয়ন ঘড়ি দেখিয়ে বললেন, “আপনার সময় শেষ।” এতক্ষণ গণতন্ত্রে সাহসী হওয়ার কথা বলছিলেন তিওয়ারি। কুরিয়েন সময়ের কথা বলতেই বিরক্ত হলেন। পাশেই বসা মায়াবতীকে দেখিয়ে তিওয়ারি বললেন, “এতক্ষণ সাহসী হওয়ার কথাই বলছিলাম স্যর! মায়াবতীর বেলায় ঘড়ি দেখানোর সাহস হল না, আমাকে দুর্বল পেয়ে ঘড়ি দেখাচ্ছেন!”
|
নিজের হাতে লেখা চার দশকের পুরনো ডায়েরি নিয়ে সংসদে এসেছিলেন। কিন্তু লোকসভার নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, সময়ের অভাবে সে সব গল্প বলা হল না। কী গল্প শোনাতেন তিনি? বললেন, “’৫১ সালে প্রথম বার ভোটের গণনাই হয়েছিল তিন মাস! তখন সোস্যালিস্ট পার্টির নির্বাচনী প্রতীক ছিল বটগাছ। আর কৃষক মজদুর প্রজা পার্টির চিহ্ন ছিল চালাঘর। তখন কাগজেই বেরিয়েছিল, এক ব্যক্তি ব্যালট পেপার বটগাছে গুঁজে রেখে এসেছিলেন! আর এক জন বাড়ির খড়ের চালে তুলে রেখেছিলেন ব্যালট পেপার!”
|
লোকসভায় প্রত্যেক সাংসদকে বক্তৃতার জন্য ১০ মিনিট করে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল আজ। লোকসভায় সিপিএম নেতা বাসুদেব আচারিয়া রবিবার সময় পেরিয়ে বলেই চলছিলেন। উঠে দাঁড়িয়ে স্পিকারকে ইশারা করেন তৃণমূল নেতা ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিনে হয়তো বা কথা কাটাকাটি হত! কিন্তু বাসুদেববাবু আজ তৎক্ষণাৎ বক্তৃতা শেষ করে বসে পড়লেন। |