‘ডার্টি পিকচার’-এর টেলিভিশন সম্প্রচার বিতর্কে এ বার মুখ খুলল কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। সোমবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের পক্ষে জানানো হয়, সেন্সর বোর্ডের পরামর্শ মেনে শুক্রবারই সংশ্লিষ্ট চ্যানেলকে রাত ১১টার আগে ওই সিনেমা সম্প্রচার করতে বারণ করা হয়। তার পরেও সম্প্রচারের বিজ্ঞাপন বন্ধ না হওয়ায় শনিবার নোটিস পাঠানো হয়।
মন্ত্রকের মুখপাত্র জানান, আইন অনুসারে ‘ইউ/এ’ সার্টিফিকেট থাকা কোনও ছবি টেলিভিশনে এমন সময়েই সম্প্রচার করতে হবে যেখানে অপ্রাপ্তবয়স্কদের ওই ছবি দেখানোর ক্ষেত্রে অভিভাবকদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকতে পারে। সেই দিক থেকে দুপুর ১২টা বা রাত ৮টার স্লটে কোনও চ্যানেলকেই ‘ডার্টি পিকচার’ দেখানোর অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। মুখপাত্রের কথায়, “ছবিটির গল্প যথেষ্ট সাহসী। সরকার কোনও ভাবেই তার সম্প্রচারে বাধা দিচ্ছে না। আমরা শুধু চাইছি, নিয়ম মেনে সম্প্রচার হোক।” |
বিতর্কের সূত্রপাত রবিবার। ওই দিন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে ‘ডার্টি পিকচার’ দেখানোর কথা ছিল দুপুর ১২টা এবং রাত ৮টার স্লটে। কিন্তু শনিবার কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে চ্যানেলকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, ছবিটি দেখাতে হলে রাত ১১টার পরে দেখাতে হবে। কিন্তু চ্যানেল কর্তৃপক্ষ রাত ১১টার স্লটেও ‘ডার্টি পিকচার’ দেখাননি। রবিবার সকাল থেকেই ওই চ্যানেলে বারবার বিজ্ঞপ্তি দেখানো হয়: ‘‘দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, অনিবার্য কারণে আজ ‘ডার্টি পিকচার’ দেখানো যাচ্ছে না। দর্শকের অসুবিধার জন্য দুঃখিত।” এই বিজ্ঞপ্তি দেখার পর থেকেই ছবি সম্প্রচারে সরকারি হস্তক্ষেপ নিয়ে বিতর্ক ছড়ায়। সেই প্রসঙ্গেই এ দিন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, “কেন্দ্রীয় ফিল্ম সার্টিফিকেশন বোর্ড (সিবিএফসি) একটি স্বাধীন সংস্থা। তাদের মতে, ‘ইউ/এ’ সার্টিফিকেট পাওয়া ছবি টেলিভিশনে সম্প্রচারের ক্ষেত্রেও অভিভাবকদের নিয়ন্ত্রণের সুযোগ থাকা বাধ্যতামূলক। আমরা শুধু ওই পরামর্শ মেনে চ্যানেলকে নোটিস পাঠিয়েছি।” মন্ত্রক সূত্রে খবর, ১৯ এপ্রিল ইলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ তাদের একটি চিঠি পাঠায়। তাতে বলা ছিল, টেলিভিশন সম্প্রচারের সমস্ত নিয়ম মেনেই যে ‘ডার্টি পিকচার’ দেখানো হচ্ছে, সেই বিষয়টি মন্ত্রককে নিশ্চিত করতে হবে। এর পরেই মন্ত্রকের তরফে সেন্সর বোর্ডের পরামর্শ চাওয়া হয়।
২০ এপ্রিল সেন্সর বোর্ডের প্রধান পঙ্কজা ঠাকুর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রককে জানান, ১৯৯৫-এর ‘কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক’ আইনের ৬(৫) ধারা অনুযায়ী ‘ইউ/এ’ সার্টিফিকেট পাওয়া ‘ডার্টি পিকচার’ দুপুর বা সন্ধ্যায় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা যায় না। কারণ সবথেকে বেশি অপ্রাপ্তবয়স্ক ওই সময় টেলিভিশনের সামনে থাকে। চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘রাত ১১টার পরেই ছবি দেখানো সম্ভব যাতে বেশির ভাগ অভিভাবক বাচ্চাদের এবং ১৪-১৭ বছরের ছেলেমেয়েদের ছবি দেখানোর ক্ষেত্রে ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’ মন্ত্রকের দাবি, ২০ তারিখই এই ব্যাখ্যাটি সংশ্লিষ্ট চ্যানেলকে পাঠিয়ে বলা হয়, রাত ১১টার পরে ‘ডার্টি পিকচার’ দেখাতে। কিন্তু তার পরেও চ্যানেলটি দুপুর ১২টা ও রাত ৮টার স্লটে ছবিটি সম্প্রচারের বিজ্ঞাপন বন্ধ করেনি। |