সৌহার্দ্যের মধ্য দিয়েই সাগরের উন্নয়নের বার্তা
শাসক-বিরোধী ‘সৌহার্দ্যের’ নজির এ বার সাগরে।
সিপিএমের সঙ্গে ‘সামাজিক সংস্রব’ না-রাখা নিয়ে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাঁর বক্তব্যে অনড় থাকলেও অনেক জায়গাতেই দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। শনিবার দুর্গাপুরে একটি অনুষ্ঠানে শহরের মেয়র সিপিএমের রথীন রায়ের পাশে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে। অনুষ্ঠানে দু’জনে গল্পও করেছেন।
এই ‘সৌহার্দ্যের’ই নজির হিসেবে সোমবার আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন সাগরের তৃণমূল বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা। রুদ্রনগরে বিদ্যুতের ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাগরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক প্রভঞ্জন মণ্ডলকে মঞ্চে ডাকাই নয়, বঙ্কিমবাবু তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরেছেন। ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বসতে দিয়েছেন প্রভঞ্জনবাবুকে। দু’জনে একযোগে সাগরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথাও বলেছেন। উপস্থিত সাধারণ মানুষ ‘সৌহার্দ্যের’ এমন ‘ব্যতিক্রমী’ দৃষ্টান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, শাসক-বিরোধী একযোগে কাজ করলে উন্নয়ন সহজ হয়।
সিপিএম সম্পর্কে খাদ্যমন্ত্রীর মন্তব্য জানেন বঙ্কিমবাবু। তবে, সেটিকে তিনি আমল দিতে রাজি নন। বঙ্কিমবাবু বলেন, “জ্যোতিপ্রিয়বাবু যা বলেছেন, তা দলীয় নীতি হলেও হতে পারে। কিন্তু সাগরে আমি প্রভঞ্জনবাবুর সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়েই কাজ করব। আমি ডাকলে উনি এসে আমাকে সাহায্য করেন। আমিও প্রয়োজনে তাঁর কাছে যাই। এ জন্যই সরকারি অনুষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও আমি ওঁকে আমন্ত্রণ করেছি।” আর প্রভঞ্জনবাবু বলেন, “উন্নয়ন যাতে কোনও ভাবে বাধাপ্রাপ্ত না হয়, সে দিকে আমি সব সময়েই লক্ষ্য রাখি। সেই কারণেই আমি বঙ্কিমবাবুর সঙ্গে আছি।”
এক মঞ্চে বঙ্কিম হাজরা ও প্রভঞ্জন মণ্ডল (ডান দিকে)। ছবি: দিলীপ নস্কর।
সাগরদ্বীপে এত দিন সৌরবিদ্যুৎই ব্যবহার হচ্ছিল। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা কিছু বাড়িতে জেনারেটরেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করছিল। অন্যান্য বার সাগরমেলা উপলক্ষেও জেনারেটরের মাধ্যমে মেলাপ্রাঙ্গণে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হত। এ বারই গ্রিডের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। সোমবার যে সাব-স্টেশনের উদ্বোধন হয়, তার মাধ্যমে আপাতত ২২০০টি বাড়িতে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া যাবে। ৬৫০টি বাড়িতে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এক মাসে দেড় হাজার বাড়িতে সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা জানিয়েছে।
কাকদ্বীপ থেকে মুড়িগঙ্গা নদী হয়ে সাগরে ৫টি টাওয়ারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ আনা হয়েছে। এক বিদ্যুৎ-কর্তা জানান, ২ বছরের মধ্যে ৪৩ হাজার বাড়িতে সংযোগ দেওয়া হবে। ৬০০টি ট্রান্সফর্মার বসিয়ে তার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। এই প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। ৯০% খরচ দিচ্ছে বিশ্বব্যাঙ্ক। ১০% দিচ্ছে রাজ্য সরকার। সাব-স্টেশনের উদ্বোধন করে বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, “শুধু বিদ্যুৎ প্রকল্প নয়, পানীয় জল থেকে স্বাস্থ্য সাগরের সার্বিক উন্নয়নের প্রকল্প হাতে নিচ্ছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এখানে ছোট ও মাঝারি শিল্প এবং আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।” বিদ্যুতের অপচয় রুখতে সাগরবাসীকে সতর্কও করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “আলোকিত নয়, আলোমাখা সাগরদ্বীপ চাই। রাস্তায় সৌরবিদ্যুৎ এবং বাড়িতে প্রচলিত বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হোক।” অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার দফতরের প্রতিমন্ত্রী চৌধুরীমোহন জাটুয়া, সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাধিপতি শামিমা শেখ প্রমুখ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.