কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে মার খেতে পারে বিদেশি লগ্নি
ভোডাফোনের উপর কর ২০,৩০০ কোটির
বশেষে ভোডাফোনের উপর কর চাপানোর পথেই হাঁটল কেন্দ্রীয় সরকার।
লোকসভায় অর্থ বিল পাশ হওয়ার ঠিক এক দিনের মাথাতেই ব্রিটিশ টেলিকম সংস্থা ভোডাফোনের উপর কর ও জরিমানা আদায়ের সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। সব মিলিয়ে ২০,৩০০ কোটি টাকা তারা সংস্থার কাছ থেকে আদায় করবে বলে বুধবার জানিয়ে দিয়েছে। অর্থ সচিব আর এস গুজরাল জানান, এর জন্য ওই সংস্থাকে আলাদা করে কোনও নোটিস জারি করা হবে না। অর্থ বিল, ২০১২-ই আগে ভোডাফোনকে এই মর্মে পাঠানো সব নোটিসকেই বৈধতা দেবে। গুজরালের কথায়, “বকেয়া কর আদায়ে সচেষ্ট হওয়টা সরকারের কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে।”
ভোডাফোনের পক্ষ থেকে বিষয়টিতে ‘ঘোরতর অবিচার’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে। এই কর দেওয়া ঠেকাতে তারা যা ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব, তাই করবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাজেটে আয়কর আইনের বিশেষ সংশোধনী প্রস্তাব অনুসারে ভারতে ব্যবসার যোগসূত্র থাকলে, ভারতীয়, অনাবাসী বা বিদেশি সবাই উৎসে কর কাটিয়ে তা এ দেশে জমা দিতে বাধ্য হবেন। লেনদেন বিদেশের মাটিতে হলেও করের আওতায় আসবেন তিনি। সংশোধনী কার্যকর ধরা হবে ১৯৬২-র ১ এপ্রিল থেকে। ২০০৭-এ হংকং ভিত্তিক মোবাইল পরিষেবা সংস্থা হাচিসন-এসারে হাচিসনের ৬৭% শেয়ার প্রায় ১,১০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে হাতে নেয় ব্রিটিশ বহুজাতিক ভোডাফোন। কিন্তু কেন্দ্রের দাবি সত্ত্বেও এ জন্যভারতে কর জমা দেয়নি তারা। তাদের যুক্তি ছিল, চুক্তি সই হয়েছে বিদেশের মাটিতে।
অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের ব্যাখ্যা, ৮২টি দেশের সঙ্গে ভারতের ‘ডাব্ল ট্যাক্সেশন অ্যাভয়ডেন্স এগ্রিমেন্ট’ রয়েছে। ওই সব দেশে একবার কর দেওয়া হলে ভারতে আর দ্বিতীয়বার কর দিতে হয় না। কিন্তু এমন অনেক দেশ রয়েছে, যে সব দেশে করের হার খুবই কম বা শূন্য। এইসব দেশের সঙ্গে ভারতের তাই চুক্তিও নেই। কর এড়াতে ভারতে ব্যবসারত বহু সংস্থাই ওই সব দেশে ব্যবসায়িক লেনদেন করে বা সেখান থেকে ঘুরপথে বিনিয়োগ করে। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ভোডাফোনের ক্ষেত্রে। ২০০৭-এ ব্রিটিশ সংস্থা ভোডাভোন হংকংয়ের হাচিসন-এসারে-র ৬৭% শেয়ার কিনে নেয়। হাচিসনের ব্যবসার একটা বড় অংশ ভারতে হলেও লেনদেনের চুক্তি সই হয় ক্যারিবীয় সাগরের কেম্যান আইল্যান্ডে। যে দেশের সঙ্গে ভারতের কর-সম্পর্কিত কোনও চুক্তি নেই। সেই কারণেই বিদেশের মাটিতে চুক্তি সই হয়েছে, এই যুক্তি দেখিয়ে ভোডাভোন কোনও কর দিতে চায়নি। সুপ্রিম কোর্টে মামলার রায়ও ভোডাফোনের পক্ষেই যায়। তারপরেই বাজেটে কর আইন সংশোধনের পথে হাঁটে কেন্দ্র। ভোডাফোনের কর-বিতর্কের জট ছাড়াতে মাঠে নেমেছিল ব্রিটিশ সরকারও। ভারতের আয়কর আইনে সংশোধনী প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে ওই ব্রিটিশ টেলিকম বহুজাতিকের উদ্বেগে এ বার সুর মিলিয়েছিল তারা। ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্ন। জানিয়েছিলেন এ বিষয়ে ব্রিটিশ লগ্নিকারীদের আশঙ্কার কথা। তাঁর মতে, “এই বিতর্ক শুধু ভোডাফোনকে প্রভাবিত করবে না। এর জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এ দেশে লগ্নির পরিবেশও।” তা ছাড়া, এই আইন সংশোধনের প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করতে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে চিঠি দিয়েছিল বেশ কয়েকটি বিদেশি বণিকসভাও। এর পরেও কেন্দ্র ভোডাফোনের উপর কর ও জরিমানা আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ভারতে বিদেশি লগ্নির সম্ভাবনা ক্ষুণ্ণ হবে বলেই শিল্পমহলের আশঙ্কা।য়তা করার চেষ্টা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.