জোট-শরিকের বিরুদ্ধে সরব কংগ্রেস
বোমাবাজি, মারধরে অভিযুক্ত তৃণমূল
তৃণমূলের বিরুদ্ধে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল । রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে আরামবাগের হরিণখোলা অঞ্চলের পূর্ব কৃষ্ণপুর গ্রামে। কয়েক জন কংগ্রেস সমর্থকের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মারধর করা হয়েছে কয়েক জনকে। বোমাবাজিও হয়। জনা তিনেক জখম হয়েছেন। সকলকেই প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। দু’দলের ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরামবাগের এসডিপিও আকাশ মাগারিয়া বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। পুলিশি টহলদারী চলছে। গোলমালে যারা ইন্ধন দিয়েছে, তাদের খোঁজ করা হচ্ছে।”
হরিণখোলা অঞ্চলের পূর্ব কৃষ্ণপুর, মজফ্ফরপুর, অরুণবেড়া প্রভৃতি গ্রামগুলিতে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। আগে সিপিএম এবং সিপিআইয়ের মধ্যে মারামারি বাধত। মূলত ওই এলাকায় দামোদরের চরে বালিখাদের ব্যবসার দখলকে কেন্দ্র করেই গোলমাল। ইদানীং একই বিষয়কে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে ‘রেষারেষি’ দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
গত নভেম্বর মাসে পূর্ব কৃষ্ণপুরের বাসিন্দা তথা ‘প্রভাবশালী’ সিপিআই নেতা জয়নাল খাঁ হাজার খানেক অনুগামীকে নিয়ে যোগ দেন কংগ্রেসে। বালিখাদের ব্যবসায় তাঁর ‘প্রতিপত্তি’ এই অঞ্চলে অবিসংবাদী। এ দিকে, সিপিএম এখন এই এলাকায় অনেকটাই কোণঠাসা। জয়নাল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের আকচা-আকচি বেড়েছে বলেই অভিযোগ।
এ দিন ভোর ৬টা থেকে বোমাবাজি শুরু হয়। অভিযোগ, একশো দিনের কাজের একটি প্রকল্পে তাদের দলের কিছু লোককে ঢোকাতে হবে বলে দাবি করেছিল তৃণমূল। তা থেকেই গোলমাল ছড়ায়। জয়নাল খাঁর বাড়ি লক্ষ্য করেও বোমা ছোড়া হয়। মধুরপুর, বাখরচক, মজফ্ফরপুরেও শুরু হয় বোমাবাজি। এই সমস্ত এলাকা থেকে তৃণমূলের সশস্ত্র লোকজন পূর্ব কৃষ্ণপুরে ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ। কংগ্রেসের এক সমর্থকের খড়ের গাদায় আগুন দেয় হামলাকারীরা। কংগ্রেস সমর্থকদের আরও কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। মারধর করা হয় কয়েক জনকে। কংগ্রেসের লোকজনের সঙ্গে হামলাকারীদের হাতাহাতিও বাধে। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, এ দিনের ঘটনায় তাদের দলের কেউ যুক্ত নয়। আরামবাগের বিডিও মৃণালকান্তি গুঁই বলেন, “কিছু লোক মাস্টাররোলে ভুয়ো নাম ঢোকানোর চেষ্টা করছিল বলে জানতে পেরেছি। তাতে বাধা দেয় অন্য পক্ষ। এ থেকেই গোলমাল বেধে থাকতে পারে।”
জয়নাল বলেন, “এলাকায় আমার প্রভাব খর্ব করতেই তৃণমূলের ছেলেরা হামলা চালিয়েছে।” রবিবারের ঘটনার পরে তিনি এলাকায় ঢুকতে ‘সাহস’ পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। আরামবাগ মহকুমার কংগ্রেস নেতা প্রভাত ভট্টাচার্যের কথায়, “কংগ্রেসের শক্তি বাড়ছে দেখে পঞ্চায়েত ভোটের আগে ওরা সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে। বিষয়টি আমাদের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি।” প্রভাতবাবুর আরও অভিযোগ, তাঁদের যে সমর্থকদের ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে, তাঁদের তিন জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের অবশ্য দাবি, নির্দিষ্ট অভিযোগেই ধরা হয়েছে সকলকে।
যে অঞ্চলে গোলমাল, সেটি পুড়শুড়া বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে। তৃণমূলের বিধায়ক পারভেজ রহমান বলেন, “আমাদের দলের কেউ যুক্ত নয়। তবে গত কয়েক দিন ধরেই একশো দিনের কাজের একটি প্রকল্পে অযাচিত ভাবে হস্তক্ষেপ করছিলেন জয়নাল। নতুন নিযুক্ত সুপারভাইজারদের তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কাজে বিঘ্ন ঘটছিল। শ্রমিকেরাই ক্ষিপ্ত হয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.