ইঞ্জিনিয়ারিং: নানা মত নানা পথ
দশ দিগন্ত

এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং
বিমানচালনা থেকে মহাকাশচারণের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখন উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে বিপ্লব ঘটেছে। দেশের প্রতিরক্ষাকে আরও জোরদার করতে নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করা হচ্ছে। এই ধরনের প্রযুক্তিগত উন্নতির নেপথ্যে অনেকাংশেই রয়েছে এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারদের ভূমিকা। ব্যবসায়িক বিমান থেকে শুরু করে সামরিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত উপগ্রহ বা মিসাইল গঠনের নকশা তৈরি, সেগুলি আরও উন্নততর করার পদ্ধতি উদ্ভাবন, পরীক্ষানিরীক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণের মতো স্পেশালাইজড কাজ করেন এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়াররা।
পশ্চিমবঙ্গে এয়ারোস্পেস বা এয়ারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া যায় আইআইটি খড়্গপুর (www.iitkgp.ac.in), বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি (বেসু), শিবপুর (www.becs.ac.in), পৈলান কলেজ অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনলজি (www.pcmt-india.net) ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে। আইআইটি খড়্গপুরে এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং-এ চার বছরের বি টেক, পাঁচ বছরের ডুয়াল ডিগ্রি এবং দু’বছরের এম টেক করা যায়। বেসুতে এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড মেকানিক্স-এ চার বছরের বি ই কোর্স করা যায়। ভবিষ্যতে এখানে মাস্টার্স কোর্স চালু করার কথাও ভাবছে কর্তৃপক্ষ। আর রাজ্যের বাইরে আইআইটি মুম্বই (www.iitb.ac.in), আইআইটি কানপুর (www.iitk.ac.in), আইআইটি ম্যাড্রাস (www.iitm.ac.in), ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব স্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনলজি (www.iist.ac.in), ম্যাড্রাস ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি (www.mitindia.edu)-র মতো প্রতিষ্ঠানে এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করা যায়। বিড়লা ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি, মেশরা-য় (www.bitmesra.ac.in) স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রকেট্রি-র অন্তর্গত রকেট প্রোপালশন, এয়ারোডায়নামিক্স-এ দু’বছরের এম ই এবং ফুয়েলস অ্যান্ড কম্বাশন-এ দু’বছরের এম টেক কোর্স পড়ানো হয়। এখানে পিএইচ ডি-ও করা যায়। তবে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান যেখানেই এই কোর্স রয়েছে সেখানে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে পিএইচ ডি করার সুযোগ পায় ছাত্রছাত্রীরা। এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়টি মোটামুটি দাঁড়িয়ে রয়েছে এয়ারোডায়নামিক্স, প্রোপালশন, ফ্লাইট মেকানিক্স, গাইডেন্স অ্যান্ড কন্ট্রোল, ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্রাকচার-এর ওপর। ফলে এই সব বিষয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে উচ্চশিক্ষা করা যায়। আর চাকরির ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা পরিষেবা, ইসরো, ডিআরডিও, সরকারি ও বেসরকারি এয়ারলাইন্স, ফ্লাইং ক্লাব, বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থায় কাজের সুযোগ পাওয়া যায়।

টেক্সটাইল টেকনলজি
কাপড় দু’ধরনের হয়। এক তো যেগুলি আমরা পরিধেয় হিসেবে ব্যবহার করি। এগুলি অ্যাপারেল টেক্সটাইলের অন্তর্গত। আর অন্যটি হল টেকনিক্যাল টেক্সটাইল যার মধ্যে পড়ে মেডিক্যাল টেক্সটাইল(চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কাপড়), অ্যাগ্রো টেক্সটাইল (কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত কাপড়), জিয়োটেক্সটাইল-এর মতো নানা ধরনের উন্নত মানের কাপড়। বিভিন্ন পদ্ধতির সাহায্যে নানা ধরনের কাপড় উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় টেক্সটাইল টেকনলজিস্ট বা ইঞ্জিনিয়ারদের। এই বিষয় পড়ে টেক্সটাইল মিল, এক্সপোর্ট হাউস, টেক্সটাইল ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং সংস্থা ছাড়াও খাদি, হ্যান্ডলুম, জুট তৈরির সংস্থায় চাকরি পাওয়া যায়।
