উপেক্ষিত মনোজই হাসি ফোটালেন শাহরুখের
ত্তরণের সিঁড়ি কষ্টেসৃষ্টে হলেও উর্ধ্বমুখী। আর অধঃপতনের গল্পের প্লটে কোনও মোচড় নেই।
কটক থেকে নাইটদের দুটো পয়েন্ট নিয়ে ফেরার কথা ছিল। ফিরছে। টানা চার ম্যাচে হারা ডেকানের আবার হারার কথা ছিল। হেরেওছে।
বরাবাটিতে রবিবারে সন্ধেয় হারাকিরি না করলে নাইটদের হারার কথা ছিল না। হাসতে হাসতে ম্যাচ জেতার কথা।
খোশমেজাজ শাহরুখের।
কিন্তু নাইটরা বরাবরই সহজ অঙ্ক কঠিন করে ফেলতে ভালবাসে। সেই গল্পেও কোনও বদল নেই। ম্যাচের মাঝপথে রান তাড়া করতে গিয়ে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, ক্রিজে জমে গিয়েও উইকেট উপহার দিয়ে এলেন অধিনায়ক গম্ভীর।২৮ বলে ৩০টা বড় কথা নয়, ডেকান ম্যাচ বলে পার পেয়ে গেলেন। ফর্মে থাকা ক্যাপ্টেন এ ভাবে আনন্দ রাজনের বলে উইকেট দিয়ে আসবেন, কে জানত? ম্যাকালাম যথারীতি ব্যর্থ, তাঁর থাকা না থাকার মধ্যে কোনও তফাত এ বারের আইপিএলে পাওয়া যায়নি। কিন্তু গম্ভীর-ম্যাকালাম চলে গেলেও তো নাইটদের ব্যাটিং লেজ বড্ড লম্বা। ভারী ভারী সব নাম। ইউসুফ পাঠান। টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ এ বার এখন পর্যন্ত যা অবদান রেখেছেন, কহতব্য নয়।
বিভিন্ন নেটওয়ার্কিং সাইট খুললেই কেকেআর ভক্তদের ক্ষোভ আর হতাশা চোখে পড়ছে। কেকেআর-এর সাতটা ম্যাচে ছ’টা ইনিংসে ব্যাট পেয়ে তাঁর রান ০, ১৫, ১, ৭, ০ এবং ৬। এর পরেও কেন চোট সেরে ওঠা লক্ষ্মীকে ফেরানো হবে না? কেন প্রথম এগারোর বাইরে থাকতে হবে প্রতিশ্রুতিমান চিরাগ জানিকে?
মোহালিতে জয়ের পরে ‘আফটার ম্যাচ পার্টি’-তে লাখ লাখ টাকা উড়িয়েছেন নাইট মালিক। রাত পৌনে একটায় এই ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে কটক থেকে ভুবনেশ্বর গিয়ে পার্টি করার সুযোগ কম। সুযোগ থাকলেও সেই রাস্তায় না হাঁটলেই ভাল করবেন শাহরুখ। কারণ তাঁর নাইটদের পারফরম্যান্স নিয়ে এখনই উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু হয়নি। ৫ মে-র পুণে ওয়ারিয়র্স বনাম কেকেআর ম্যাচ যত এগিয়ে আসছে, তত তুল্যমূল্য বিচার হচ্ছে নাইট ও ওয়ারিয়র্সের।
কটকে মারমুখী মনোজ। ছবি: পিটিআই
সেই যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ‘দাদাগিরি’ অনেকটাই এগিয়ে। তা শাহরুখ যতই সব কাজ ফেলে কটকে ছুটে আসুন না কেন। রাত দশটায় ঢুকে ভিআইপি বক্সে শাদা টি-শার্ট, হালকা বেগুনি ওয়েস্টকোট পরে বসেছিলেন শাহরুখ। ইউসুফ পাঠান ছক্কা মারতেই দু’হাত মাথার উপর তুলে হাততালি। পরের বলেই বোল্ড হওয়ার পরে বাঁ হাত দিয়ে শুধু একবার মুখ মুছলেন। টিভি ক্যামেরা তখন ধরছে জাক কালিসের দীর্ঘদিনের বান্ধবী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্না মডেল সামোনে জারদিমকে। যিনি হতাশায় মাথা নাড়ছেন। তাঁর নামী-দামি বয়ফ্রেন্ডও কিন্তু ম্যাচ শেষ করে ফেরেননি। কালিস আউট হওয়ার পরে ফের ক্যামেরায় সামোনে। এ বার ভুরু কুঁচকোচ্ছেন!
ফিল্ডিংয়েও এ ভাবে ‘নেতৃত্ব’ দিলেন নাইট নেতা। ছবি: এএফপি
কালিস যখন ফিরলেন তখনও ২২ বলে ২২ চাই নাইটদের। বৈতরণী পার করে দিলেন ধোনি কর্তৃক উপেক্ষিত মনোজ (৩০ নট আউট) ও শিলিগুড়ির রাজা ওরফে দেবব্রত। দেবব্রতের অবশ্য ক্যাচও পড়ল ১৮ নম্বর ওভারে। তাতে কী? ম্যাচ তো বের করলেন কলকাতারই দু’জন। বাংলা টিমে থাকা দু’জন। সেখানে কোথায় বিদেশি? মনোজ তো বলেও গেলেন, “আমি জানতাম, আমি পারব।”
ডেকান ব্যাটিং নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। সঙ্গকারা রান পাচ্ছেন না, ব্যাটিং ফেল করছে। স্টেইন একা তিন-চারটে উইকেট তুললে তবে টিমটা লড়ে, নয়তো নয়। আর ফিল্ডিং? দিল্লি ম্যাচের পরে ডেকান কোচ ডারেন লেম্যান বলেছিলেন, “আমার টিম অনূর্ধ্ব ১৪ দের মতো ফিল্ডিং করেছে।” আজও তাই। নাইট বোলিং বরং ফের সুপারহিট। বালাজি, নারিন, লি—সবাই যে যার কাজ করেছেন। লি ম্যাচের সেরা। ডাগআউটে বসে থাকা ওয়াসিম আক্রম হাসবেন না তো কে হাসবে?
ম্যাচ শেষে নাইট মালিকের মুখেও হাসি। ডাগআউট থেকে লাফ দিয়ে নামলেন মাঠে। যোদ্ধাদের জড়িয়ে ধরা। আরও দুটো পয়েন্ট। সামনের মঙ্গলবার আবার ডেকান। আবার দু’পয়েন্টের হাতছানি।
অতএব বরাবাটিতে মধ্যরাত মানে—‘করব, লড়ব, জিতব রে’!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.