‘প্রেমিকা’ ইদানীং ‘এড়িয়ে’ চলছিলেন। ‘হেস্তনেস্ত করতে’ গভীর রাতে রিভলবার নিয়ে তাঁর বাড়িতে ‘চড়াও’ হয়েছিলেন যুবক। অভিযোগ, তাঁর চালানো গুলিতে প্রাণ যায় ‘প্রেমিকা’র বাবার। জখম হন ‘প্রেমিকা’। এর পরে দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে মারা হয় যুবকটিকেও। শনিবার রাতে বর্ধমানের মঙ্গলকোটে এমনই ঘটেছে বলে পুলিশের দাবি। তবে যুবকটির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ছিল বলে মানতে চাননি ওই যুবতী।
বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার বক্তব্য, “প্রণয়ঘটিত কারণেই এমন ঘটনা। একটি দেশি রিভলবার ও কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। দু’পক্ষই খুনের অভিযোগ করেছে।” পুলিশের দাবি, মঙ্গলকোটের নিগন গ্রামের অনুপ সিংহরায়ের (৩২) সঙ্গে স্থানীয় ইট্যা গ্রামের বছর বাইশের ওই যুবতীর বছর তিনেক ধরে ‘ঘনিষ্ঠতা’ ছিল। অনুপ একটি মোবাইল ফোন সংস্থার কর্মী ছিলেন। গত মার্চ থেকে তাঁদের ‘সম্পর্ক’ খারাপ হতে শুরু করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত দেড়টা নাগাদ মোটরবাইকে চড়ে ইট্যা গ্রামে যান অনুপ। পাঁচিল টপকে বাড়িতে ঢুকে সোজা উঠে যান দোতলার ঘরে। সেখানে ওই যুবতী ও তাঁর মা ঘুমোচ্ছিলেন। বাইরের বারান্দায় ঘুমোচ্ছিলেন মেয়েটির বাবা শম্ভুনাথ মণ্ডল (৫৪) এবং এক কাকা ও দাদা। ওই পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, ঘরে ঢুকে দরজা আটকে অনুপ মেয়েটিকে তাঁর সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে যেতে বলেন। যুবতী তাঁকে চলে যেতে বলায় অনুপ একটি দেশি রিভলবার বের করেন। তখনই তাঁকে জাপটে ধরেন মেয়েটির মা। |
ইতিমধ্যে ওই যুবতী দরজা খুলে দিতে ঘরে ঢোকেন তাঁর বাবা-দাদারা। অভিযোগ, সেই সময় অনুপ গুলি চালান। বুকে গুলি লেগে মৃত্যু হয় শম্ভুনাথবাবুর। মেয়েটির হাতে গুলি লাগে।
গুলির শব্দে লোকজন জড়ো হয়। অনুপের হাত-পা বেঁধে বাড়ির মধ্যেই শুরু হয় গণপিটুনি। পুলিশ খবর পেয়ে উদ্ধার করে অনুপকে। কাটোয়া হাসপাতালের পথে মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে মেলা অনুপের একটি ব্যাগে ওই যুবতী ও অনুপের কিছু ‘ঘনিষ্ঠ’ ছবি মিলেছে। পাওয়া গিয়েছে কিছু চিঠিও। মেয়েটির মা অবশ্য বলেন, “ছেলেটা আমার মেয়েকে রাস্তাঘাটে বিরক্ত করত। ও বাড়িতে ঢুকে এই কাণ্ড ঘটাবে, ভাবিনি!” যুবতীটি প্রথমে দাবি করেন, অনুপকে তিনি চেনেন না। পরে বলেন, “ও আমাকে বিরক্ত করে চিঠি দিত।”
অনুপের ব্যাগ থেকে মেলা ছবিগুলি প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, “ও সব কম্পিউটরের কারসাজি।” পক্ষান্তরে অনুপের বাবা রণজিৎ সিংহরায়, মা কল্পনাদেবীর বক্তব্য, “অনুপের সঙ্গে ওই মেয়েটির প্রেম ছিল। মেয়েটির বাড়িও সে কথা জানত। মেয়েটিও আমাদের বাড়িতে আসত। এখন ওঁরা কেন সব অস্বীকার করছেন, জানি না! |