রাজ্যে গভর্নমেন্ট কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেক্সটাইল টেকনলজি, বহরমপুরে (http://gcettb.org.in/) টেক্সটাইল টেকনলজিতে চার বছরের বি টেক ডিগ্রি কোর্স করা যায়। এই একই নামের আর একটি কলেজ রয়েছে শ্রীরামপুরে (জিসিইটিটিএস, http://www.gcetts.org/)। এখানেও টেক্সটাইল টেকনলজিতে বি টেক কোর্স আছে। এই দুই প্রতিষ্ঠানের বি টেক কোর্সে ভর্তি হতে ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট্র এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিতে হয়। জিসিইটিটিএস-এ টেক্সটাইল টেকনলজি ছাড়াও কেমিক্যাল প্রসেসিং অব টেক্সটাইলস্-এর ওপর এম টেক করা যায়। এ ছাড়া ইনস্টিটিউট অব জুট টেকনলজিতে (www.ijtindia.org) জুট অ্যান্ড ফাইবার টেকনলজিতে বি টেক পড়ায়। টেক্সটাইল টেকনলজির সঙ্গে এর অনেক মিল রয়েছে। এ ছাড়া এখানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ এম টেকও পড়া যায়। স্পেশালাইজেশন করা যায় টেকনিক্যাল টেক্সটাইলস-এ। রাজ্যের বাইরেও নানা প্রতিষ্ঠানে এই বিষয়ে কোর্স রয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকটির নাম এখানে দেওয়া হল। আই আই টি দিল্লিতে (www.iitd.ac.in/) টেক্সটাইল টেকনলজিতে চার বছরের বি টেক, দু’বছরের এম টেক এবং পিএইচ ডি করা যায়। এনআইটি, জলন্দর-এ (http://tt.nitj.ac.in/) এই বিষয়ে বি টেক, এম টেক ও পিএইচ ডি করা যায়। ভিওয়ানির দ্য টেকনলজিক্যাল ইনস্টিটিউট অব টেক্সটাইল অ্যান্ড সায়েন্সেস-এ (www.titsbhiwani.org) স্নাতকস্তরে টেক্সটাইল টেকনলজি এবং টেক্সটাইল কেমিস্ট্রিতে বি টেক কোর্স রয়েছে। এর পর স্নাতকোত্তর স্তরে টেক্সটাইল টেকনলজির ওপর এম টেক করতে পারে ছেলেমেয়েরা। কোয়েম্বাটুর-এর পিএসজি কলেজ অব টেকনলজিতে (www.psgtech.edu) এই বিষয়ে পূর্ণ সময়ের এবং পার্ট টাইমে বি টেক, এম টেক এবং পিএইচ ডি করা যায়। উচ্চশিক্ষার সময় টেক্সটাইল টেকনলজি ছাড়াও টেক্সটাইল কেমিস্ট্রি বা কেমিক্যাল প্রসেসিং, ফাইবার টেকনলজি ওপর স্পেশালাইজেশন করা যায়। অনেক প্রতিষ্ঠানে ফ্যাশন টেকনলজি বা গার্মেন্ট টেকনলজির মতো বিষয়ে মাস্টার্স পড়ায়। টেক্সটাইল টেকনলজিতে বি টেক থাকলে এই সব কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়। যারা স্নাতক স্তরের পর অন্য কোনও বিষয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়তে চায়, তারা আই টি, ম্যানেজমেন্ট কিংবা সফটওয়্যার নিয়ে উচ্চশিক্ষা করতে পারে।

মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
বিভিন্ন ধরনের মেশিন থেকে শুরু করে একটি ছোট্ট নাটবল্টু শিল্পক্ষেত্রে যা যা ব্যবহৃত তা সবই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সাহায্যে তৈরি। কোনও যন্ত্রকে প্রথমে নকশা করা, সেই নকশা অনুযায়ী যন্ত্রটিকে পরিমার্জন করা, তার নির্মাণ, এর পর উৎপাদন, সেটিকে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে স্থাপন করা, সেটিকে চালানো এবং তার রক্ষণাবেক্ষণ এ সবই হল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ। বিশাল স্টিম ও গ্যাস টারবাইন থেকে শুরু করে গাড়ি, রেফ্রিজারেটর সবই তৈরি করেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা।
যাদবপুর ইউনিভার্সিটি (www.jaduniv.edu, ফোন: ২৪১৪৬৮৯০), বেসু, কল্যাণী গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (www.kgec.ac.in), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি, দুর্গাপুর (http://www.nitdgp.ac.in/me/, ফোন: +৯১৩৪৩২৫৪৬৩৯৭), জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (www.jgec.org, ফোন: ৯১-৩৫৬১-২৫৫১৩১), ফিউচার ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (http://www.teamfuture.in, ফোন: ২৪৩৪৫৬৪০/ ১৫), হলদিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি-র (www.hithaldia.in, +৯১৩২২৪ ২৫২৮৫০) মতো বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এই বিষয়ে বি টেক পড়া যায়। আইআইটি খড়্গপুরে (৩২২২-২৮২২৭৭) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যানুফ্যাকচারিং সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি টেক কোর্স রয়েছে। এ ছাড়াও এখানে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বিভিন্ন বিষয়ে ডুয়াল ডিগ্রি এবং এম টেক করা যায়। রাজ্যের বাইরে খড়্গপুরের পাশাপাশি অধিকাংশ আইআইটিতেই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বা তার আনুষঙ্গিক বিষয়ে বি টেক ও এম টেক করা যায়। