‘চোর’ অপবাদ দিয়ে হাবরা শ্রীচৈতন্য কলেজে এক পরীক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। ‘ঘটনার জেরে অপমানিত’ সুকান্ত দাস নামে ওই ছাত্র কীটনাশক খেয়ে শুক্রবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে রিপোর্ট চাইল পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অশোকরঞ্জন ঠাকুর পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়ে শনিবার বলেন, “সোমবার ওই কলেজের অধ্যক্ষের কাছে ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে।” পুলিশও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
বনগাঁ হাসপাতালে শুয়ে সুকান্ত এ দিন বলেন, “আমার সঙ্গে যা হয়েছে, তার বিচার চাই।” শ্রীচৈতন্য কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রমোহন মণ্ডল বলেন, ‘‘যে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তিনি ছাত্রদরদি বলেই পরিচিত। পুলিশ তদন্ত করে সত্য ঘটনা বের করুক। আমরা পুলিশকে সহযোগিতা করব।”
বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয়ের বিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সুকান্ত। তাঁর পরীক্ষার ‘সিট’ পড়েছে শ্রীচৈতন্য কলেজে। গত ৯ মে ব্যাগ ‘চুরি’র অপবাদ দিয়ে সুকান্তকে পরীক্ষা চলাকালীন অফিসঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে ওই কলেজের রসায়নের শিক্ষক অতনু মিত্র-সহ কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকা মারধর করেন বলে অভিযোগ। যদিও অতনুবাবু এবং অধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ দিকে, শনিবার দুপুরে বাংলা পরীক্ষার পরে সুকান্তের কলেজের পড়ুয়ারা ইন্দ্রমোহনবাবুর ঘরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখান। সঙ্গে ছিলেন কয়েক জন স্থানীয় যুবক। সুকান্তকে পাশ করানোর দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি তাঁদের অভিযোগ, শনিবারও তাদের এক সহপাঠীর পরীক্ষার খাতা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। অধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “কোনও পরীক্ষার্থীর খাতা নয়, একটি উত্তরের নকল পরিদর্শক ছিঁড়ে দেন।” সুকান্তকে পাশের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। গোটা ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ট্রোলার অভিজিৎ তলাপাত্র লিখিত আকারে জানাতে বলেছেন।” শনিবার সুকান্তকে হাসপাতালে দেখতে আসেন জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি আবি কালাম মণ্ডল। তিনি বলেন, “আইনের উপর আমাদের আস্থা আছে। সংগঠনের তরফে সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে বিষয়টি জেনে পদক্ষেপ করা হবে।” |