|
|
|
|
হতাশ তিন তারকা |
জমি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
বাম জমানায় রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া শিলিগুড়ির দুই ভাবী অলিম্পিয়ানের জমি আপাতত কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সঙ্গে তাঁদের কোচের জমিও। রাজ্যের নতুন পুরমন্ত্রী ববি হাকিম অবশ্য এই খবর শুনে বিস্মিত। তিনি বলেন, “আমরা নীতিগত ভাবে সফল ক্রীড়াবিদদের জমি কেড়ে নেওয়ার বিপক্ষে। এ সব আমরা জানি না। কোনও কাগজপত্রও নেই। সৌম্যজিৎ-অঙ্কিতা যদি নতুন সরকারের কাছে আবেদন করে, তা হলে ক্যাবিনেট বৈঠকে ওদের জমি দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হবে।” শিলিগুড়ির নতুন নায়ক অঙ্কিতা দাস এবং সৌম্যজিৎ ঘোষকে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের আমলে কলকাতার কসবা এলাকায় জমি দেওয়া হয়েছিল। জাতীয় জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন হওয়ায়। ২০১০ সালে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও কে এম ডি এ-র তরফে গত বছর ১২ এপ্রিল চিঠি পাঠিয়ে ওই তিন খেলোয়াড়কে জানানো হয়। জমির জন্য প্রায় ১২ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। তা তাঁদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয় জানিয়ে কাঠা প্রতি ১ লক্ষ টাকা দাম দিতে চান তিন জন। আবেদনও করেন কে এমডিএ-তে। অভিযোগ, গত ২৮ ডিসেম্বর বর্তমান সরকারের তরফে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়, সময় মতো টাকা না দেওয়ায় ওই জমি দেওয়ার বিষয়টি খারিজ হচ্ছে। জমি দেওয়ার বিষয়টি খারিজ হওয়া দুর্ভাগ্যজনক বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোকবাবু। তিনি বলেন, “খেলোয়াড়দের কৃতিত্বের জন্য সরকারের তরফে তাঁদের ১ লক্ষ টাকা কাঠা হিসাবে জমি দেওয়া হয়। শিলিগুড়ির এই তিন খেলোয়াড়কেও সেই ভাবে জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভোট আসায় সেই প্রক্রিয়া আমরা সম্পূর্ণ করতে পারিনি। সময় মতো টাকা না দেওয়ায় বর্তমান সরকার তাঁদের বাড়তি সময় দিতে পারতেন। বা কয়েক দফায় টাকা দেওয়ার শর্ত দিতে পারতেন। তা না করে জমি দেওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি খারিজ করে দেওয়া ঠিক হয়নি। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার অনুরোধ করব।” অশোকবাবু জানিয়েছেন, নিয়ম মতো প্রায় আড়াই কাঠা করে জমির জন্য প্রথমে ১২ লক্ষ টাকার মতো চাওয়া হত। এর পর খেলোয়াড়রা আবেদন করতেন তাঁদের ওই জমি ১ লক্ষ টাকা কাঠা হিসাবে দেওয়া হোক। সেই মতো মুখ্যমন্ত্রী বিশেষ ক্ষমতা বলে কৃতী খেলোয়াড়দের জন্য তা অনুমোদন করে দিতেন। তাঁর দাবি, শিলিগুড়ির ওই তিন কৃতী ১ লক্ষ টাকা করে জমি পেতে আবেদন করলেও ভোট এসে যাওয়ায় তাঁদের পক্ষে তখনই বিষয়টি পাকা করা সম্ভব হয়নি। লন্ডন অলিম্পিকে সুযোগ পেয়ে শহরে ফেরার পর পুরসভার তরফে সৌম্য-অঙ্কিতাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে বামেদের পক্ষে বিরোধী দল নেতা জমি খারিজ হওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। অঙ্কিতা, সৌম্যজিৎ এবং মান্তু জানিয়েছেন, প্রথমে ২.৬ কাঠার জন্য ১১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। জমি নিতে চাইলে তখনই দিতে বলা হয় মোট দামের ১০ শতাংশ। কম বেশি আড়াই কাঠা করে তাঁদের প্রত্যেককে জমি দেওয়ার কথা ঠিক হয়েছিল। মান্তু বলেন, “আমার পক্ষে ওই টাকা দেওয়া সম্ভব নয় জানিয়ে কাঠা প্রতি ১ লক্ষ করে দাম দেওয়ার কথা জানিয়েছিলাম। আমার সঙ্গে অঙ্কিতার বাবা এবং সৌম্যজিতের বাবা গত ডিসেম্বরে একই আবেদন করেছিলেন। জমি দেওয়ার বিষয়টি খারিজ করার কথা চিঠি পাঠিয়ে সম্প্রতি জানানো হয়েছে।” অঙ্কিতার বাবা, সেচ দফতরের সাধারণ কর্মী অসীম দাস বলেন, “মেয়ে তখন চাকরি করে না। আমার অর্থে কোন রকমে খেলা চালাই। সেই জন্য জমির জন্য ১ লক্ষ টাকা দিতে চেয়ে আবেদন করেছিলাম। তা না হলে কাঠা প্রতি ১ লক্ষ টাকা করেও দেওয়া যেত। কিন্তু খারিজ করে দেওয়া হবে বুঝতে পারিনি।” সৌম্যজিতের বাবা হরিশঙ্কর ঘোষ মনে করছেন, তাঁদের সময় দিলে ভাল হত। অশোকবাবুর আক্ষেপ, “কলকাতার অনেক খেলোয়াড়ই তো দেরিতে টাকা দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গের বলে এই খেলোয়াড়দের বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।” বর্তমান পুরমন্ত্রীর আশ্বাসের পরে ছবি অবশ্য পাল্টে যাচ্ছে। |
|
|
|
|
|