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স, বেঙ্গালুরুতেও (www.iisc.ernet.in) এই বিষয়ে এম ই, এম এসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং) ও পিএইচ ডি কোর্স রয়েছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি, তিরুচেরাপল্লি (www.nitt.edu) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি টেক করার পর থার্মাল পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইন্ডাসট্রিয়াল সেফটি ইঞ্জিনিয়ারিং-এ এম টেক পড়া যায়। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ম্যানুফ্যাকচারিং, ইন্ডাসট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং, থার্মাল ফ্লুইড সায়েন্স, মেশিন ডিজাইন মতো বিষয়ে স্পেশালাইজেশন করা যায়। যারা মেকানিক্যাল-এ বি টেক করার পর অন্য কোনও বিষয়ে উচ্চশিক্ষা করতে চায় তারা ন্যানোটেকনলজি, পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়ো ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো বিষয়গুলি বেছে নিতে পারে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা সাধারণত বিভিন্ন উৎপাদন সংস্থায় কাজের সুযোগ পান।

কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
রসায়নে আমরা দেখি যে একটি কেমিক্যাল-এর সঙ্গে আর একটি কেমিক্যাল মিশে একটি নতুন কেমিক্যাল তৈরি হচ্ছে। এই যে নতুন কেমিক্যাল তৈরি হল সেটার কোনও ব্যবহারিক মূল্য থাকতে পারে। এই কেমিক্যালটি কী ভাবে তৈরি করা যাবে, কোন যন্ত্রের সাহায্যে তৈরি করা যাবে, যে পদার্থগুলি দিয়ে তৈরি হবে তার ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম কী হবে, রসায়ন পদ্ধতির তাপমাত্রা কতটা হওয়া চাই, কত কম খরচে এই কেমিক্যালটি তৈরি করা যাবে, কত উন্নত পদ্ধতির সাহায্যে এটা তৈরি হবে এই সবই হল কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অঙ্গ। দেখতে গেলে দৈনন্দিন জীবনে যা কিছু ব্যবহার করি সেগুলি প্রস্তুত করার পেছনে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর হাত রয়েছে। বেশির ভাগ কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার পেট্রোলিয়াম রিফাইনারি এবং পেট্রোকেমিক্যাল সংস্থায় চাকরি করে। এ ছাড়া, ফার্টিলাইজার, সিমেন্ট, পেপার, ফার্মাসিউটিক্যাল, ডাই, অর্গ্যানিক এবং ইনঅর্গ্যানিক সংস্থাতেও কাজের সুযোগ রয়েছে এদের।
রাজ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (২৪১৪-৬৩৭৮), আই আই টি খড়্গপুর (+৯১-৩২২২-২৮২২৪৯), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (www.caluniv.ac.in, ফোন: ২৩৫০-৯৯৩৭/ ৮৩৮৬) এন আই টি দুর্গাপুর (www.nitdgp.ac.in, ফোন: +৯১৩৪৩২৫৪৬৩৯৭), হেরিটেজ ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি (www.heritageit.edu, ফোন: ২৪৪৩-০৪৫৪/৫৬/৫৭), হলদিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়া যায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে যেখানে উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল পরীক্ষা দিয়ে হয় রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বা সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি হওয়া যায় সেখানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি টেক করতে ফিজিক্স এবং ম্যাথামেটিক্স সহ কেমিস্ট্রি অনার্স পাশ করতে হবে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে এম টেক এবং পিএইচ ডি-ও করা যায়। রাজ্যের বাইরে অধিকাংশ আইআইটি, এনআইটি (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি), বিআইটিএস পিলানি (www.bits-pilani.ac.in), ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল টেকনলজি মুম্বই (www.ictmumbai.edu.in) ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বিভিন্ন কোর্স রয়েছে। আইআইএসসি, বেঙ্গালুরুতে এই বিষয়ে উচ্চশিক্ষা [এম ই, এম এসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং), পিএইচ ডি] করতে পারে ছাত্রছাত্রীরা। কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এমনই একটি বিষয় যেটার থেকে অন্য অনেক বিষয়ে উচ্চশিক্ষা করা যায়। যেমন স্নাতক স্তরে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পর স্নাতকোত্তর স্তরে বায়োটেকনলজি, ন্যানোটেকনলজি, ফুড টেকনলজি, কম্বাসশন ইঞ্জিনিয়ারিং, সেরামিক ইঞ্জিনিয়ারিং, এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং, পেপার টেকনলজির মতো বিষয় নিয়ে পড়া যায়। বিদেশেও বায়োটেকনলজি, এনভায়রনমেন্টাল কন্ট্রোল, পলিউশন, ন্যানোটেকনলজি নিয়ে গবেষণা করতে পারে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা।

ইলেকট্রনিক অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং
ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এর জন্ম হয়েছে মূলত ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে। ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং মধ্যে সবথেকে বড় পার্থক্য হল ইলেকট্রিক্যাল-এ তড়িৎ-এ ইলেকট্রনের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হয় আর ইলেকট্রনিক্স-এ ইলেকট্রনের গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এখন ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়টি কিন্তু বিভিন্ন দিকে প্রসারিত হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক যন্ত্র (টেলিভিশন, রেডিয়ো, আই পড ইত্যাদি) থেকে শুরু করে সংযোগ (একটি কম্পিউটার থেকে আর একটি কম্পিউটারে, ট্রান্সমিটার থেকে রিসিভারে), স্পেশালাইজড গ্রুপ মাইক্রোওয়েভ (যেমন, মোবাইল টেকনলজি, রাডার টেকনলজি) সবই পড়ে এর আওতায়। ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন নিয়ে পড়ে অধিকাংশ ছেলেমেয়েই সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে যোগ দেয়। বাকিরা যায় বিভিন্ন কমিউনিকেশন প্রোভাইডিং পরিষেবা (যেমন, মোটোরোলা, স্যামসাং, ভোডাফোন ইত্যাদি), চিপ ডিজাইনিং সংস্থা ইত্যাদিতে। এ ছাড়া ইসরো বা ডিআরডিও-র মতো সংস্থাতেও কাজ পায় ইকেলট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছাত্রছাত্রীরা।
রাজ্যের অনেক প্রতিষ্ঠানেই ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া যায়। যেমন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, বেসু , কল্যাণী গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (www.kgec.ac.in), জলপাইগুড়ি গভর্নমন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (এখানে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এ চার বছরের বি টেক কোর্স পড়ানো হয়), ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (http://iemcal.com/), হেরিটেজ ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি (www.heritageit.edu), নেতাজি সুভাষ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (www.nsec.ac.in) ইত্যাদি। স্নাতকস্তরে পড়ার পর স্নাতকোত্তর স্তরে ইলেকট্রনিক ডিভাইস, মাইক্রোইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ভিএলএসআই, মাইক্রোওয়েভ, কম্পিউটার টেকনলজি, কন্ট্রোলড সিস্টেমস্ মতো বিষয়গুলি নিয়ে উচ্চশিক্ষা করতে পারে ছেলেমেয়েরা। অধিকাংশ সরকারি এবং কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে স্নাতকোত্তর স্তরেও বিষয়টি পড়ানো হয়। দুর্গাপুরের এনআইটি-তে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি টেক পড়ানো হয়। আইআইটি খড়্গপুরে যেমন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি টেক কোর্স রয়েছে। এ ছাড়া এখানে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং/ ফাইবার অপটিক্স অ্যান্ড
