নলহাটিতে অধীরের তোপ মুকুল-তৃণমূলের বিরুদ্ধে
রেল-প্রকল্পের শিলান্যাস ঘিরে কংগ্রেস-তৃণমূলের চাপানউতোর আরও তীব্র হল বীরভূমের নলহাটিতে। বিবাদের কেন্দ্রে থাকা প্রকল্পটির রবিবার শিলান্যাস হল রেলমন্ত্রী মুকুল রায়ের হাতে। এই অনুষ্ঠানে ডাক পাননি স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক ‘প্রণব-পুত্র’ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। তার জেরে রেলমন্ত্রী ও তৃণমূলের সমালোচনা করলেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী।
নলহাটির দীর্ঘদিনের যানজট সমস্যা মেটাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি মেনে স্থানীয় করিমপুর বাইপাসে একটি রোড ওভারব্রিজ (আরওবি) এবং সংলগ্ন রাস্তা তৈরির কাজ অনুমোদন করেছে রেল মন্ত্রক। পুর-নির্বাচনের মুখে এই প্রকল্পের কৃতিত্বের দাবিকে ঘিরে কংগ্রেস-তৃণমূল বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। এদিনের শিলান্যাস কর্মসূচির আমন্ত্রণপত্রে নাম ছিল না অভিজিৎবাবুর।
নলহাটিতে পুরভোটের প্রচারে বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীর সঙ্গে নলহাটির বিধায়ক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়।
নলহাটিতে আসন্ন পুরভোট উপলক্ষে এ দিনই দলীয় এক কর্মিসভায় এসেছিলেন অধীরবাবু। তিনি বলেন, “রেল যা করেছে, তা শিষ্টাচার বিরোধী। এটা কোনও কৃতিত্ব দেখানোর প্রতিযোগিতা নয়। বরং উদারতা দেখাতে পারলে রেলের পক্ষে সম্মানজনক হত ব্যাপারটা। আমন্ত্রণপত্রে অভিজিৎবাবুর নাম না রেখে নলহাটিবাসীকেই অপমান করেছেন রেলমন্ত্রী!” অধীরবাবুর কটাক্ষ, “একটা রোড ওভারব্রিজের শিলান্যাসেও রেলমন্ত্রী নিজে আসছেন। এটা ভাবতেও লজ্জা লাগে!” অভিজিৎবাবু কোনও মন্তব্য করেননি।
আমন্ত্রণপত্রে স্থানীয় বিধায়কের নাম না-থাকা নিয়ে প্রশ্নের জবাব বিস্তারিতভাবে দেননি রেলমন্ত্রী। শিলান্যাস অনুষ্ঠানের পরে তাঁকে প্রশ্ন করলে রেলমন্ত্রী বলেন, “এ ব্যাপারে আগেই আমি যা বলার বলে দিয়েছি।” সভায় তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই প্রকল্প অনুমোদন করেছিলেন। মমতা-ঘোষিত প্রকল্পের শিলান্যাস করতে এসে খুবই ভাল লাগছে।” রেলমন্ত্রীর আরও দাবি, “বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় বারবার নলহাটির যানজট সমস্যার কথা মমতা এবং আমাকে জানিয়েছিলেন।
রেলের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী মুকুল রায়। রয়েছেন শতাব্দী রায়ও।
২০১০-১১ সালের রেল বাজেটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্প অনুমোদন করেন। তবে স্থানীয় মানুষের দাবি ছিল, শহরের মধ্যে আরওবি হোক। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় প্রকল্পটি অন্যত্র সরানো হয়েছে।” রেলমন্ত্রীর দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী ও রেল মন্ত্রক একযোগে রাজ্যে উন্নয়ন করছে, এটা ভাবতেও ভাল লাগে।” অনুষ্ঠানে শতাব্দী ছাড়াও ছিলেন পরিবেশ ও পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার ও জেলার দুই তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ও নুরে আলম চৌধুরী। আসন্ন পুরভোটের মুখে বিষয়টি নিয়ে শাসক জোট শিবিরে বিতর্ক প্রকাশ্যে এসেছে। সেই সূত্রেই দলীয় সভায় রেলকে আরওবি ছাড়াও নানা বিষয়ে তৃণমূলের সমালোচনা করেছেন অধীরবাবু। তাঁর অভিযোগ, “রেলে কর্মী নিয়োগ নিয়ে দালালরাজ শুরু হয়েছে। লোক নেওয়ার নামে নেতারা টাকা তুলছেন। আমি তো দিদি-ভজনা করতে পারি না। তাই বহরমপুরে রেলের ওভারব্রিজ হয় না।” নলহাটি পুরসভায় একদা কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু কংগ্রেস ৯ জন কমিশনার দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেয়। পুরসভায় ক্ষমতা হারায় কংগ্রেস। তারপর থেকেই কংগ্রেস-তৃণমূলের সম্পর্ক ‘তিক্ত।’ অধীরবাবু কংগ্রেস সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, “কংগ্রেসের টিকিটে জিতেও পরে দল ছেড়েছে যাঁরা, সেই বিশ্বাসঘাতকদের শাস্তি দিন।”

ছবি: নিজস্ব চিত্র, সব্যসাচী ইসলাম



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.