হাজার জাতের দেশি বীজের
অবাধ বিনিময় চাষিদের
প্রায় বিস্মৃত দেশি জাতের শস্য-বীজ ফিরিয়ে আনা, তার চাষ এবং সংরক্ষণে চাষিদের উদ্যোগ বাড়ছে। একই সঙ্গে আগ্রহ বাড়ছে জৈব চাষে। এই উদ্যোগেরই এক ঝলক দেখা গেল কলকাতায় তিন দিনের ‘বীজ উৎসব’-এ। রবিবার ছিল উৎসবের শেষ দিন। সারা দেশ থেকে ধান, সব্জি এবং অন্যান্য শস্যের এক হাজারেরও বেশি জাতের বীজ নিয়ে হাজির ছিলেন চাষিরা। এ রাজ্য ছাড়াও কর্নাটক, পুদুচেরি, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং উত্তরপ্রদেশ থেকেও নানা জাতের বীজ এসেছিল।
এই উৎসবে বীজ দেখা, তাদের বিষয়ে জানা ছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে বীজের অবাধ বিনিময়ের সুযোগ ছিল চাষিদের। পুদুচেরি থেকে দীপিকা এনেছেন ৭ জাতের ঢ্যাড়সের বীজ। সবচেয়ে বড় জাতের ঢ্যাড়সটি দু’ফটের বেশি লম্বা আর ছোটটি দু’ইঞ্চি। কর্নাটকে ৩৬০ জাতের ধানের বীজ সংরক্ষণ এবং চাষিদের মধ্যে তা বণ্টন করে ‘সহজ সম্বুদ্ধ’ নামে একটি সংগঠন। সংগঠনের পক্ষে সীমা জানালেন, তাঁদের রাজ্যে চাষিরা যাতে উৎপাদিত জৈব ফসল পৃথক ভাবে বিক্রি করতে পারেন, তার জন্য রাজ্য জুড়ে তৈরি হয়েছে ৩০টি বিক্রয় কেন্দ্র। অথচ পশ্চিমবঙ্গে যাঁরা জৈব চাষ করছেন, তাঁদের সেই রাসায়নিকমুক্ত ফসল বিক্রির কোনও পৃথক ব্যবস্থা নেই। ফলে চাষিরা অনেকেই হতাশ হয়ে পড়ছেন। বারাণসীর জয়প্রকাশ সিংহের মতো এক জন চাষি নিজেই উদ্ভাবন করেছেন ১২০ জাতের গম এবং ১৮০ জাতের ধান। ১০ জাতের ধানের পেটেন্ট তিনি ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছেন। তাঁর এই অবদানের জন্য দু’বার রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
উৎসবের সংগঠকরা চান, দেশি জাতের শস্যের বীজ আরও সহজলভ্য হোক। ওই বীজ জৈব পদ্ধতিতে চাষ করার ব্যাপারে আরও বেশি আগ্রহী হোক চাষিরা। সাফল্যও আসছে কিছু কিছু। জলপাইগুড়ি, পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, হাওড়া, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম ছাড়াও সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে যে সব চাষি ব্যক্তিগত ভাবে বা সাংগঠনিক ভাবে উৎসবে অংশ নিয়েছেন, তাঁদের প্রায় সবাই রাসায়নির সার এবং কীটনাশকের ব্যবহার বন্ধ করেছেন।
উৎসবে রাজ্য সরকারের অংশগ্রহণ ছিল না। কেবল ফুলিয়া কৃষি খামারের বিজ্ঞানী অনুপম পাল উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন ব্যক্তিগত ভাবে। অনুপমবাবু তাঁর কেন্দ্রে সংরক্ষিত ৩০ জাতের দেশি ধানের বীজ বিনিময় করেছেন বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে।
যে-হেতু চাষিদের সঙ্গে তাঁর ভাল যোগাযোগ রয়েছে, তাই তিনি বিভিন্ন জেলার চাষিদের কাছ থেকে সব্জির বীজ সংগ্রহ করলেন বিলি করার জন্য। অনুপমবাবু মনে করেন, বীজের এই অবাধ বিনিময় এবং তা বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগই ‘বীজ উৎসব’-এর সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.