লাইটওয়েভ ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং/ ভিসুয়াল ইনফরমেশন অ্যান্ড এমবেডেড সিস্টেমস-এর মতো বেশ কয়েকটি বিষয়ে ডুয়াল ডিগ্রি কোর্সও পড়ায়। এম টেক পড়া যায় টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ারিং, ভিসুয়াল ইনফরমেশন অ্যান্ড এমবেডেড সিস্টেমস, আরএফ অ্যান্ড মাইক্রোওয়েভ ইঞ্জিনিয়ারিং, মাইক্রোইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ভেরি লার্জ স্কেল ইন্টিগ্রেটেড (ভিএলএসআই) ডিজাইন এবং ফাইবার অপটিক্স অ্যান্ড লাইটওয়েভ ইঞ্জিনিয়ারিং-এ। আইআইএসসি, বেঙ্গালুরু, অধিকাংশ আইআইটি এবং প্রায় সব এনআইটিতে এই বিষয়ে উচ্চশিক্ষা করা যায়।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
বাড়ি-ঘর থেকে শুরু করে বাঁধ, রাস্তাঘাট, বন্দর, বিমানবন্দর যে কোনও স্থাপত্য তৈরি করার ক্ষেত্রে পরিকল্পনা, নকশা থেকে শুরু করে নির্মাণ করা সবই পড়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মধ্যে। বিভিন্ন বাড়িঘর ইত্যাদি তৈরির পাশাপাশি জমি জরিপ, সেচ ব্যবস্থা, পরিবেশ দূষণ, ইন্ডাসট্রিয়াল ওয়েস্ট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট-এর মতো বিষয়গুলিও এখন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর আওতায় পড়ে। কাজের ক্ষেত্রে কনস্ট্রাকশন ফার্ম, কনস্ট্রাকশন-এর বিভিন্ন কনসালটেন্সি ফার্ম, ইনফ্রাস্ট্রাকচারাল ফার্ম ইত্যাদিতে সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা চাকরি পান।
রাজ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানেই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর কোর্স রয়েছে। যেমন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, বেসু, হলদিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি, মেঘনাদ সাহা ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি (www.msitcollege.org, ফোন: ২৪৪৩১০৩২, ৩০৯৪৩৪৬২), নরুলা ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি (www.nit.ac.in), বীরভূম ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনলজি (www.bietsuri.org), ক্যালকাটা ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, আইআইটি, খড়্গপুর ইত্যাদি। রাজ্যের বাইরে বেনারাস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে (www.itbhu.ac.in) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি টেক-এর পাশাপাশি এনভায়রনমেন্টাল, জিয়োটেকনিক্যাল, হাইড্রলিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো নানা বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়ানো হয়। এনআইটি রাওরকেলা (www.nitrkl.ac.in/), কুরুক্ষেত্র (www.nitkkr.ac.in), ওয়ারাঙ্গল (www.nitw.ac.in)-এ এই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করা যায়। মোটামুটি রাজ্য এবং সর্বভারতীয় স্তরের অধিকাংশ ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানে (প্রায় সব আইআইটি ও এনআইটি সহ) স্নাতক স্তরের পাশাপাশি স্নাতকোত্তর স্তরেও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া যায়। এই বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সময় স্পেশালাইজেশনের সুযোগ রয়েছে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং, জিয়োটেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, জিয়োইনফরমেটিক্স, ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো বিষয়ে। আর যদি কেউ স্নাতকোত্তরের পর অন্য কোনও বিষয়ে উচ্চশিক্ষা করতে চায় তা হলে সে ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়তে পারে। পড়তে পারে আর্কিটেকচার অ্যান্ড টাউন প্ল্যানিং নিয়ে, পড়তে পারে আর্থকোয়েক ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। আইআইটি কানপুরে এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার ক্ষেত্রে সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা আবেদন করতে পারে। আইআইটি খড়্গপুরে নেভাল আর্কিটেকচার পড়ার জন্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের নেওয়া হয়।

মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং
আমাদের ভূগর্ভে বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ রয়েছে। যেমন কয়লা, তামা, আকরিক লোহা, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি। জ্বালানি থেকে শুরু করে নানান ক্ষেত্রে এগুলির ব্যবহার রয়েছে। ভূগর্ভ থেকে এই সব পদার্থকে উত্তরণ করা সংক্রান্ত কাজকর্ম মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মধ্যে পড়ে। কোথায় কোন খনিজ পদার্থ রয়েছে, কতটা মাটি কেটে বা পাথর ফুঁড়ে সেটা বার করা যাবে তার পরিকল্পনা, যারা এই খনিজ পদার্থগুলি খননের মাধ্যমে বার করবে তারা কী পদ্ধতিতে করবে, আরও কত উন্নতি পদ্ধতির মাধ্যমে খনিজ পদার্থটি বার করা যায়, খননের ক্ষেত্রে সরক্ষা ব্যবস্থা কী থাকা উচিত, কী ভাবে সেটা বিশুদ্ধিকরণ করা যাবে এই সবই মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ। ফলে বিভিন্ন মাইনিং মেশিনারি, কনসালটেন্সি সংস্থা, বেদান্ত, কোল ইন্ডিয়ার মতো সংস্থায় কাজ করা যায় বিষয়টি পড়ে।
পশ্চিমবঙ্গে বেসু-তে মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরাল কোর্স করা যায়। এ ছাড়া আইআইটি খড়্গপুরে এই বিষয়ে বি টেক, এম টেক এবং ডুয়াল ডিগ্রি কোর্স পড়ানো হয়। রাজ্যের বাইরে বেনারাস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে (www.itbhu.ac.in, এখানে চার বছরের বি টেক ছাড়াও পাঁচ বছরের ডুয়াল ডিগ্রি অর্থাৎ বি টেক-এম টেক, এম টেক ও পিএইচ ডি করা যায়), বিড়লা ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি সিনদ্রি (www.bitsindri.ac.in), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি, রায়পুর (www.nitrr.ac.in), বিবেশ্বরায়া ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি, নাগপুর (http://www.vnit.ac.in/) ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে বিষয়টি নিয়ে পড়া যায়। ধানবাদের ইন্ডিয়ান স্কুল অব মাইনস্-এ (www.ismdhanbad.ac.in) এই বিষয়ে বি টেক, এম টেক (পড়ানো হয় মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং, ওপেনকাস্ট মাইনিং, মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইন, রক এক্সক্যাভেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, আন্ডারগ্রাউন্ড স্পেস টেকনলজি এবং জিয়োম্যাটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এ) এবং ডুয়াল ডিগ্রি কোর্সে পড়াশোনা করা যায়। বি টেক এবং ডুয়াল ডিগ্রি কোর্সের ক্ষেত্রে আইআইটি জয়েন্ট এবং এম টেক-এর জন্য গেট পরীক্ষা দিতে হবে। এখানে পিএইচ ডি-ও করতে পারে ছেলেমেয়েরা। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মাইন সেফটি, মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইন, রক এক্সকাভেশন-এর মতো নানা বিষয়ে স্পেশালাইজেশন করা যায়। যদি কোনও ছাত্র মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতক হওয়ার পর অন্য কোনও বিষয় নিয়ে পড়তে চায় তবে তারও সুযোগ আছে। আইআইটি দিল্লিতে রক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড আন্ডারগ্রাউন্ড স্ট্রাকচারে এম টেক করতে পারে মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিরা। ইন্ডাসট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়েও এম টেক করা যায় বহু প্রতিষ্ঠানে। পড়া যায় জিয়োইনফরমেটিক্স নিয়েও।

ইনফরমেশন টেকনলজি
কম্পিউটারের সাহায্যে নানা ধরনের তথ্য সঞ্চয়, প্রয়োজন অনুসারে সেগুলি সাজানো ও বিশ্লেষণ করা, তার পর সেগুলি নিদিষ্ট গন্তব্যে পাঠানো, সঞ্চিত তথ্যকে সুরক্ষিত রাখার মতো কত কাজই না করা হয়। আর এই সব মিলিয়েই হল ইনফরমেশন সিস্টেম বা তথ্য ব্যবস্থা। ফলে এই ‘তথ্য’-এর ব্যবস্থাপনা করা থেকে শুরু করে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ সবই পড়ে ইনফরমেশন টেকনলজি বা তথ্য প্রযুক্তির আওতায়। তবে আই টি শিল্প মানেই কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার তৈরি, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, কম্পিউটিং অথবা মেনটেনেন্স নয়। এই পরিষেবার পরিধি আরও বৃহৎ। যার মধ্য পড়ে ব্যাঙ্কিং, টেলিকমিউনিকেশন, ম্যানুফ্যাকচারিং, রিটেল, অ্যাভিয়েশন, স্বাস্থ্য ইত্যাদি পরিষেবাও।
রাজ্যের মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, বেসু, কল্যাণী গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, সল্টলেকের ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (আইইএম), বি পি পোদ্দার ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনলজি (www.bppimt.ac.in), হেরিটেজ ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি, টেকনো ইন্ডিয়া ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে আই টি তে স্নাতকস্তরে ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স করা যায়। আইআইটি খড়্গপুরে এই বিষয়ে এম টেক কোর্স রয়েছে। এম টেক পড়া যায় যাদবপুর, বেসু, আইইএম মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। এনআইটি দুর্গাপুরে আই টিতে বি টেক করার পাশাপাশি এম টেক ও রিসার্চ করা যায়। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অনেক এনআইটি-তেই বিষয়টি পড়ানো হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব রেডিয়ো ফিজিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগে ইনফরমেশন টেকনলজিতে বি টেক করা যায়। কম্পিউটার সায়েন্সে বি টেক করার পর উচ্চশিক্ষার সময় ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, এমবেডেড সিস্টেমস, ডিস্ট্রিবিউটেড কম্পিউটিং, মোবাইল কমপিউটিং মতো বিষয়ে স্পেশালাইজেশন করা যাবে। আই টি নিয়ে পড়ে বিদেশেও নানা বিষয়ে গবেষণা করা যায়। জিয়োইনফরমেটিক্স, হেলথ কেয়ার থেকে শুরু করে রিমোট সেন্সিং, সেন্সর নেটওয়ার্ক এমনকী কৃষিতেও আইটি-র প্রয়োগ রয়েছে। আই টিতে সাধারণত দুটি ভাগ থাকে। একটি আই টি এনেবলড পরিষেবা আর অন্যটি কোর আইটির পরিষেবা। এনেবলড আইটি পরিষেবার মধ্যে রয়েছে যেমন বিপিও। আর কোর আইটি-র ক্ষেত্রে ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন সফটওয়্যার সংস্থায় কাজের সুযোগ পায়।

মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং
বিভিন্ন ধরনের জাহাজ তৈরি করা, তাদের রক্ষণাবেক্ষণ এই সবই মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অঙ্গ। ন্যাভাল আর্কিটেকচার, ন্যাভাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ওশন ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো বিষয়গুলির সঙ্গে এই বিষয়ের বিশেষ সংযোগ রয়েছে। ডাক্তারির মতো মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং-ও একটি প্র্যাক্টিক্যাল ভিত্তিক বিষয়। এই পড়ার সব স্তরেই প্র্যাক্টিকাল অ্যাপ্লিকেশন থাকে।
রাজ্যে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট তারাতলায় চার বছরের ডিগ্রি কোর্স করতে আইআইটি পরিচালিত জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিতে হয়। এ ছাড়া, ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং-এ (www.itmeindia.org) এবং সিকম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেও (www.seacomengineering.org) মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিগ্রি কোর্স পড়া যায়। ভর্তি হওয়া যায় ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে। দেশের মধ্যে ভুবনেশ্বরের সি ভি রমন কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং (www.cvrce.edu.in), নয়াদিল্লির ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট (http://www.imi.edu.in), কোয়েম্বাটোর-এর কোয়েম্বাটোর মেরিন কলেজ (www.coimbatoremarinecollege.com), ম্যাঙ্গালোরের ম্যাঙ্গালোর মেরিন কলেজ (http://cmc.ac.in/mmc/), তোলানি মেরিটাইম ইনস্টিটিউট (http://www.tolani.edu/tmi/#), মুম্বইয়ের সমুদ্র ইনস্টিটিউট অব মেরিটাইম স্টাডিজ-এ (www.executiveship.com/sims) ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বি টেক কোর্স রয়েছে। আইআইটি, খড়্গপুরে ওশন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ন্যাভাল আর্কিটেকচার-এ বি টেক, ডুয়াল ডিগ্রি এবং এম টেক কোর্স রয়েছে। ইন্ডিয়ান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি-র ভাইস্যাগ ক্যাম্পাসে ন্যাভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড ওশন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ড্রেজিং অ্যান্ড হার্বার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ এম টেক করা যায়। এই বিষয়ে উচ্চতর পড়াশোনার সময় স্পেশালাইজেশন করার সুযোগ রয়েছে বিভিন্ন ধরনের জাহাজ তৈরি, অ্যাডভান্সড হাইড্রলিক্স অ্যান্ড হাইড্রোডায়নামিক্স, অ্যাডভান্সড হিট সাইকলস, মেটিরিয়াল সায়েন্স, কমবাসশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ওশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো বিষয়ে। আর চাকরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন জাহাজ সংস্থা, বন্দর, হোটেল, জাহাজ তৈরির সংস্থায় কাজের সুযোগ থাকে। এ ছাড়া মিনিস্ট্রি অব শিপিং-এ অন্তর্গত বিভিন্ন সরকারি চাকরিও করা যায়। সুযোগ রয়েছে মেরিন কলেজে শিক্ষকতারও।

ফুড টেকনলজি
যে বিজ্ঞানের সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য ও পানীয় উৎপাদন এবং সংরক্ষণ করা হয় তাকে বলে ফুড টেকনলজি। কোনও খাদ্যকে কী প্রক্রিয়ার সাহায্যে তৈরি করা হবে, সেটির খাদ্যগুণ কী ভাবে বাড়ানো যাবে, কী পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করলে সেটি বেশি দিন ভাল থাকবে, রফতানি করতে হলে সেটি কী ভাবে প্যাকেজিং করা উচিত, ফুড সেফটি, তার নিউট্রিশন সব পড়ে ফুড টেকনলজির মধ্যে। বিভিন্ন ধরনের সুরা বা পানীয় তৈরির ক্ষেত্রেও ফুড টেকনলজি একটি অপরিহার্য প্রযুক্তি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুড টেকনলজি অ্যান্ড বায়োরকেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি টেক এবং এম টেক পড়ানো হয়। এ ছাড়া এই বিষয়ে কোর্স করা যায় হলদিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি, গুরু নানাক ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি (www.gnit.ac.in), টেকনো ইন্ডিয়া (www.ticollege.ac.in) ইত্যাদি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে। আইআইটি খড়্গপুরে ফুড টেকনলজিতে সরাসরি কোর্স না থাকলেও এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি টেক এবং এরই আনুষঙ্গিক বিষয়ে ডুয়াল ডিগ্রি ও এম টেক কোর্স রয়েছে। রাজ্যের বাইরেও ফুড টেকনলজি নিয়ে পড়ার অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেমন, কানপুরের হারকোর্ট বার্টলার টেকনলজিক্যাল ইনস্টিটিউট (www.hbti.ac.in)-এ কেমিক্যাল টেকনলজি (ফুড টেকনলজি)-তে স্নাতক , স্নাতকোত্তর (এম টেক করা যায় গেট কিংবা প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে) এবং পিএইচ ডি (নেট/ গেট কিংবা প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হওয়া যায়) করা যায়। মুম্বইয়ের ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল টেকনলজিতে (www.ictmumbai.edu.in) ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনলজিতে বি টেক, এম টেক কোর্স রয়েছে। এখানে এম টেক-এ আরও দুটি ইন্টারডিসিপ্লিনিয়ারি বিষয়ে কোর্স করা যায় পারফিউমারি অ্যান্ড ফ্লেভার টেকনলজি আর বায়োপ্রোসেস ইঞ্জিনিয়ারিং। নাগপুরের লক্ষ্মীনারায়ণ ইনস্টিটিউট অব টেকনলজিতে (http://nagpuruniversity.org/litnagpur/) এই বিষয়ে পড়াশোনা করা যায়। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফুড টেকনলজি আন্ত্রেপ্রেনিয়োরশিপ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট-এ (http://www.niftem.ac.in/NIFTEM/) ফুড টেকনলজি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট-এ বি টেক, এম টেক ও পিএইচ ডি কোর্সে ভর্তি হতে পারে ছেলেমেয়েরা। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে স্পেশালাইজেশন-এর সুযোগ রয়েছে ফুড কোয়ালিটি কন্ট্রোল, ডেয়ারি ইঞ্জিনিয়ারিং, ফাংশনাল ফুড, ফুড ইনগ্রেডিয়েন্টস মতো বিষয়ে। যারা এই বিষয়ে স্নাতক স্তরে পড়ে উচ্চশিক্ষার সময়ে অন্য কোনও বিষয় নিয়ে পড়তে চায়, তারা বায়োটেকনলজি, ড্রাগ ফরমুলেশন, মলিকিউলার বায়োলজি, ড্রাগ ডেলিভারি সিস্টেমস, নিউট্রিয়েন্ট ডেলিভারি, ফুড সাপ্লিমেন্ট, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ফর্টিফায়েড ফুড-এর মতো বিষয়ে নিয়ে কাজ করতে পারে। তবে এই সব ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ বিদেশে বেশি থাকে। চাকরির ক্ষেত্রে বেকারি, কনফেকশনারি, ওয়াইনারি, হোটেল, হসপটিকাল, ফাস্ট মুভিং কনসিউমার গুডস্, ফুড সেফটি, ফুড ইনস্পেকশন অ্যান্ড অডিট-এর সংস্থায় কাজের সুযোগ থাকে ফুড টেকনলজি পড়ে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.